তরুণীকে ফাঁদে ফেলা ২ পাষণ্ডের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বিধবা তরুণীকে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করায় মামলার প্রধান আসামি মো. সাইফুল ইসলাম ফারুক (২৭) ও পলাতক বদিউল আলমকে (৫১) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (৫ এপ্রিল) চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতনব দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক ফেরদৌস আরা এ রায় ঘোষণা করেন।

পলাতক আসামি মো. সাইফুল ইসলাম ফারুক সাতকানিয়ার রুপকানিয়ার ৪ নম্বর ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নজির আহমদের বাড়ির মো. জসিমের ছেলে। তিনি নগরের চান্দগাঁও বহদ্দারহাট চেয়ারম্যানঘাটা ওসমান কলোনিতে থাকতেন। কারাগারে পাঠানো বদিউল আলম পটিয়ার আজিমপুর শেখপাড়া এলাকার মো. ইসমাইলের ছেলে। তিনি নগরের সদরঘাট পশ্চিম মাদারবাড়ি ডিটি রোড হাজী মঞ্জিলে বসবাস করতেন।

এ বিষয়ে ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পিপি এমএ নাসের চৌধুরী বলেন, বিধবা তরুণীকে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করায় দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মামলায় ছয়জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি ফারুক পলাতক থাকলেও বদিউল আলম উপস্থিত ছিলেন। পরে উপস্থিত আসামিকে কারাগারে পাঠিয়ে পলাতক আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

আরও পড়ুন: শ্যালিকার ছেলে অপহরণ করে দুলাভাইয়ের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

পিপি আরও বলেন, এ ঘটনায় মানবপাচার ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে।

আদালত সূত্রে জানা যায়, স্বামী মারা যাওয়ার পর তিন বছরের কন্যা শিশুকে নিয়ে চকরিয়ার বাবার বাড়িতে থাকতেন ভুক্তভোগী তরুণী। সেখানে ১০ বছর আগে পলাতক আসামি ফারুক ওই তরুণীর বাবার গাড়িতে হেলপারের কাজ করতেন। ২০১৮ সালের ২৪ জুন বাবার বাড়ি থেকে ওই তরুণীকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে নগরের সদরঘাট থানার পশ্চিম মাদারবাড়ি ডিটি রোড হাজী মঞ্জিলের চতুর্থ তলায় নিয়ে আসেন ফারুক। সেখানে আটকে রেখে ফারুক, বদিউলসহ আরও দুই-তিনজন মিলে ওই নারীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন।

পরে হত্যার হুমকি দিয়ে পতিতাবৃত্তির জন্য বাধ্য করেন বদিউল আলম। একই ফ্ল্যাটে আরও কয়েকজন নারী ছিলেন। পরে তাদের কাছ থেকে জানতে পারেন তাদের দিয়েও পতিতাবৃত্তি করানো হয়। ওই নারীদের সহায়তায় তার বাবার মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানালে তিনি সদরঘাট থানা পুলিশের সহায়তায় মেয়েকে উদ্ধার করেন। পরে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী তরুণী বাদী হয়ে সদরঘাট থানায় মামলা করেন।

এরপর ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন সদরঘাট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মু. রুহুল আমিন আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। ২০২০ সালের ৫ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ গঠন করা হয়।

আরএস/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!