চট্টগ্রামে উলঙ্গ করে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে স্বর্ণ ব্যবসায়ী খুন, আড়ালে চোরাচালানের টাকা

চট্টগ্রাম নগরের রিয়াজউদ্দিন বাজার এলাকায় সুমন সাহা (২৬) নামে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে লোহার রড, পাইপ ও লোহার প্লাস দিয়ে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে। এ ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) দুপুর ৩টার দিকে সিএমপির উপপুলিশ কমিশনারের (দক্ষিণ) কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের এ তথ্য জানান উপপুলিশ কমিশনার থেকে এডিশনাল ডিআইজি পদে সদ্য পদোন্নতি পাওয়া মো. মোস্তাফিজুর রহমান।

গ্রেপ্তাররা হলেন— চট্টগ্রামের চন্দনাইশ থানার বাইনজুরী এলাকার মৃত ইছহাক মিয়ার ছেলে মফিজুর রহমান দুলু (৫৬), নগরের আলকরণ এলাকার মো. গোলাম মোস্তফার ছেলে মো. মামুন (৩৮) এবং নগরের এনায়েতবাজার এলাকার আব্দুল আলী সওদাগরের ছেলে নুর হাসান রিটু (২৮)।

আরও পড়ুন : ব্যবসায়ী খুন—ঢাকা পালিয়েও হলো না রক্ষা, ২ আসামিকে ধরল র‌্যাব

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত ২৬ নভেম্বর রাত ১১টা থেকে ২৭ নভেম্বর রাত সাড়ে ১০টার মধ্যে সুমনকে খুন করা হয়। দুলু মামুন ও রিটু আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটায়। তারা নগরের রিয়াজউদ্দিন বাজার মুরগিহাটা লেইন এলাকার সুপার মার্কেটের দ্বিতীয় তলার দুলুর ভাড়া ঘরে লোহার রড, পাইপ ও লোহার প্লাস দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে তাকে খুন করে। এ ঘটনায় নিহত সুমনের মামার বিবরণে দুলু, মামুন ও রিটুকে শনাক্ত করে পুলিশ। নগরের রিয়াজউদ্দিন বাজার, জামালখান, হেমসেন লেইন ও আসকার দীঘির পাড় এলাকা থেকে সোমবার রাত সাড়ে ৪টার দিকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

এ বিষয়ে উপপুলিশ কমিশনার মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আসামিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, ভুক্তভোগী সুমন অনেকদিন ধরে দুলুর রিয়াজউদ্দিন বাজার এলাকার ভাড়া রুমে যাওয়া-আসা করত। সেখানে তারা একসঙ্গে নিয়মিত মাদক সেবন ও আড্ডা দিত। সুমন ও দুলু স্বর্ণ চোরাচালান ও মাদক ব্যবসায় জড়িত। এসব নিয়ে তাদের মধ্যে লেনদেনে সুমনের কাছে টাকা পেত দুলু। আর্থিক লেনদেন নিয়ে দুজনের মধ্যে বাকবিতণ্ডাও হয়েছিল। একদিন সুমন মাদক সেবনরত অবস্থায় দুলুকে স্বর্ণ কেনার জন্য টেকনাফ নিয়ে যাওয়ার কথা বলে। পরে মামুন জানতে পেরে দুলুকে টেকনাফ নিয়ে গিয়ে সুমন মারতে চায়। এজন্য সুমন লোকও ঠিক করে। তাদের কয়েকজন দুলুর রিয়াজউদ্দিন বাজার অফিস রেকিও করে।

উপপুলিশ কমিশনার আরও বলেন, গত ২৬ নভেম্বর রাতে দুলুর ভাড়ারুমে সুমন মাদক সেবন করতে এলে তাকে আটক করে অফিস রেকির বিষয়ে সুমনের কাছে জানতে চায় দুলু। একপর্যায়ে উত্তর না পেয়ে দুলু ক্ষিপ্ত হয়ে লাঠি, লোহার রড, প্লাস্টিকের পাইপ, লোহার প্লাস দিয়ে সুমনকে মারধর শুরু করে। এসময় দুলুর সঙ্গে যোগ দেয় মামুন ও রিটু। তারা সুমনকে হাত বেঁধে উলঙ্গ করে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে খুন করে। পরে এ ঘটনায় সুমনের মা বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন।

জেএন/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!