চট্টগ্রামে নেশার টাকার জন্য বৃদ্ধাকে খুন, রুবেল—আব্বাসের মৃত্যুদণ্ড

চট্টগ্রাম নগরে স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নিতে বৃদ্ধাকে খুনের ঘটনায় দুআসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

রোববার (১০ মার্চ) চট্টগ্রাম ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ বেগম সিরাজাম মুনীরা এ রায় দেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন— ভোলার দৌলতখান থানার চর খলিফা গ্রামের কলিম পাটোয়ারী বাড়ির মফিজুল ইসলামের ছেলে মো. রুবেল (২৮) এবং আনোয়ারা উপজেলার বটতলী গ্রামের মোহছেন আউলিয়া মোল্লাপাড়া নূরু ছফার ছেলে মো. আব্বাস (৩০)। এদের মধ্যে রুবেল পলাতক। অপর আসামি আব্বাসকে রায়ের পর কারাগারে পাঠানো হয়।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পিপি দীর্ঘতম বড়ুয়া আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, ২০১৮ সালের সদরঘাট থানার মামলায় ৩০২ ধারায় দুআসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। এছাড়া অপর এক ধারায় ৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় আসামি আব্বাস উপস্থিত ছিলেন। অপর আসামি রুবেল জামিনে গিয়ে পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ২৫ মে ভোরে নগরের সদরঘাট থানার নেভাল-২ এলাকায় প্রতিদিনের মতো হাঁটতে বের হন ৭৭ বছর বয়সী মঞ্জু সেন। এ সময় প্যাসিফিক গ্রুপের পরিত্যক্ত ভবনের দারোয়ান রুবেল ও তার বন্ধু আব্বাস নেশার টাকা যোগাতে মরিয়া হয়ে উঠেন। এ সময় মঞ্জু সেনের তাদের সামনে হেঁটে যাচ্ছিলেন। তারা লক্ষ্য করেন মঞ্জু সেনের হাতে ও কানে স্বর্ণালংকার আছে। এরপর সুযোগ বুঝে আসামিরা মঞ্জু সেনের ওপর হামলা করেন।

আরও পড়ুন : দুধ খেতে চাওয়ায় তামিমকে গলাটিপে খুন করে বস্তা মুড়িয়ে রাখে ভাবি

এসময় বৃদ্ধা মঞ্জুকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় রুবেল। সেখান থেকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয় প্যাসিফিক গ্রুপের পরিত্যক্ত ভবনে। সেখানে ওই নারীকে গলাটিপে খুন করেন রুবেল। মৃত্যু নিশ্চিতের পর ওই নারীর শরীরে থাকা স্বর্ণালংকার ও মোবাইল ফোন নিয়ে নেয় আসামিরা। পরে লাশ গুম করতে একটি কাঁথা মুড়িয়ে ভবনের পাশের পরিত্যক্ত জায়গায় ফেলে দেয়।

এদিকে ঘরে না ফেরায় মঞ্জু সেনের সন্ধানে এলাকায় মাইকিং করেন ছেলে রতন কান্তি সেন। এছাড়া একইদিন নগরের কোতোয়ালী থানায় জিডিও করেন তিনি। পরে পত্রিকায় নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তি দেন।

পরদিন ২৬ মে দুপুরে নগরের সদরঘাট থানার নেভাল-২ নৌ বাহিনী ল্যান্ডিং স্টেশন ও রেস্ট হাউজের নির্মাণাধীন ভবনের পাশে প্যাসিফিক গ্রুপের অফিসের পাশে ঝোপঝাড় থেকে এক অজ্ঞাত নারীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে রতন কান্তি সেন লাশটি মায়ের বলেন শনাক্ত করেন।

লাশের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট থেকে জানা যায়, ধাক্কা দেওয়ার পর মাথায় আঘাত পান মঞ্জু। মূলত মাথায় আঘাত পাওয়ার কারণে তিনি মারা যান।

একই বছরের ১১ অক্টোবর মামলা তদন্ত শেষে আদালতে রিপোর্ট দেন সদরঘাট থানার এসআই কামরুল ইসলাম চৌধুরী। ২৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ১০ সাক্ষীর সাক্ষ্য উপস্থাপন করে রাষ্ট্রপক্ষ।

আরএস/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!