বছর ঘুরে বছর এলেও আনোয়ারায় প্রতীক্ষার প্রহর শেষ হচ্ছে না ছাত্রলীগের। দীর্ঘ এক যুগ পরও পাওয়া যায়নি উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি। পদের আশায় থাকাদের অনেকেই এখন ব্যস্ত সংসার নিয়ে!
১৯৯৮ সালে বোরহান উদ্দিন চৌধুরী মুরাদকে সভাপতি ও এমএ কাইয়ূম শাহকে সাধারণ সম্পাদক করে আনোয়ারা উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। সেই কমিটি বিলুপ্ত হলে সর্বশেষ ২০০৩ সালে ওসমান গণি রাসেলকে আহ্বায়ক করে ১১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। ২০০৯ সালে সেই আহ্বায়ক কমিটিও বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়।
এরমধ্যে অনেকে পদের আশায় থেকে হারিয়েছেন বয়স। আবার অনেকে মিটিং-মিছিল ছেড়ে বেছে নিয়েছেন ব্যবসা কিংবা চাকরি।
বর্তমানে যারা রাজনীতি করছেন তারা নেতাদের বলয়েই রয়েছেন। এর ফলে দলে বিশৃঙ্খলা ও বির্তকিত ঘটনায় জড়িয়ে পড়ছেন তারা।
আরও পড়ুন: মেয়র রেজাউল প্রধান সমন্বয়ক নন, মাহতাবের নেতৃত্বেই রিভিউ কমিটি—স্পষ্ট জানালেন মাহবুব উল আলম হানিফ
জানা যায়, আনোয়ারা উপজেলা ছাত্রলীগের সর্বশেষ কমিটি গঠন হয়েছিল ২০০৩ সালে। সেবার ওসমান গণি রাসেলকে আহ্বায়ক করে ১১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। ২০০৯ সালে সেটি বিলুপ্ত হলে আর হয়নি কমিটি। এ নিয়ে তৃণমূল পর্যায়ে নেতাকর্মীদের মাঝে হতাশা দেখা দিয়েছে।
এদিকে ২০১৭ সালে দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণার পর প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসে উপজেলায়। পরের বছর উপজেলা কমিটিতে পদপ্রত্যাশী ছাত্রনেতাদের কাছ থেকে জীবনবৃত্তান্ত জমা নেয় জেলা ছাত্রলীগ। কিন্তু একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে তখন সারাদেশের কমিটি গঠন স্থগিত করা হয়। এরপর চার বছরেও কমিটির ঘোষণা আসেনি।
তবে ২২ বছর পর চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে উপজেলা থেকে স্থান পেয়েছেন বেশ কয়েকজন ছাত্রনেতা। এদের মধ্যে অনেকের নেই ছাত্রত্ব, অনেকের বয়সসীমা অতিক্রম করেছে, আবার অনেকে বিবাহিত কিংবা চাকরি নিয়ে ব্যস্ত। এদের অনেকেই মিটিং-মিছিলেও আসেন না বলেও অভিযোগ আছে।
এদিকে দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণার পর সক্রিয় হয়ে ওঠে উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। নতুন কমিটি ঘোষণা হবে— এ প্রত্যাশায় থাকা ছাত্রনেতারা মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করেন। বিভিন্নভাবে তারা নিজেদের অবস্থান জানান দিতে থাকেন। অনেকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য দক্ষিণ জেলা কমিটি বরাবরে জীবনবৃত্তান্তও জমা দেন।
ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক ও সাবেক উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ওসমান গণি রাসেল আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্তের পর আর কমিটি গঠন হয়নি। যেসব ছাত্রনেতা দলের দুঃসময়ে মাঠে ছিলেন একটি পদের আশায়, তাদের অনেকেই এখন নিরাশ হয়ে চাকরি কিংবা ব্যবসা বেছে নিয়েছেন। আবার অনেকে বিয়ে করে সংসার করছেন। আমাদের রাজনৈতিক অভিভাবক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপি আন্তরিক হলে উপজেলা ছাত্রলীগ কমিটি গঠন করা সম্ভব বলে মনে করছি।
আরও পড়ুন: আবারও রক্তাক্ত ৪, আনোয়ারা—কর্ণফুলীতে বেড়েছে দুর্ঘটনা
তিনি আরও বলেন, দলের দুঃসময়ে যেসব ছাত্রনেতা মাঠে ছিল তারাই যেন কমিটিতে স্থান পায়। সেজন্য উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও জেলা ছাত্রলীগকে আন্তরিক হতে হবে।
একই প্রসঙ্গে আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ মালেক বলেন, উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি হওয়াটায় খুবই জরুরি। কমিটি থাকলে সাংগঠনিক কার্যক্রম আরো গতিশীল হবে। কমিটি গঠনে জেলা ছাত্রলীগকে আন্তরিক হতে হবে, তাহলে কমিটি গঠন করা সম্ভব।
যোগাযোগ করা হলে দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আবু তাহের আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, দেশে করোনা মহামারী ও ইউপি নির্বাচনের কারণে কমিটি প্রক্রিয়া স্থগিত ছিল। ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নিয়মিত ছাত্র ও ত্যাগী কর্মীদের দিয়ে ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হবে। আমাদের রাজনৈতিক অভিভাবক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপির পরামর্শে শিগগির আনোয়ারা উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হবে। জমা নেওয়া জীবনবৃত্তান্ত এবং একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও ইউপি নির্বাচনে যারা নৌকার জন্য অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন তাদের দিয়েই কমিটি গঠন করা হবে।
ডিসি