৪ বছর পালিয়ে থাকা ‘প্রেমিক ডাক্তার’ হঠাৎ হাজির, পাঠানো হলো জেলে

ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল চিকিৎসকের আত্মহনন

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের চিকিৎসক মোস্তফা মোরশেদ আকাশ আত্মহত্যার ঘটনায় ডাক্তার মাহবুব আলমকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

সোমবার (১৬ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম দ্বিতীয় যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ মু. ছালমত উল্লাহ শুনানি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী ওয়াহিদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, দীর্ঘ চার বছর পলাতক থাকা ডা. মাহবুব আলম আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করেন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে ২০১৯ সালের ৩১ জানুয়ারি নগরের চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার বাসায় নিজের শরীরে নিজেই ইনজেকশন পুশ করে আত্মহত্যা করেন ডা. আকাশ। আত্মহত্যার আগে নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি স্ত্রীর বিরুদ্ধে ‘বিয়েবহির্ভূত সম্পর্ক’ ও ‘প্রতারণার’ অভিযোগ করেন।

আরও পড়ুন: ডাক্তার সেজে টিউমার অপারেশন করেন মুদি দোকানের কর্মচারী!

মৃত্যুর আগে ডা. আকাশ ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন- ‘ভালো থেকো, আমার ভালোবাসা (মিতু) তোমার প্রেমিকদের নিয়ে…।’ এর প্রমাণ হিসেবে মিতুর সঙ্গে তার বন্ধুদের বেশকিছু ছবিও তিনি আপলোড করেন।

সেদিন রাতেই নন্দনকানন এলাকায় মামাত ভাইয়ের বাসা থেকে মিতুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন ১ ফেব্রুয়ারি আকাশের মা জোবেদা খানম বাদী হয়ে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে ছয়জনকে আসামি করে চান্দগাঁও থানায় মামলা করেন। সেই মামলায় মিতুকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

চমেক হাসপাতালের অ্যানেস্থেসিয়া বিভাগের চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত ছিলেন আকাশ। তিনি চন্দনাইশ উপজেলার বাংলাবাজার বরকল এলাকার মৃত আবদুস সবুরের ছেলে। তিনি নগরের চান্দগাঁও আবাসিক এলাকায় থাকতেন।

এদিকে গ্রেপ্তারের পর মিতু স্বীকারোক্তি দেন, ২০০৯ সাল থেকেই তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল ডা. মোস্তফা মোরশেদ আকাশের। ২০১৬ সালে পারিবারিকভাবেই তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর উচ্চতর পড়াশোনার জন্য ইউএসএ চলে যান মিতু। ইউএসএ থেকেই মিতুর সঙ্গে একাধিক সম্পর্ক নিয়ে ডা. আকাশের দাম্পত্য কলহ শুরু হয়।

২০১৯ সালের ১৩ জানুয়ারি মিতু দেশে ফিরলে দাম্পত্য কলহ আরও প্রকট হয়ে ওঠে। ঘটনার রাতে চাঁদগাও আবাসিক এলাকার বাসায় মিতু ও আকাশের মধ্যে তুমুল ঝগড়া হয়। ওই সময় আকাশের বাসায় মিতুর একটি ভিডিও ধারণ করা হয়। যে ভিডিওতে মিতু তার একাধিক বন্ধুর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের কথা স্বীকার করেন। সেদিন স্ত্রীর বেপরোয়া জীবনের বিভিন্ন দিক উল্লেখ করে নিজের ফেসবুক ওয়ালে স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যা করেন আকাশ।

এদিকে তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ১০ সেপ্টেম্বর পাঁচজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। আসামিরা হলেন- তানজিলা হক চৌধুরী মিতু, তার (মিতুর) মা শামীমা শেলী, বাবা আনিসুল হক চৌধুরী, ছোট বোন সানজিলা হক চৌধুরী আলিশা এবং মিতুর কথিত বন্ধু ডা. মাহবুবুল আলম।

আরএস/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!