‘ভারমুক্ত’ তদবিরে ঢাকায় ছুটছেন চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান, অফিসে যান না তেমন

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান অবসরে গেলে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে রুটিন কাজ দেখার দায়িত্ব পান সচিব প্রফেসর আবদুল আলীম। কিন্তু দায়িত্ব নেওয়ার দিন থেকেই তিনি শুধু ঢাকামুখী। দায়িত্বের ১৭ দিনের মধ্যেই অর্ধেকেরও বেশি সময় তিনি ঢাকা ছিলেন!

এদিকে দফায় দফায় ঢাকা যাওয়ায় বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বোর্ডের স্বাভাবিক কার্যক্রম। আবার ব্যক্তিগত সফরের জন্য ভ্রমণ ভাতা বিল নেওয়ায় অপচয় হচ্ছে অর্থেরও।

জানা গেছে, গত ২৯ ডিসেম্বর চেয়ারম্যান প্রফেসর প্রদীপ চক্রবর্তী অবসরে গেলে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান সচিব প্রফেসর আবদুল আলীম। দায়িত্ব নেওয়ার দিন সন্ধ্যায় তিনি ছুটেন ঢাকায়। ফিরেন ১ জানুয়ারি। মাঝে একদিন বাদ দিয়ে ৩ জানুয়ারি তিনি ফের ঢাকা চলে যান।

আরও পড়ুন : দানবীরের আড়ালে ‘ভেজাল’—নেপথ্যের বাবু অজিত ‘হিন্দু নেতাও’

এ দফায় টানা ৫ দিন তিনি ঢাকা থাকেন। এরপর ৭ জানুয়ারি চট্টগ্রামে ফিরেন। চারদিন পর ১২ জানুয়ারি আবারও ঢাকা চলেন যান তিনি। দুদিন সেখানে থাকার পর ফিরেন ১৪ জানুয়ারি।

সূত্র জানায়, চেয়ারম্যান পদে পদায়নের তদবির করতেই তিনি দফায় দফায় ঢাকা ছুটছেন। এদিকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বোর্ডের কার্যক্রমে অংশ না নিয়ে ‘চেয়ারম্যান’ পদের তদবিরে ব্যস্ত থাকায় ব্যাহত হচ্ছে বোর্ডের কার্যক্রম।

অভিযোগ রয়েছে, তিনি ঘন ঘন ঢাকা গিয়ে সেখানে অবস্থানের কারণে কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না সেবাপ্রার্থীরা। দূরদূরান্ত থেকে আসা অনেককেই ফেরত যেতে হচ্ছে। আবার সঠিক সময়ে কাজ না হওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ফাইলের কাজও পড়ে থাকছে।

আরও পড়ুন : রেলে দুর্নীতির বড় ফাঁদ—বদলির ৪৮ ঘণ্টা আগে অনিয়মেই ৩২ নিয়োগ

সংশ্লিষ্টরা জানান, চেয়ারম্যান অবসরে গেলে উনার কাজের দায়িত্ব পান সচিব প্রফেসর আবদুল আলীম। কিন্তু দায়িত্ব গ্রহণের ১৭ দিনের মধ্যে (১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত) ৯ দিনই তিনি ঢাকায় ছিলেন। মূলত তিনি ‘তদবির’ করতেই বারবার ঢাকা যাচ্ছেন। তাঁর অনুপস্থিতিতে স্থবির হয়ে পড়েছে প্রশাসনিক কার্যক্রম। ব্যক্তিগত ফায়দার জন্য ঢাকা গেলেও তিনি নিয়েছেন ভ্রমণ ভাতার বিল। বিষয়টি লজ্জার।

এদিকে কাজ ফেলে এভাবে দিনের দিনের পর দিন ঢাকা পড়ে থাকার ব্যাপারে ক্ষুব্ধ বোর্ডের অনেকেই। এরপরও তাঁরা কেউ সরাসরি মুখ খুলছেন না। তবে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে তাঁরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

অভিযোগের ব্যাপারে আলোকিত চট্টগ্রাম প্রতিবেদক যোগাযোগ করেন প্রফেসর আবদুল আলীমের সঙ্গে। কিন্তু তিনি ‘মিটিংয়ে ব্যস্ত আছি’ বলেই লাইন কেটে দেন। তবে পরে তিনি অভিযোগের ব্যাখ্যা দেন।

ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন…
এ মাসে আমি যতবার ঢাকা গেছি মন্ত্রণালয়ের এবং আন্তঃবোর্ডের আদেশেই এ গেছি। প্রতিবার ঢাকা যাওয়ার উপসচিবের স্বাক্ষরে অফিস আদেশ আছে। আমি কোনো তদবিরে যাইনি। কাজ শেষ করে যেদিন আমার অফিস করার কথা না সেদিনও অফিস করেছি। আমার অনুপস্থিতির কারণে সেবা পাাননি এমন কোনো অভিযোগ আমাকে কেউ করেননি। তাছাড়া আমার ছুটির সময় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসিয়ালি রুটিন দায়িত্বে ছিলেন।

আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!