বাঁশখালীতে ‘আসহাব চেয়ারম্যান’ হাজারো গাছ কাটলেও বন বিভাগ জব্দ দেখাল ২০০!

বাঁশখালীতে অনুমতি ছাড়াই সরকারি খাস জায়গা থেকে হাজারো গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে পুকুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আসহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে। তবে এ ঘটনায় বন বিভাগ মাত্র ২০০ গাছের টুকরো জব্দ দেখিয়েছে। এসব গাছ এক ইউপি সদস্যের জিম্মায় রাখা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বিকেল ৫টায় ঘটনাস্থল ঘুরে দেখা যায়, এক হাজারের বেশি কাটা গাছ প্রায় ১২ একর সরকারি খাস জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে। এসব কাটা গাছের ছবি ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।

গ্রামবাসীর অভিযোগ, বন বিভাগের পুকুরিয়া বিট কর্মকর্তা আশরাফ আলী পুকুরিয়া চন্দ্রপুর পাহাড়ে গিয়ে চেয়ারম্যান মো. আসহাব উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করেন।এরপর কাটা গাছগুলো জব্দ না দেখিয়ে মাত্র ২০০ টুকরো গাছ স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মুনিরুল মান্নান চৌধুরীকে বুঝিয়ে দেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বন বিট কর্মকর্তা আশরাফ আলী আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, কাটা গাছ গণনার সময় পাইনি তাই অনুমান করে দিয়েছি।

যোগাযোগ করা হলে ইউপি সদস্য মুনিরুল মান্নান চৌধুরী বলেন, বন বিভাগ ও পুলিশের উপস্থিতিতে ২০০ টুকরো গাছের একটা জিম্মানামা হাতে দেওয়া হয়েছে। এর বেশি কিছু জানি না। বাকি সব বনবিট কর্মকর্তারা জানেন।

আরও পড়ুন : পেকুয়ায় সাতসকালে ট্রাকভর্তি গাছ পাচার

ঘটনাস্থলে যাওয়া রামদাস পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক তপন কুমার বাগচী বলেন, বন কর্মকর্তাদের উচিত ছিল গাছগুলো গণনা করে জব্দ করা। সবকিছুতে পুলিশের দোষ খুঁজে মানুষ। অথচ বন কর্মকর্তারা অনুমাননির্ভর গাছের জব্দ তালিকা তৈরি করেছেন।

যোগাযোগ করা হলে বাঁশখালী বন বিভাগের কালীপুর রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেন দুঃখ প্রকাশ করে আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, বাবাকে নিয়ে হাসপাতালে থাকায় এত বড় একটা ঘটনাতে উপস্থিত থাকতে পারিনি। জায়গাটি সরকারি খাস জায়গা, বন বিভাগের নয়। তারপরও গাছ কাটার ঘটনায় মামলা হবে। স্থানীয় ভূমি অফিসও মামলা করতে পারে। তবে চেয়ারম্যান লিজ নেওয়া জায়গা বলে দাবি করছেন। প্রকৃত ঘটনা তদন্ত করে বের করা হবে।

২০০ টুকরো গাছ জব্দ দেখানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটিও তদন্ত করা হবে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে পুকুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আসহাব উদ্দিন বলেন, জায়গাটি আমার লিজ নেওয়া। গাছ কাটারও অনুমতি নেওয়া হয়েছে। আমার গাছ আমি কাটবো, প্রশাসনের অনুমতি নেব, কী নেব না তা আমার মাথাব্যথা, অন্যদের কেন হবে বলে তিনি উল্টো প্রশ্ন করেন। প্রথমে ৫০০টি গাছ কাটার কথা স্বীকার করলেও পরে ২০০টি কাটার কথা স্বীকার করেন তিনি।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন আক্তার আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, গাছ কাটার বিষয়ে চেয়ারাম্যানকে কোনো ধরনের অনুমতি দেওয়া হয়নি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইউবি/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!