ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করেছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি)। ৪০ টাকা কেজিতে একজন ভোক্তাকে সর্বোচ্চ আড়াইকেজি পেঁয়াজ ১০০ টাকায় দেওয়া হচ্ছে। টিসিবির কার্ডধারী পরিবরারের পাশাপাশি সব ভোক্তাই এ পেঁয়াজ কিনতে পারবেন।
বুধবার (৩ এপ্রিল) সকাল থেকে নগরের চকবাজার, আন্দরকিল্লা, দেওয়ানবাজার ও চট্টেশ্বরী রোডে টিসিবির পেঁয়াজ বিক্রি কার্যক্রম চোখে পড়ে। এসময় ট্রাকের সামনে নারী-পুরুষের লম্বা লাইনও দেখা যায়। একজন ভোক্তাকে ১০০ টাকায় আড়াই কেজি পেঁয়াজ দেওয়া হয়।
এদিকে বিক্রির প্রথম দিনে ভোক্তাদের মাঝে ভালোই সাড়া ফেলে বাজারের চেয়ে কম দামে বিক্রি করা টিসিবির পেঁয়াজ। এছাড়া বাজারে বিক্রি হওয়া পেঁয়াজের দামেও এর প্রভাব পড়েছে। অনেক দোকানি ও ভ্রাম্যমাণ পেঁয়াজ বিক্রেতা দাম কমাতে বাধ্য হয়েছেন।
আরও পড়ুন : চট্টগ্রামে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়ানোর কষ্ট ভুলিয়ে দিচ্ছে চিনি—খেজুর
অন্যদিকে চকবাজার এলাকায় টিসিবির পেঁয়াজের ট্রাক আসার পরপরই আশাপাশের দোকানি ও ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতারা ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি শুরু করেন। আবার কয়েকজন বিক্রেতা আড়াই কেজি পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১১০ টাকায় বেচতে থাকেন। তবে এরপরও টিসিবির পেঁয়াজ কিনতে ট্রাকের সামনে তৈরি হয় মানুষের জটলা।
টিসিবি বলছে, ভারত থেকে ১ হাজার ৬৫০ টন পেঁয়াজ দেশে এসে পৌঁছেছে। চট্টগ্রামে বিক্রির জন্য ৪১৫ টন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। নগরের সব ওয়ার্ডেই পেঁয়াজ বিক্রি করা হয়েছে। আজ (বুধবার) শুরু হওয়া এ কার্যক্রম চলবে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত। প্রতি ট্রাকে ৩ থেকে ৫ টন পেঁয়াজ বিক্রির জন্য দেওয়া হচ্ছে।
চকবাজারে ট্রাকের সামনে লাইনে দাঁড়ানো মো. জসিম বলেন, বাজারের চেয়ে কেজিতে ১৫-২০ টাকা কমে পেঁয়াজ বিক্রি করা হচ্ছে। সেজন্য লাইনে দাঁড়ালাম। এখানে আড়াই কেজি পেঁয়াজ ১০০ টাকা। তবে একজনকে ৫ কেজি করে দিলে ভালো হতো। এ ধরনের কার্যক্রম রোজার শুরু থেকে নিলে সাধারণ মানুষ বেশি উপকৃত হতো। বাজারও নিয়ন্ত্রণে থাকত।
পেঁয়াজ হাতে দাঁড়ানো গৃহিণী শিপ্রা মহাজন বলেন, যাওয়ার পথে দেখলাম ট্রাকে ৪০ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। বাজারের চেয়ে কম দামে পাওয়ায় কিনে নিলাম। বাজারে এখনও ৫৫-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ কার্যক্রম আরও আগে থেকে শুরু করার প্রয়োজন ছিল।
আরও পড়ুন : টিসিবির পণ্য—গাড়ি চলে না, চলে না
চকবাজারের পেঁয়াজ বিক্রয়কারী টিসিবির ডিলার ও মজিদ স্টোরের স্বত্বাধিকারী শেখ মো. নাজমুল আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, নগরের চকবাজার, আন্দরকিল্লা ও পাহাড়তলী পয়েন্টে আজ পেঁয়াজ বিক্রি করেছি। প্রথম দিনে ভোক্তাদের ভালোই সাড়া পড়েছে। প্রতি ট্রাকে ৫ টন করে পেঁয়াজ ছিল।
তিনি বলেন, আমরা যে পেঁয়াজ ৪০ টাকায় বিক্রি করছি সেটি বাইরের বাজারে ৬০-৬৫ টাকা। সেই হিসাবে একজন ভোক্তার কেজিতে ২০ টাকা করে সাশ্রয় হচ্ছে।
যোগাযোগ করা হলে টিসিবি চট্টগ্রাম অঞ্চলের অফিস প্রধান মো. শফিকুল ইসলাম আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, ঈদ উপলক্ষে আজ ১ নম্বর ওয়ার্ড ছাড়া বাকি সব ওয়ার্ডে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু হয়েছে। প্রতি ট্রাকে ৩ থেকে ৫ টন করে পেঁয়াজ দেওয়া হয়েছে, প্রতিকেজি ৪০ টাকা দরে। একজন ভোক্তাকে সর্বোচ্চ আড়াই কেজি দেওয়া হবে। এ কার্যক্রম আগামীকাল পর্যন্ত চলবে।
টিসিবির পেঁয়াজ বাজারের দামে প্রভাব ফেলছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। বাজার ঘুরলেই বোঝা যাবে। টিসিবির দামের কাছাকাছি ব্যবসায়ীরা এখন বিক্রি শুরু করেছেন। ভারত থেকে মাত্র ১৬৫০ টন পেঁয়াজ দেশে এসে পৌঁছেছে। তাতেই বাজারে কী অবস্থা দেখেন। টিসিবি আনা মানেই ওরা আতঙ্কে থাকে।
আলোকিত চট্টগ্রাম