দুছাত্র নিহতের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উত্তাল চট্টগ্রাম প্রকৌশল প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) ক্যাম্পাস। ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা আজ (২৩ এপ্রিল) সকালে কাপ্তাই সড়কে গাড়ির টায়ার জ্বালিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। এছাড়া ক্যাম্পাসের ভেতর থাকা শাহ আমানত পরিবহনের আরও দুটি গাড়ি ভাঙচুর করে। এতে দুর্ভোগে পড়েন চালক ও যাত্রীরা।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকাল ৯টার দিকে কাপ্তাই সড়কে গাড়ির টায়ার জ্বালায় শিক্ষার্থীরা। এরপর বেলা ১২টা ৪০মিনিটে নিহত শিক্ষার্থীদের গায়েবানা জানাজা হয়। এতে অংশ নেন চুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল আলম, উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. জামাল উদ্দীন আহাম্মদসহ চুয়েটের শিক্ষক ও কর্মকর্তারা।
এসময় আন্দোলনরত চুয়েট শিক্ষার্থীরা ৯ দফা দাবি জানান। একইসঙ্গে অ্যাকাউন্টিং বিভাগের অধ্যাপক সুমন দে’র পদত্যাগ দাবি করেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, পলাতক শাহ আমানত বাসের চালক ও হেলপারকে দ্রুত আটক করে আইনের আওতায় আনতে হবে। কাপ্তাই সড়কে এবি ট্রাভেলস ও শাহ আমানত বাস সার্ভিস চলাচল নিষিদ্ধ করতে হবে।
আরও পড়ুন : মুহূর্তেই লাশ চুয়েটের ২ ছাত্র, রাস্তায় ব্যারিকেড—বাসে আগুন
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, কাপ্তাই সড়কে বাস-অটোরিকশা বেপরোয়াভাবে চালিয়ে আমাদের ক্যাম্পাসের অনেক শিক্ষার্থীকে আহত করেছে। আমরা একটি নিরাপদ সড়ক চাই, আজকে দুজন মেধাবী শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। সড়কে আর কোনো মানুষের মৃত্যু যাতে না হয়।
শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়াসহ ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে।
এদিকে আজ দুপুর ৩টার দিকে চুয়েট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে চত্বরে ভিসি অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল আলম এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অংগজ্যাই মারমা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন।
এ বিষয়ে চুয়েটের উপপরিচালক (জনসংযোগ) ফজলুর রহমান আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত দুশিক্ষার্থীর মরদেহ আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
যোগাযোগ করা হলে রাউজান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহিদ হোসেন বলেন, চুয়েটের দুশিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা আজ সকালে আবারও সড়ক অবরোধ করেছে। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বশর মো. ফখরুজ্জমান চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে সভা ডেকেছেন। সভায় চুয়েট উপাচার্য ড. রফিকুল আলম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অংগজ্যাই মারমাসহ আমি যাচ্ছি। সভার পর সিদ্বান্ত নেওয়া হবে ।
প্রসঙ্গত, গতকাল (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ৩টার দিকে মোটরসাইকেলে ঘুরতে বের হয়ে কাপ্তাই সড়কের যাত্রীবাহী বাস শাহ আমানত পরিবহনের ধাক্কায় নিহত হন চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী শান্ত সাহা ও তৌফিক হোসেন। এ ঘটনায় আহত হন চুয়েটের ইইই বিভাগের মো. জাকারিয়া হাসান হিমু। এ ঘটনার পর সন্ধ্যায় সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করে শিক্ষার্থীরা। এসময় একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
পরে রাত সাড়ে ৯টার পর সড়কে অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা। এরপর তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে অবস্থান করেন। রাত ৯টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে গাড়ির আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। রাত ১০টার দিকে সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
আরবি/আলোকিত চট্টগ্রাম