পাঁঠা কিনতে গিয়ে ক্রেতাদেরই উল্টো ‘বলির পাঁঠা’ বানাচ্ছে ইজারাদার

কর্ণফুলীর মইজ্জ্যারটেক সিডিএ আবাসিক মাঠের ইজারাদারে বিরুদ্ধে অতিরিক্ত হাসিল আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। সরকার হাসিল নির্ধারণ করে দিলেও তারা তা মানছেন না। এ অবস্থায় বাড়তি টাকার বোঝা বইতে হচ্ছে মনসা পূজা উপলক্ষে পাঁঠা কিনতে আসা ক্রেতাদের।

রাজীব দাশসহ একাধিক ক্রেতা মইজ্জ্যারটেক সিডিএ আবাসিক মাঠে পাঁঠা ছাগল কিনতে এসে হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন।

আরও পড়ুন: ইজারাদারের দাপট—১২ জনের নৌকায় ৫০ জন, মরণফাঁদে সল্টগোলা ঘাটের যাত্রীরা

তারা বলছেন, গতবছর শতকরা ৫ টাকা হারে পাঠা ছাগলের হাসিল নিয়েছেন ইজারাদার। এখন নেওয়া হচ্ছে শতকরা ৭ থেকে ৮ টাকা হারে। এছাড়া হাসিলের রশিদে আবার টাকার পরিমাণ লেখা থাকলেও ক্রেতার নাম-ঠিকানা ও বিক্রেতার নাম উল্লেখ নেই।

এরকম একটি ৩৪৯৪ নম্বর রশিদে দেখা যায়, বিক্রিত পশুর মোট মূল্য ১৮ হাজার টাকা। বিক্রিত পশুর সংখ্যা ১। হাসিল ৭% হারে ১ হাজার ২৬০ টাকা।

একই হাটের ছাগল ব্যবসায়ী রহমান বলেন, আমি প্রতি হাটে দু-একটি ছাগল কিনি। আবার কিছু লাভ হলেই ছাগল বিক্রি করি। একটি ছাগল কেনাবেচা করতে ৭% হারে হাসিল দিতে হয় এখানে। অথচ শুনেছি ছাগলে সরকার নির্ধারিত হাসিল ৬০ টাকা।

জামালখান থেকে এ হাটে আসেন সঞ্জীব ও রতন। তারা এখান থেকে পাঠাও কিনেন। তাদের কাছ থেকেও ৭% হারে হাসিল নেওয়া হয়েছে বলে আলেকিত চট্টগ্রামকে জানান।

এ বিষয় জানতে চাইলে হাসিল আদায়কারী জানে আলম ও মনির হোসেন ফরহাদ বলেন, হাটের ইজারাদার রয়েছেন আটজন। প্রত্যেক ইজারাদার নিজস্ব লোক দিয়েছেন হাটে। কে কোন দিকে কত টাকা হাসিল আদায় করেন আমরা তা বলতে পারব না। তবে বিষয়টি আমরা ইজারাদারকে জানাচ্ছি। সমাধান হবে।

সরকার নির্ধারিত হাসিল কত জানতে চাইলে তারা বলেন, সেটা ইজারাদার জানেন। আমাকে যা হাসিল আদায় করতে বলা হয়েছে, আমি তাই আদায় করছি।

এ বিষয়ে জানতে পশুর হাটের সহযোগী ইজারাদার সাহাব উদ্দীন ডেকোরেটার্সের মালিকের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে পশুর হাটের কোটি টাকা বকেয়া আদায়, ৪ জনকে জরিমানা

তবে মূল ইজারাদার মেসার্স আব্দুল শুক্কুর এন্ড সন্সের মালিক আব্দুল শুক্কুর বলেন, আসলে বিষয়টি ওরকম নয়। না আসলে বা না বসে কথা বললে সাংবাদিক ভাইয়েরাও প্রকৃত ঘটনা বুঝবেন না। সুতরাং একটু বসে কথা বললে বিষয়টি ভালো হয়। আর যারা ৭% হারে হাসিল আদায় করছেন তাদের শনাক্ত করে আমরা ব্যবস্থা নিব। সাধারণ ক্রেতারা যেন এখানে হয়রানির শিকার না হয় সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ম্যাজিস্ট্রেট পিযুষ কুমার চৌধুরী আলেকিত চট্টগ্রামকে বলেন, ইজারাদারের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত হাসিল আদায়ের অভিযোগ পেয়েছি। সরকারি নীতিমালা লঙ্ঘন করে অতিরিক্ত হাসিল আদায়ের সুযোগ নেই। ঘটনার সত্যতা যাচাই করে আইন অনুযায়ী ওই ইজারাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এসআই/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!