শিক্ষকের মৃত্যু—ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা মাঠে নামল প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ চেয়ে

হাটহাজারী উপজেলার এনায়েতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল আবছারের পদত্যাগ চেয়ে মানববন্ধন করেছে স্কুল শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (২৮ মে) সকাল ১১টায় স্কুলের সামনে এই মানববন্ধন হয়।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ—প্রধান শিক্ষক দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাজে আচরণ করেন এবং পাঠদানে অমনোযোগী। এছাড়া প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সিনিয়র শিক্ষক নজির আহমেদের পেনশনের টাকা আটকে রাখার অভিযোগও করা হয় মানববন্ধনে।

আরও পড়ুন: ‘অশোভন’ আচরণ করায় শিক্ষার্থীকে বেধড়ক পিটিয়েছেন শিক্ষক

চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি শিক্ষক নজির আহমেদ মারা যান। শিক্ষকের পেনশনের টাকা আটকে রাখা ও মৃত্যু নিয়ে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয়রা প্রধান শিক্ষকের ওপর চরম ক্ষুদ্ধ।

জানা গেছে, এনায়েতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক নজির আহমদ ২০১৯ সালের ৭ আগস্ট চাকরির বয়স শেষ করে অবসরে যান। এরপর শিক্ষক কল্যাণ ফান্ডসহ পেনশনের টাকা গ্রহণে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চেয়ে একই বছরের ১৮ আগস্ট প্রধান শিক্ষক বরাবর আবেদন করেন। কিন্তু নয় মাস পার হলেও পেনশনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সরবরাহ করেননি প্রধান শিক্ষক।

স্কুলের সংশ্লিষ্টরা জানান, বিদ্যালয়ের অডিট কমিটির সদস্য ছিলেন শিক্ষক নজির আহমদ। কমিটিতে ছিলেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি খোরশেদুল আলম। বিদ্যালয়টির বিভিন্ন আয়-ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন থাকায় নজির আহমদ অডিট অনুমোদন করেননি। এছাড়া বিদ্যালয়ের বিভিন্ন ক্রয় ও ব্যয়ে সংক্রান্ত রশিদে অসঙ্গতি ও অনিয়ম থাকায় স্বাক্ষর করেননি তিনি। এসব কারণে প্রধান শিক্ষক নুরুল আবছার ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি খোরশেদুল আলমের সঙ্গে নজির আহমদের দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়।

আরও পড়ুন: পছন্দের প্রার্থীকে আনতে কর্ণফুলীতে মাদ্রাসা শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অনিয়ম!

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খোরশেদুল আলমের বাধার কারণে পেনশনের টাকা পাননি শিক্ষক নজির আহমেদ। নয় মাস ধরে পেনশন সংক্রান্ত কাগজপত্র আটকে রাখা হয়। এ ঘটনায় তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমীন বরাবার একটি অভিযোগ করেছিলেন শিক্ষক নজির আহমেদ। পরে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশন ও চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যানকে সুপারিশ করা হয়েছিল।

এদিকে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক ড. বিপ্লব গাঙ্গুলি স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে স্কুলের প্রধান শিক্ষক নুরুল আবছারের কাছে শিক্ষকের পেনশন সংক্রান্ত নথি আটকে রাখার ব্যাখ্যা তলব করা হয় এবং ৭ দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়। এরপর নজির আহমদ পেনশনের টাকার জন্য স্কুল সভাপতি ও শিক্ষাবোর্ড দৌড়াতে দৌড়াতে চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি না ফেরার দেশে চলে যান।

সিএম/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!