‘সাইবার ক্রাইম’—পাঁচলাইশে গৃহবধূকে ভূমিদস্যু বানাতে গিয়ে সাইবার মামলা খেল ৪ যুবক

অনুমোদন ছাড়াই ২৪এইচডি নামে আরেক কথিত অনলাইন টিভির অস্তিত্ব মেলেছে চট্টগ্রামে। কোমরে প্রেস লেখা কার্ড ঝুলিয়ে, ক্যামেরা হাতে নিয়ে নিজেদের সাংবাদিক পরিচয়ে নগরে ঘুরে বেড়াচ্ছে বেশ কয়েকজন যুবক।

এক গৃহবধূ ও ঠিকাদারকে ভূমিদস্যু বানিয়ে খবর প্রচার করতে গিয়ে এই কথিত টিভির তিন যুবকসহ ৪ জনের কাঁধে উঠেছে এবার সাইবার মামলা।

আদালত সূত্রে জানা যায়, মিথ্যা, বানোয়াট ও মানহানিকর সংবাদ প্রচারের অভিযোগে ‘২৪এইচডি’ নামের কথিত আইপি টিভির বিরুদ্ধে তথ্য ও প্রযুক্তি আইনে মামলা করেছেন প্রথম শ্রেণির এক ঠিকাদার। ওই মামলায় আসামি করা হয়েছে সম্পাদক, প্রতিবেদক, ক্যামেরাম্যানসহ চারজনকে।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করেন আকতার হোসেন নামের ওই ঠিকাদার। মামলায় চারজনের নাম উল্লেখসহ আরও ৮ থেকে ১০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।

এদিকে মামলার বিষয়টি আলোকিত চট্টগ্রামকে নিশ্চিত করেছেন বাদী আকতার হোসেন।

মামলার আসামিরা হলেন- নগরের পাঁচলাইশ থানার বিবিরহাট বড় বাড়ির মৃত কালা মিয়ার ছেলে আবু হায়দার (৩৫), পাঁচলাইশ থানার গোলপাহাড় সুবর্ণ আবাসিক এলাকার ১০৫৪ রহিম ম্যানসনের (পঞ্চম তলার) ‘২৪এইচডি’ আইপি টিভির সম্পাদক নুরুল আমিন খোকন, প্রতিবেদক সাইফুদ্দিন রমিজ এবং ক্যামেরাম্যান মো. শাকিল।

অভিযোগ রয়েছে, নগরের পাঁচলাইশে অসহায় গৃহবন্ধু রীনা আক্তারের জায়গা দখলে মরিয়া ছিল এলাকার চিহ্নিত ভূমিদস্যুরা। তাদের সহায়তা করছিল পাঁচলাইশ থানা পুলিশ। এছাড়া প্রকৃত জায়গার মালিককে ‘ভূমিদস্যু’ বানাতে কিছু লোক জড়ো করে মানববন্ধনও সাজানো হয়। ওই সংবাদ প্রচার করা হয় ২৪এইচডি নামের ওই কথিত আইপি টিভিতে। ওই সংবাদে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য প্রচার করে বাদীর মানহানি করা হয়।

মামলার বিবরণ সূত্রে জানা যায়, পাঁচলাইশ থানার হামজারবাগ লেইনের শাহ আমানত আবাসিক এলাকার মৃত সিরাজুল হকের ছেলে আকতার হোসেন (৫২)। তিনি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রথম শ্রেণির লাইসেন্সধারী একজন ঠিকাদার। দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে তিনি ঠিকাদার হিসেবে সুনামের সঙ্গে কাজ করছেন।

২০১৬ সালের ৪ অক্টোবর আকতার হোসেনের স্ত্রীর নামে জায়গার রেজিস্ট্রেশন নম্বর-১৪১১০ ও কবলা নম্বর শূন্য দশমিক শূন্য দুশত ছয় একর জমি কিনেন। পরে ওই জায়গার নামজারিও করেন তিনি। এরপর দীর্ঘদিন ধরে ওই জায়গা তাদের দখলে রয়েছে।

আরও জানা যায়, এক থেকে চার নম্বর আসামিরা জায়গার মালিককে সরিয়ে দখলের চেষ্টা করে আসছিল। তাদের কাজে বাঁধা দেওয়ায় আকতার হোসেন ও তার পরিবারে লোকজনের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন আসামিরা। এরপর গত ২২ ডিসেম্বর বেলা ১২টার দিকে আসামিদের প্রত্যক্ষ মদদে অজ্ঞাত আরও ৮ থেকে ১০ জনের উপস্থিতিতে মানববন্ধন করা হয়। সেখানে আকতার হোসেনের স্ত্রী রিনা আকতারের নামে মানহানিকর ব্যানার ছাপিয়ে তা কথিত অনলাইন টিভিতে প্রচারও করা হয়।

এছাড়া মানববন্ধনে মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যে প্রণোদিতভাবে বক্তব্যে দিয়ে সুনাম ক্ষুণ্ন করা হয়। এরপর মানবন্ধনের সংবাদ কথিত সেই আইপি টিভির মাধ্যমে ফেসবুকে প্রচার করা হয়। যাতে সম্মানহানি হয়েছে আকতার হোসেন ও তার পরিবারের।

আরএন/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!