বাঁশখালীর ১১ খুনের ৩৪ সাক্ষীর বিরুদ্ধে সমন, ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ এসপিকে

বাঁশখালীর সাধনপুরে একই পরিবারের ১১ সদস্যকে পুড়িয়ে হত্যা মামলায় ৩৪ সাক্ষীর বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন আদালত। একইসঙ্গে পুলিশ সুপারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরও নির্দেশ দিয়েছেন।

রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম তৃতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এইচএম শফিকুল ইসলামের আদালত এ আদেশ দেন।

এর আগে ২০১৯ সালের ২৩ জুন মামলার বিচার ছয় মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশনা দেন উচ্চ আদালত। এরপর প্রায় চার বছর পেরিয়ে গেলেও সাক্ষীর অভাবে বিচারকাজ ব্যাহত হয়। মামলার প্রায় ২০ বছর পার হলেও বিচার পায়নি বেঁচে যাওয়া পরিবারের একমাত্র সদস্য বিমল শীল।

আরও পড়ুন: বাঁশখালী থানায় বেড়েছে মাদক মামলা, কমেছে ‘ভয়ঙ্কর’ অপরাধ

এ বিষয়ে জেলা পিপি অ্যাডভোকেট ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন, আজ মামলার শুনানির দিন ধার্য ছিল। কিন্তু চার্জশিট অনুযায়ী ৫৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৩ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হলেও বাকি ৩৪ জন সাক্ষী উপস্থিত না হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন আদালত।

পিপি আরও বলেন, সাক্ষীদের উপস্থিতি করতে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০০৩ সালের ১৮ নভেম্বর বাঁশখালী উপজেলার সাধনপুর গ্রামের শীলপাড়ায় তেজেন্দ্র লাল শীলের ঘরের বাইরে দরজায় তালা লাগিয়ে ‘গান পাউডার ছিটিয়ে’ আগুনে পুড়িয়ে নারী-শিশুসহ ১১ জনকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

নিহতরা হলেন- তেজেন্দ্র লাল শীল (৭০), তার স্ত্রী বকুল শীল (৬০), ছেলে অনিল শীল (৪০), অনিলের স্ত্রী স্মৃতি শীল (৩২), অনিলের তিন সন্তান রুমি শীল (১২), সোনিয়া শীল (৭) ও চারদিন বয়সী কার্তিক শীল, তেজেন্দ্র শীলের ভাইয়ের মেয়ে বাবুটি শীল (২৫), প্রসাদি শীল (১৭), অ্যানি শীল (৭) এবং কক্সবাজার থেকে বেড়াতে আসা আত্মীয় দেবেন্দ্র শীল (৭২)।

এ ঘটনায় ২০০৩ সালের ১৯ নভেম্বর মামলার পর সাত তদন্ত কর্মকর্তার হাত ঘুরে অষ্টম তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির চট্টগ্রাম অঞ্চলের সহকারী পুলিশ সুপার হ্লা চিং প্রু ৩৮ জনকে আসামি করে ২০১১ সালের ৯ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। এতে ৫৭ জন সাক্ষীর নামও উল্লেখ করা হয়। এছাড়া একই বছরের ১২ সেপ্টেম্বর ডাকাতির উদ্দেশে অগ্নিসংযোগ, খুন ও লুটতরাজের অভিযোগে ৩৮ আসামির বিরুদ্ধে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।

এদিকে ২০১২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় সম্পত্তি দখলের উদ্দেশে পরিকল্পিত হত্যার নতুন অভিযোগ তুলে রাষ্ট্রপক্ষ। একই বছরের ১৯ এপ্রিল নতুন করে ৩৮ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলায় আসামিদের মধ্যে মাত্র একজন কারাগারে এবং জামিনে আছেন ১৮ জন। বাকি ১৯ আসামি এখনও পলাতক। ২০১২ সালের ১২ মে চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। একই বছরের ২ অক্টোবর মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়। নির্ধারিত সময়ে বিচারকাজ শেষ না হওয়ায় ২০১৩ সালের নভেম্বরে আবারও তৃতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলাটি ফেরত আসে।

আরএস/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!