বাড়তি সুবিধা নিয়েও অফিস করেন না বাঁশখালীতে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা

বাঁশখালী উপজেলা প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ সাত দপ্তরের প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা নেই দীর্ঘদিন ধরে। বিভিন্ন উপজেলার কর্মকর্তারা এসব পদে অতিরিক্ত দায়িত্বে আছেন। অভিযোগ রয়েছে, অতিরিক্ত দায়িত্বের সরকারি সুযোগ-সুবিধা নিলেও তারা নিয়মিত অফিস করেন না। অনেকে সপ্তাহে অফিসে আসেন না একদিনও!

এদিকে কর্মকর্তারা ঠিকভাবে অফিস না করায় বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বাঁশখালীর খাদ্য নিয়ন্ত্রক অধিদপ্তর, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অধিদপ্তর, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, উপজেলা প্রকৌশলী অধিদপ্তর, মৎস্য অধিদপ্তর, পল্লী উন্নয়ন অধিদপ্তরসহ সার্বিক উন্নয়নে। নানা হয়রানির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের বিভিন্ন কাজের ব্যাপারে ফোন দিলেও তারা কল রিসিভ করেন না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

জানা যায়, প্রতিটি কাজ চলছে তাদের ইচ্ছেমতো। সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে প্রায়সময় দরজা বন্ধ থাকে। কখনো নিম্ন শ্রেণির কর্মকর্তারা দরজা খুলে রাখলেও তারা অফিসের আশেপাশেও থাকেন না। এ কারণে অফিসের গুরুত্বপূর্ণ ফাইল গায়েব হওয়ার শঙ্কাও থেকে যায়।

বাঁশখালী উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন উপজেলা থেকে বাঁশখালীর গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা সপ্তাহে দু-একদিন অফিস করেন। কেউ কেউ জেলা কিংবা নিজের দায়িত্বে থাকা উপজেলার কাজের অজুহাত দেখিয়ে সপ্তাহে একদিনও আসেন না। বাঁশখালী উপজেলা প্রশাসনের মাসিক সমন্বয় সভায়ও তাঁরা উপস্থিত থাকেন না। অথচ অতিরিক্ত দায়িত্বের সরকারি সুযোগ-সুবিধা ঠিকই ভোগ করেছন তাঁরা।

গত দুসপ্তাহ ধরে বাঁশখালী উপজেলার প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তর ঘুরে জানা যায়, উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তার গুরুত্বপূর্ণ পদে ১৩ মাস ধরে সপ্তাহে একদিন করে দায়িত্ব পালন করছেন চন্দনাইশ উপজেলার প্রকল্প কর্মকর্তা মো. রিয়াদ হোসেন।

বাঁশখালী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন আনোয়ারা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. রাশিদুল হক।

বাঁশখালী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তার অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন আনোয়ারা উপজেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা তপন কুমার বড়ুয়া।

বাঁশখালী উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন বোয়ালখালী উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সোনিয়া সফি।

বাঁশখালী উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা এবং সহকারী পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তার দুপদেরই অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন পটিয়া উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা এনামুল হক এবং চন্দনাইশের সহকারী পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. ওমর ফারুক।

বাঁশখালী উপজেলা প্রকৌশলীর গুরুত্বপূর্ণ পদটির অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন বাঁশখালী উপজেলার সহকারী প্রকৌশলী কাজী ফাহিদ বিন মাহমুদ।

এ ব্যাপারে বাঁশখালী উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকল্প কর্মকর্তা মো. রিয়াদ হোসেন আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, জনবল সংকটে চন্দনাইশ থেকে এসে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করি। এতে আমার কোনো গাফিলতি নেই। কাজ থাকলে আসি, না হয় আসি না।

বাঁশখালী উপজেলা প্রকৌশলীর অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী প্রকৌশলী কাজী ফাহিদ বিন মাহমুদ বলেন, আমি বাঁশখালীতে থেকে রাতদিন সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছি। কিন্তু অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা থাকেনও না, আসেনও না।

এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইদুজ্জামান আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, বাঁশখালী উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে অতিরিক্ত দায়িত্বের বিষয়টি উপজেলা মাসিক সমন্বয় সভায় রেজুলেশন করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়। শূন্য পদগুলোতে কর্মকর্তা নিয়োগ হলে বাঁশখালীর বহুমুখী উন্নয়ন হবে। চলমান উন্নয়ন কাজেও ব্যাঘাত হবে না। শূন্য পদগুলো পূরণ করা জরুরি।

এসআই/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!