স্ত্রী ও ৬ মাসের সন্তনকে শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে বাস চালক আব্দুল বারেক ও তার প্রথম স্ত্রী ফাতেমা বেগম প্রকাশ লাকি বেগমকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২২ জুন) চট্টগ্রাম ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ বেগম সিরাজাম মুনীরা এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আব্দুল বারেক লক্ষীপুরের রামগঞ্জ থানার পূর্ব কাজীরখীল হায়দার আলী ব্যাপারী বাড়ির মো. বদু মিয়ার ছেলে। প্রথম স্ত্রী ফাতেমা বেগম প্রকাশ লাকি বেগমসহ তিনি নগরের পাহাড়তলী থানার সরাইপাড়া বহেলা পুকুর পাড় সিরাজ মিয়ার ভাড়া ঘরে বসবাস করতেন।
এ বিষয়ে আদালতের অতিরিক্ত পিপি দীর্ঘতম বড়ুয়া দীঘু আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় আব্দুল বারেক ও ফাতেমা বেগম প্রকাশ লাকী বেগমকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আসামিদের উপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করা হয়েছে। পরে সাজা পরোয়ানা মূলে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
আরও পড়ুন: আত্মসমর্পণ করেও পার পেল না খুনের মামলার আসামি
পিপি আরও বলেন, এ মামলায় ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য উপস্থাপন করে রাষ্ট্রপক্ষ। মামলা পরিচালনায় সহযোগিতা করেন অতিরিক্ত পিপি বিহি চক্রবর্তী।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের ১৬ মার্চ সকালে বারেকের দ্বিতীয় স্ত্রী রহিমা বেগম সুমিকে মাথায় আঘাত ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন প্রথম স্ত্রী ফাতেমা বেগম। এরপর সুমিকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। এসময় সুমির ৬ মাসের শিশু সন্তান হৃদয়কেও শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন ফাতেমা। পরে মোবাইল ফোনে স্বামী বারেককে ফাতেমা জানান, সুমি ঘরের দরজা বন্ধ করে রেখেছে। অনেকক্ষণ চেষ্টার পরেও দরজা খুলছে না। পরে বারেক এসে রুমের পেছনের একটি ছোট অংশ দিয়ে ঘরের ভেতর প্রবেশ করে ঝুলন্ত লাশ নামিয়ে খাটে রাখেন।
এরপর সন্তানসহ সুমি আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচার করেন বারেক। এ ঘটনার পর সুমির বোন জহুরা বেগম রানু বাদী হয়ে নগরের পাহাড়তলী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পর বারিক ও ফাতেমাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর তদন্তে বেরিয়ে আসে মৃত্যুর আসল রহস্য।
মামলা তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার দিন সকালে বোন রানুর সঙ্গে নিজ বাড়ি খাগড়াছড়ি যাওয়ার কথা ছিল সুমির। কিন্তু তার স্বামী বারেক, ফাতেমা ও ননদ মরিয়ম বেগম সুমি যেতে পারবে না বলে জানায়। পরে আসামিরা পরষ্পর যোগসাজশে সুমি ও তার সন্তানকে হত্যার বিষয়টি উঠে আসে। তদন্ত শেষে ২০১২ সালের ৩১ জুলাই আদালতে চার্জশিট জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা। এ মামলায় ২০১৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি চার্জ গঠন করেন আদালত।
আরএস/আরবি