দুদকের মামলায় জেলে ঢুকেই কপাল খুলল সার্ভেয়ারের, বেরিয়েই পদোন্নতি

বাঁশখালীর সার্ভেয়ার মো. আমানাতুন মাওলা জেল থেকে জামিনে এসেই পেয়েছেন পদোন্নতি। সার্ভেয়ার থেকে হয়েছেন ভারপ্রাপ্ত কানুনগো। আবার জেলে যাওয়ার আগে সার্ভেয়ার পদে দুদফা বদলির আদেশ হলে অদৃশ্য শক্তিতে উধাও হয়ে গেছে তা-ও।

এর আগে দুদকের মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন সার্ভেয়ার আমানাতুন মাওলা। গ্রেপ্তারের ১৫ দিনের মাথায় জামিনে এসে সার্ভেয়ার পদে কর্মস্থলে যোগদান করার পাশাপাশি ভারপ্রাপ্ত কানুনগোর দায়িত্বও পালন করায় বাঁশখালীজুড়ে চলছে সমালোচনা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বাঁশখালী উপজেলা ভূমি অফিসে কর্মরত সার্ভেয়ার আমানাতুন মাওলা ১ কোটি ১৩ লাখ ১৪ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের মামলায় জেল খেটে আবারও কর্মস্থলে যোগদান করেছেন। তবে বাঁশখালী উপজেলা অফিসে কানুনগো পদ শূন্য থাকায় তাকে পদোন্নতি দিয়ে ভারপ্রাপ্ত কানুনগো’র দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে।

এর আগে আমানাতুন মাওলার বিরুদ্ধে দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ করেন বাঁশখালীর অসংখ্য মানুষ। এজন্য গত বছরের মার্চ ও ডিসেম্বরে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরীর স্বাক্ষরে কাট্টলী সার্কেল, উপজেলা ভূমি অফিস এবং পতেঙ্গা সার্কেল ভূমি অফিসে দুদফা বদলির আদেশ দেওয়া হয়েছিল।

আরও পড়ুন: ‘টাকা মেরে খেয়ে’ দুদকের তদন্তের মুখে সেই ইউপি চেয়ারম্যান মান্নান

দুদকের পিপি মাহমুদুল হক বলেন, সার্ভেয়ার মো. আমানাতুন মাওলা চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় (এলএ) কর্মরত থাকা অবস্থায় সঙ্গবদ্ধভাবে ১ কোটি ১৩ লাখ টাকা ১৪ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৯ সালে দুদক মামলা দায়ের করে। ওইসময় তাকে বরখাস্ত না করে শাস্তি হিসেবে বাঁশখালী উপজেলা ভূমি অফিসে বদলি করা হয়। ওই মামলায় গত ২০ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা জজ জেবুন্নেছার আদালতে জামিন নিতে গেলে জামিন না মঞ্জুর হওয়ায় তিনি জেলহাজতে যান। এর ১০ দিন পর ৭ মার্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে আবারো বাঁশখালীতে সার্ভেয়ার পদে যোগদান করেছেন।

বাঁশখালী উপজেলার জহিরুল ইসলাম, আলী নবী, দেবেন্দ্র দাশ, রবিউল আলম, শ্রীজয় দাশসহ বেশ কয়েকজনের অভিযোগ, বাঁশখালী ওপর দিয়ে যাওয়া গ্যাস লাইনের ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণের টাকা এখনো তারা উঠাতে পারেনি। তাদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে ব্যর্থ হলে ভুয়া প্রতিবেদন দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। আদালতে দায়ের করা সাধারণ মানুষের আবেদনে ভুয়া প্রতিবেদন দেওয়া হয়।

যোগাযোগ করা হলে বাঁশখালী উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার ও ভারপ্রাপ্ত কানুনগো মো. আমানাতুন মাওলা আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, আমার দুর্নীতির মামলার ঝামেলা শেষ হয়েছে। তাই আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে কর্মস্থলে যোগদান করেছি।

একই প্রসঙ্গে বাঁশখালী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) খোন্দকার মাহমুদুল হাসান বলেন, কারো বদলি কিংবা যোগদান সবকিছু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশে হয়। আমার কিছু বলার নেই।

ইউবি/এসআই

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!