টার্গেট তরুণী—গোপনে ভিডিও করে ফাঁসাতে গিয়ে ফেঁসে গেল ২ যুবক

শুরুতে পরিচিত তরুণীদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করতেন তারা। এরপর তৈরি করতেন বন্ধুত্বের সম্পর্ক। পরে বিয়ের প্রলোভনে ফেলতেন মায়াজালে। একপর্যায়ে ভিডিও কলে কথা বলে ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি এবং ভিডিও ধারণ করতেন কৌশলে। এসব ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে করতেন ব্ল্যাকমেইল।

একজন কিংবা দুজন নয়, এভাবে প্রায় অর্ধশতাধিক তরুণীর সঙ্গে একই কায়দায় প্রতারণা করে হাতিয়ে নিয়েছেন মোটা অঙ্কের টাকা। তবে এবার আর শেষ রক্ষা হয়নি। ভুক্তভোগী এক নারীর অভিযোগের পর আটক হয়েছেন প্রতারকচক্রের মূলহোতাসহ দুজন।

বুধবার (১৫ মার্চ) কক্সবাজারের পেকুয়া থানার চৌমুহনী বাজার এলাকা থেকে তাদের আটক করে র‌্যাব-৭।

আটকরা হলেন- কক্সবাজার জেলার পেকুয়া রাজাখালী এলাকার আমিনুল হকের ছেলে মো. জহির (৩২) ও একই থানা এলাকার মিয়ারপাড়ার মো. শওকতের ছেলে মো. সরোয়ার (২৪)।

আরও পড়ুন: তরুণীর ফাঁদ—ধরা পড়ল যুবকের সর্বস্ব কেড়ে নেওয়া চক্রের ৩

বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) বিকেল ৫টার দিকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-৭ এর উপ-অধিনায়ক মেজর মো. রেজওয়ানুর রহমান।

এসময় তিনি বলেন, চক্রের মূলহোতা মো. জহির একজন প্রবাসী। তিনি সৌদি আরবে শুটকির ব্যবসা করতেন। প্রায় বছর দুয়েক পরপর দেশে আসতেন। এরপর পরিচিত তরুণীদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে তাদের সঙ্গে সম্পর্কে তৈরি করতেন। এরপর ভিডিও কলে কথা বলার একপর্যায়ে বিভিন্ন অজুহাতে তাদের ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি এবং ভিডিও ধারণ করতেন। পরে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে তাদের ব্ল্যাকমেইল করতেন। এভাবে অর্ধশতাধিক তরুণীর কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছন মোটা অঙ্কের টাকা।

মেজর মো. রেজওয়ানুর রহমান বলেন, অভিযোগকারী ভুক্তভোগী একজন এনজিও কর্মী। তিনি চকরিয়ায় বসবাস করতেন। চাকরির সুবাদে থাকতেন পেকুয়ায়। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে জহিরের সঙ্গে মোবাইলে তার পরিচয় হয়। এসময় জহির নিজেকে সেনাবাহিনীর ওয়ারেন্ট অফিসার এবং অবিবাহিত বলে পরিচয় দেন। সেসময় ভুক্তভোগী নারীকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে পরিবারকে দেখানোর কথা বলে কয়েকটি ছবি সংগ্রহ করেন। পরে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি তাদের মধ্যে ভিডিও কলে কথা হয়। ওইদিন তাকে ভয় দেখিয়ে স্পর্শকাতর অঙ্গ দেখাতে বাধ্য করেন। এরপর এসব ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করেন সোহেল।

মেজর বলেন, আসামি জহির অন্য এক নারী সহকর্মীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তার ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও ধারণ করেছিলেন। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ওেই নারীর কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। সামাজিক সম্মানের ভয়ে ওই ভিকটিম আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছিলেন।

মেজর আরও বলেন, আসামি জহিরের মোবাইল থেকে আনুমানিক অর্ধশতাধিক তরুণীর অন্তরঙ্গ ছবি ও ভিডিও পাওয়া গেছে। অপর আসামি মো. সরোয়ারের মোবাইল থেকে শুধু অভিযোগকারী ভিকটিমের ছবি ও ভিডিও পাওয়া গেছে। আসামিদের পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

এনইউএস/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!