বিমানে আগুন—প্যারাসুটে লাফ, বাঁচল না ‘সোর্ড অফ অনার’ পাওয়া সেই পাইলট

চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গায় বিধ্বস্ত প্রশিক্ষণ বিমানে (ওয়াইএকে-১৩০, রাশিয়া) আহত ‘সোর্ড অফ অনার’ পাওয়া পাইলট স্কোয়াড্রন লিডার অসিম জাওয়াদ মারা গেছেন। এছাড়া আহত উইং কমান্ডার সুহান জহুরুল হক ঘাটির মেডিকেল স্কোয়ার্ডনে চিকিৎসাধীন আছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) উপকমিশনার (বন্দর) শাকিলা সোলতানা আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, আজ স্কোয়াড্রন লিডার অসিম জাওয়াদ গুরুতর আহত অবস্থায় বিএনএস পতেঙ্গা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বেলা ১২টার দিকে তার মৃত্যু হয়। মৃতের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতসহ আইনগত বিষয় প্রক্রিয়াধীন।

জানা গেছে, পেশাজীবনে কৃতিত্বের জন্য ‘সোর্ড অফ অনার’ পেয়েছেন অসিম জাওয়াদ। ডিআর কঙ্গোতে জাতিসংঘ শান্তি মিশনেও তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি পেশাদারি দক্ষতা ও সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘মফিজ ট্রফি’, ‘বিমান বাহিনী প্রধান ট্রফি’ ও বিমান বাহিনী প্রধানের প্রশংসাপত্র পেয়েছেন। আসিম জাওয়াদ পিটি-৬, এল-৩৯জেডএ, এফ-৭এমবি, এফ-বিজি১ বিমান চালিয়েছেন। তিনি ছিলেন এফ-৭এমজি১ এর অপারেশনাল পাইলট ও এলিমেন্ট লিডার।

নিহত স্কোয়াড্রন লিডার অসিম জাওয়াদ নগরের পতেঙ্গায় বিমানবাহিনীর জহরুল হক ঘাঁটিতে অফিসার্স আবাসিক এলাকায় থাকতেন। তিনি সাভার ক্যান্টনমেন্ট স্কুল এন্ড কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে ২০০৭ সালে এসএসসি ও ২০০৯ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।

আরও পড়ুন : চট্টগ্রামে বিধ্বস্ত প্রশিক্ষণ বিমান, প্যারাসুটে প্রাণ বাঁচাল পাইলট

২০১০ সালে বাংলাদেশ এয়ারফোর্স একাডেমিতে (বাফা- বাংলাদেশ এয়ারফোর্স একাডেমি) যোগ দেন। ২০১১ সালের ডিসেম্বরে পাইলট অফিসার হিসেবে কমিশন পান। ফ্লাইং ইনস্ট্রাক্টর’ স্কুল অব বিএএফ-এ স্টাফ ইনস্ট্রাক্টর ছিলেন তিনি। তার গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া থনার গোপালপুর গ্রামে। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ের বাবা।

আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চট্টগ্রাম বোট ক্লাব ১১ নম্বর ঘাটের নতুন পতেঙ্গা টার্মিনালের অপর পাশে কর্ণফুলী থানার এইচএম স্টিল মিল প্রান্ত কর্নফুলী নদীতে তলিয়ে যায়। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর ‘ওয়াইএকে ১৩০’ প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে দুর্ঘটনায় পতিত হয়।

জানা গেছে, আজ সকালে সোয়া ১০টার দিকে জহুরুল হক ঘাঁটি থেকে উড্ডয়ন করে রাশিয়ান প্রশিক্ষণ বিমান ওয়াইএকে-১৩০। এটি আকাশে উড্ডয়নরত অবস্থায় হঠাৎ আগুন ধরে কর্ণফুলী নদীর ওপর বিধ্বস্ত হয়।

ঘটনায় ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, বিমানটির পেছনের অংশে প্রচুর ধোঁয়া বেরিয়ে আগুন ধরে যায়। এসময় বিমানটি বিধ্বস্ত হয়ে নদীতে পড়ে। বিমানটি পড়ে যাওয়ার সময় পাইলট ও কো-পাইলট প্যারাসুটের মাধ্যমে নদীতে অবতরণ করে। নৌবাহিনীর উদ্ধারকারী দল দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের উদ্ধার করে বিএনএস পতেঙ্গা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান স্কোয়াড্রন লিডার আমিম জাওয়াদ।

আরএস/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!