‘আয়নাবাজি’ আড়ালে কিশোরী ধর্ষণ, যাবজ্জীবন জেলে কাটবে ভণ্ড পীরের

নানার বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছে এগারো বছরের এক কিশোরী। সেই ঘটনায় কিশোরীর মায়ের দায়ের করা মামলায় ভণ্ড পীর মো. হারুনকে (৫৫) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত

বুধবার (৮ জুন) বেলা সাড়ে ১২টায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক ফেরদৌস আরা শুনানি শেষে এ রায় ঘোষণা করেন।

কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. হারুন জোরারগঞ্জ মধ্যম আজম নগর ছুনিমিঝির বাড়ির মৃত মাওলানা আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ট্রাইবুনালের কৌঁসুলি খন্দকার আরিফুল আলম আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, এক কিশোরীকে ধর্ষণের মামলায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ সংশোধিত ২০০৩ এর ৯ (১) ধারায় ভণ্ড পীর আসামি মো. হারুনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ৩ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। অপরদিকে এনামুল হক ও তার স্ত্রী সবুরা বেগমকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ ১১ জন সাক্ষীর মধ্যে ৮ জনের সাক্ষ্য উপস্থাপন করেছেন। আসামি সাক্ষ্যগ্রহণে উপস্থিত থাকলেও রায়ের সময় আদালতে হাজির ছিলেন না।

ট্রাইবুনালে কৌঁসুলিকে সহায়তা করেন শিক্ষানবিশ আইনজীবী মীর আশফাকুল হক।

আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ঝুঁকিপূর্ণ শিল্প প্রতিষ্ঠানের তালিকা হচ্ছে, জানালেন জেলা প্রশাসক

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ২১ জানুয়ারি পানির মোটর হারিয়ে যাওয়ায় ভণ্ড পীর মো. হারুনের কাছে যান এনামুল হক। হারানো পানির মোটর খুঁজে পেতে আয়না পড়া দিবেন বলে জানান জোরারগঞ্জের তথাকথিত ভণ্ড পীর মো. হারুন (৫৫)। সে জানায়, পানির মোটর খুঁজে পেতে তার প্রয়োজন কুমারী মেয়ে।

এদিকে কুমারী মেয়ের খোঁজে দিশেহারা এনামুল। এসময় তার চোখে পড়ে ষষ্ঠ শ্রেণি পড়ুয়া প্রতিবেশী নাতনি কমলা। তার দুদিন আগে এগারো বছরের কমলা নানার বাড়িতে বেড়াতে আসে।

২০১৬ সালের ২২ জানুয়ারি কিশোরীর আপন খালার সম্মতিতে কমলাকে সঙ্গে করে নিয়ে যান তথাকথিত সেই ভণ্ড পীরের কাছে। এ সময় এনামুলের সঙ্গে তার স্ত্রী সবুরা বেগমও যান সেই ভণ্ড পীর হারুনের বাড়িতে।

ভণ্ড পীর হারুন ঝাড়ফুঁক ও একটি তাবিজ দিয়ে কমলাকে ঘরে রেখে এনামুল ও তার স্ত্রী সবুরাকে বেরিয়ে যেতে বলেন। এ সময় বন্ধ ঘরে এগারো বছরের কিশোরী কমলাকে ধর্ষণ করেন ভণ্ড পীর হারুন। এ সময় কিশোরী কমলার চিৎকারে এনামুল ও স্ত্রী সবুরা কিশোরীকে উদ্ধারে গেলে পালিয়ে যায় ভণ্ড পীর হারুন।

২০১৬ সালের ২৩ জানুয়ারি অসুস্থ কমলা হাসপাতালে ভর্তি থাকা অবস্থায় তার মা বাদী হয়ে জোরারগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ২০১৬ সালের ১৩ আগস্ট আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০১৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।

আরএস/এসআই

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!