ফেসবুকে পরিচয়—চট্টগ্রামে এক পুলিশের ব্ল্যাকমেল থেকে রেহাই পাচ্ছে না প্রবাসীর বউ

ফেসবুকে পরিচয়ের পর প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণ, ব্ল্যাকমেইল করে ২ লাখ টাকা আত্মসাৎ এবং অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে পুলিশ কনস্টেবল কাজল ভৌমিকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন এক প্রবাসী গৃহবধূ। মামলাটি আমলে নিয়ে গোয়েন্দা বিভাগকে (ডিবি) তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. গোলম সরোয়ার এ আদেশ দেন।

অভিযুক্ত কনস্টেবল কাজল ভৌমিক চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ভবানীপুর নিলিমা চৌধুরীর বাড়ির দয়াল ভৌমিকের ছেলে। তিনি বর্তমানে কক্সবাজার সদর থানায় কর্মরত।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদীপক্ষের আইনজীবী জীতেন দে বলেন, অভিযোগ আমলে নিয়ে ডিবিকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন আদালত। এসময় সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট বিপ্লব আচার্য্য।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ফেসবুকের মাধ্যমে কনেস্টেবল কাজলের সঙ্গে ওই নারীর পরিচয় হয়। আত্মীয় পরিচয়ে আলাপের সূত্র ধরে চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি কাজল ঘরে বেড়াতে আসেন। এরপর ভুক্তভোগী নারীকে ধর্ষণ করেন। এসময় বেশকিছু ছবিও তুলেন তিনি। পরে সেসব ছবি স্বামীসহ পরিবার-পরিজনকে পাঠানোর ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন সময় ফের ধর্ষণ করেন। এছাড়া ব্ল্যাকমেইল করে বেড়াতে নিয়ে সেখানেও ছবি তুলতেন তিনি। ছবি তুলতে না চাইলে মারধর করতেন। এছাড়া প্রতিবার ধর্ষণের সময় অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি তুলে রাখতেন কাজল।

চলতি বছরের ৮ এপ্রিল কাজল মাসহ ভুক্তভোগী নারীকে নিয়ে মন্দিরে যান। তার মাও এসব বিষয় বুঝতে পারেন। এছাড়া তিনি কাজলকে বিয়ে করতে বেশ কয়েকবার ওই নারীকে বলেন। এরপর ১৪ এপ্রিল মাকে নিয়ে ওই নারীর বাসায় যান কাজল। তবে এ সময়ের আগে ও পরে একাধিকবার ধর্ষণের স্বীকার হন সেই নারী। এছাড়া রিকশায় করে বেড়াতে যাওয়ার ছবি প্রবাসী স্বামীর মোবাইলে পাঠান কাজল। পরে স্বামীকে সব ঘটনা খুলে বলেন ভুক্তভোগী সেই নারী। এরপর কাজলের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন তিনি।

এদিকে ভুক্তভোগী নারীর পরিবারসহ বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি-ধামকি দিতে থাকেন কাজল। পরে আবার যোগাযোগ হলে নারীকে বিয়ের প্রস্তাব করেন। কিন্তু সেই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ক্ষুব্ধ হন কাজল।

গত ১৯ জুন ফেসবুকে তাদের দুটি ছবি প্রকাশ করেন কাজল। এসব ছবির কারণে সামাজিকভাবে হেয় হন ভুক্তভোগী নারীসহ তার পরিবার। ছবিগুলো সরিয়ে নিতে বললে সেই নারীকে হুমকি দেন তিনি। সেদিন ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন সেই নারী। পরে তাকে উদ্ধার করে হাটহাজারীর একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করে পরিবার।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী নারী বলেন, কাজলের এমন অমানবিক আচরণে সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। তার বিরুদ্ধে কক্সবাজার রেঞ্জের ডিআইজির কাছে অভিযোগ করলে তিনি আমাকে ডেকে নিয়ে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন এবং আইনি ব্যবস্থার আশ্বাস দেন। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।

আরএস/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!