সৌদি প্রবাসীর ৫ বছরের ছেলেকে অপহরণ মামলায় একমাত্র আসামি জামাল উদ্দীনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে জারি করা হয়েছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা।
বুধবার (১ মার্চ) চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক ফউজুল আজিমের আদালত এ রায় দেন। তবে রায় ঘোষণার সময় আসামি অনুপস্থিত ছিলেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত জামাল উদ্দীন রাউজান থানার কোতোয়ালী ঘোনা এলাকার মাহামুদুল হকের ছেলে।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর স্পেশাল পিপি জিকো বড়ুয়া বলেন, ১৯৯৮ সালে শিশু অপহরণ মামলায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯৫ এর ১৩ ধারায় একমাত্র আসামি জামাল উদ্দীনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আসামির অনুপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করা হয়েছে। পলাতক আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
আরও পড়ুন: ছাত্রীকে অপহরণের পর ধর্ষণ, ভিডিও ছাড়ল ফেসবুকে
মামলা সূত্রে জানা যায়, সৌদি প্রবাসীর স্ত্রী বিলকিছ আকতার রাউজানের নোয়াপাড়া চৌধুরী ঘাট এলাকায় নিজের পৈত্রিক ভিটায় তার ছেলে শাহজাহান (১২), মেয়ে শাকিলা (৭) এবং ছেলে আজাদকে (৫) নিয়ে বসবাস করতেন। একই ভিটায় বড় বোনের জামাই জামাল উদ্দিন বাড়ি করে ঘর জামাই হিসেবে বসবাস করছিলেন। ১৯৯৪ সালে বিদেশ যাত্রার জন্য বিলকিছের স্বামীর কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা ঋণ নেয় জামাল। দুবছর পর দেশে ফিরে ঋণের সেই টাকা ফেরত না দিয়ে কালক্ষেপণ করেন জামাল।
পরে ১৯৯৮ সালের ৩ নভেম্বর বিকেলে বিলকিছের ছোট ছেলে আজাদ হঠাৎ নিখোঁজ হয়। পরদিন সকালে প্রতিবেশী এক মাস্টারের বাড়িতে জামাল ফোন করে জানায় আজাদকে তিনি নিয়ে গেছেন। ছেলেকে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্য জানতে চাইলে ঘরের বেড়ায় টাঙানো আয়নার পেছনে রাখা চিরকুট পড়তে বলেন। চিরকুটে লেখা ছিল ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণের উদ্দেশ্যে আজাদকে অপহরণ করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ১৯৯৮ সালের ৪ নভেম্বর বিলকিছ আকতারের বড় ভাই মো. ইউসুফ সওদাগর বাদী হয়ে রাউজান থানায় মামলা করেন। সেই মামলা তদন্ত শেষে ১৯৯৯ সালের ১২ মে আসামি জামাল উদ্দীনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ। একই বছরের ২২ জুলাই আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন আদালত। মামলায় ৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।