চট্টগ্রামে সাইবার অপরাধে ৫ যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা

বাঁশখালী উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটি থেকে পদত্যাগ করা যুগ্ম আহ্বায়ক জসিম উদ্দিন চৌধুরী খোকনসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে। মামলাটি কাউন্টার টেররিজম ইউনিটকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

সোমবার (১১ মার্চ) চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জহিরুল কবির শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।

মামলায় অভিযুক্তরা হলেন—নবগঠিত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক জসীম উদ্দিন চৌধুরী খোকন, সদস্য রায়হানুল হক চৌধুরী, মো. জহির উদ্দিন বাবর, মাঈনুদ্দিন হাসান চৌধুরী ও সনেট দাশ।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাড. মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী।

আরও পড়ুন : ‘সাইবার ক্রাইম’—পাঁচলাইশে গৃহবধূকে ভূমিদস্যু বানাতে গিয়ে সাইবার মামলা খেল ৪ যুবক

মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বাঁশখালী উপজেলা যুবলীগের ব্যানারে বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী, যুবলীগ চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদকের ছবি সংযুক্ত করে সংবাদ সম্মেলন করেন অভিযুক্তরা। সেখানে যুবলীগের গঠনতন্ত্র বিরোধী বক্তব্য দেওয়া হয়। করা হয় অর্থ লেনদেনের মিথ্যা অভিযোগ । সেই অভিযোগগুলো বিভিন্ন গণমাধ্যমের সহায়তায় ছাপিয়ে ৫ অভিযুক্ত নিজেদের ফেসবুকে পোস্ট করেন। এর ফলে এলাকায় যুবলীগ কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয় ও এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা বিঘ্ন ঘটে।

বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের বিরুদ্ধে এমন মানহানিকর, মিথ্যা, বানোয়াট, কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করায় চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম জহুর এ মামলা করেন। মামলাটি দায়েরে বাদির আইনজীবী ছিলেন রফিকুল আলম। এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন অ্যাড. শুভাশিস শর্মা, অ্যাড. সেলিম চৌধুরী ও অ্যাড. সাজ্জাদ হোসেন সিবলু।

এর আগে গত ৪ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবলীগ সভাপতি দিদারুল ইসলাম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম জহুর স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ৯০ দিনের জন্য বাঁশখালী উপজেলা যুবলীগের ৩১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ সদস্য অধ্যাপক নূরুল মোস্তফা সিকদারকে (সংগ্রাম) আহ্বায়ক করা হয়।

কমিটির অন্যরা হলেন—যুগ্ম আহ্বায়ক মো. শাহাদাত রশিদ চৌধুরী, মো. জসিম উদ্দীন চৌধুরী (খোকন), কাউন্সিলর আরিফ মাঈনুদ্দিন ও মো. সেলিম উদ্দিন চৌধুরী, সদস্য আতাউর রহমান কাদের চৌধুরী, মো. শাহাদাৎ হোসেন, খোরশেদ আলম পাশা, আবদুল ওদুদ লেদু, জাহেদুল আলম মিজান, জামাল উদ্দীন, মনসুর আলম, আবদুল জব্বার, মুজিবুল আলম মুজিব, মিশুক কান্তি দে, বেলাল সিকদার, মাহমুদুল ইসলাম বদি, ওসমান গণি, মু. এরশাদ, বখতেয়ার হোছাইন, আইনুল ইসলাম ইফতেখার, গিয়াস উদ্দিন, আজমিরুল ইসলাম চৌধুরী, সাদ্দাম হোসাইন, মহসিন সিরাজ, মো. রায়হানুল হক চৌধুরী, মিজানুর রহমান বাবুল, জহির উদ্দিন বাবর, মাঈনুদ্দীন হাসান চৌধুরী, সনেট দাশ ও মো. নোমান।

এদিকে কমিটি ঘোষণার ৯ দিনের মাথায় অর্থাৎ ১৩ ফেব্রুয়ারি নানা অভিযোগ তুলে এক যুগ্ম আহ্বায়কসহ ৫ জন পদত্যাগ করেন। এরপর অতীত রাজনীতির মিথ্যা পদবি ব্যবহার ও অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে ১৪ ফেব্রুয়ারি সংবাদ সম্মেলন করেন তারা। এছাড়া হত্যা মামলার আসামি, চাঁদাবাজ, ভূমিদস্যু এবং রাজাকার পরিবারের সদস্যদের এ কমিটির পদে রাখা হয়েছে বলেও অভিযোগ তাদের।

এ বিষয়ে মামলার বাদী জহুরুল ইসলাম জহুর আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, বাঁশখালী উপজেলার নবগঠিত যুবলীগ কমিটির ৫ নেতা পদত্যাগ করার আগে সভাপতি দিদারুল ইসলাম চৌধুরী কিংবা আমার সঙ্গে আলাপ করেননি। এছাড়া অর্থ লেনদেনের অভিযোগ তুলেছেন আমাদের বিরুদ্ধে। পরে এ নিয়ে আমি এবং সভাপতি দিদারুল ইসলাম চৌধুরী আলাপ করি বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের সঙ্গে। তিনি বলেন, যদি অভিযোগ সত্য না হয় তবে তোমরা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করো। সেই নির্দেশনা মোতাবেক আমি মামলা করেছি।

আরএস/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!