রেলে দুর্নীতির বড় ফাঁদ—বদলির ৪৮ ঘণ্টা আগে অনিয়মেই ৩২ নিয়োগ

চট্টগ্রাম থেকে রাজশাহী বদলির মাত্র ৪৮ ঘণ্টা আগে ৩২ জনকে তিনি নিয়োগ দিয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, এসব নিয়োগে তিনি নিয়মের তোয়াক্কা করেননি। নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো এই ব্যক্তি হলেন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান সংকেত ও টেলিযোগাযোগ প্রকৌশলী (সিএসটি) মিজানুর রহমান।

গত ৮ সেপ্টেম্বর মিজানুর রহমানকে রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলে (রাজশাহী) বদলি করা হয়।

অনৈতিক সুবিধা নিয়ে তিন সহযোগীর মাধ্যমে ৩২ জনের অস্থায়ী নিয়োগে স্বাক্ষর করেন মিজানুর রহমান। এ ৩২ জনের মধ্যে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে খালাসি পদে ১৪ জন, এমএলএসএস (পিয়ন) পদে ১৪ জন ও ভ্যালুম্যান পদে ৪ জন রয়েছেন। আগামী ১ অক্টোবর থেকে তাদের কাজে যোগদানের কথা রয়েছে।

আরও পড়ুন: ‘রেলওয়ে’—আইবাসে হারিয়ে গেছে ঈদ, কোরবান নিয়েও শঙ্কা

অভিযোগ ওঠে, বদলির কথা জানতে পেরে চট্টগ্রাম থেকে রাজশাহী যাওয়ার আগে তড়িঘড়ি করে এ ৩২ জনের প্রত্যেককে ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকার বিনিময়ে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ দেন মিজানুর রহমান। রেলে অস্থায়ী নিয়োগ দিতে বাজেট পাস করানোর বিধান থাকলেও তিনি তা এড়িয়ে যান।

১৫ সেপ্টেম্বর মিজানুর রহমান রাজশাহীতে প্রধান সংকেত ও টেলিযোগাযোগ প্রকৌশলীর দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার কথা। তার আগেই মিজানুর রহমানের হয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়ার বাকি কাজ সম্পন্ন করেন রেলের বিভাগীয় সংকেত ও টেলিযোগাযোগ প্রকৌশলী (ডিএসটি) জাহিদ আরেফিন পাটোয়ারী তন্ময়।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিভাগীয় সংকেত ও টেলিযোগাযোগ প্রকৌশলী (ডিএসটি) জাহিদ আরেফিন পাটোয়ারী তন্ময় ও পাহাড়তলী বিভাগীয় সংকেত ও টেলিযোগাযোগ দপ্তরের (পাহাড়তলী) সহকারী মিজানুর রহমান গোপনে এসব নিয়োগ চূড়ান্ত করছিলেন। জাহিদ আরেফিন পাটোয়ারী তন্ময়ের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

তবে পাহাড়তলীর বিভাগীয় সংকেত ও টেলিযোগাযোগ দপ্তরের সহকারী মিজানুর রহমান জানান, অস্থায়ী নিয়োগের কাগজপত্র হাতে পাওয়ায় তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: মুহূর্তেই হাওয়া যাত্রীর ব্যাগ—রেলওয়ে পুলিশের জালে সেই চোর

অস্থায়ী চাকরি পাওয়া ৩২ জনের মধ্যে দুজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, টাকার বিনিময়ে তারা এ অস্থায়ী নিয়োগ পেয়েছেন। এ টাকা লেনদেন হয় রেলের দুই কর্মচারীর মাধ্যমে। তারা হচ্ছেন প্রধান সংকেত ও টেলিযোগাযোগ প্রকৌশলীর প্রধান সহকারী মুস্তাফিজুর রহমান এবং তার সহকারী মামুন।

এ বিষয়ে জানতে প্রধান সংকেত ও টেলিযোগাযোগ প্রকৌশলী মিজানুর রহমানকে ফোন করা হলেও পাওয়া যায়নি।

এদিকে প্রধান সংকেত ও টেলিযোগাযোগ প্রকৌশলী পূর্বাঞ্চলের দায়িত্বে মিজানুর রহমানের স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন সুশীল হাওলাদার। পশ্চিমাঞ্চলে সুশীল হাওলাদারের স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন মিজানুর রহমান। যোগাযোগ করা হলে সুশীল হাওলাদার আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের পর আমি চট্টগ্রামের দায়িত্ব বুঝে নেব। তখন বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

এসি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!