নগরের ১৬ নম্বর চকবাজার ওয়ার্ডের চকবাজার কাঁচাবাজারে মালামাল ওজনে কারচুপির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। বিশেষ করে মাংসের দোকানে ওজনে কম দেওয়ার অভিযোগ সবচেয়ে বেশি। ভুক্তভোগী ক্রেতারা নগরপিতার কাছে লিখিত অভিযোগও করেছেন এ বিষয়ে।
এবার সেই কারচুপি ঠেকানোর উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। বাজারের প্রবেশমুখে চসিকের উদ্যোগে বসানো হয়েছে ডিজিটাল পাল্লা। ফলে বাজারে আসা ক্রেতারা বিনামূল্যে পণ্যের ওজন করতে পারবেন। যদি ক্রয় করা পণ্যের ওজনে গড়মিল হয় তাহলে অভিযোগ জানাতে পারবেন ব্যানারে দেওয়া মুঠোফোন নম্বরে।
শনিবার (৪ মে) বেলা ১২টায় সরেজমিন চকবাজারে কাঁচাবাজারে দেখা গেছে, বাজারের প্রবেশমুখে একটি ব্যানার লাগানো রয়েছে। ব্যানারের পাশে বসানো হয়েছে ডিজিটাল পাল্লা। এসময় বাজারের চারপাশে ঘুরে ঘুরে হ্যান্ডমাইকে এক ব্যক্তিকে প্রচার চালাতে দেখা যায়।
চসিকের ব্যানারে লেখা রয়েছে— চকবাজার কাঁচাবাজারে আগত ক্রেতা সাধারণের অবগতির জন্য জানানো যাইতেছে যে, কাঁচাবাজার থেকে ক্রয়কৃত মালামালে ওজনে কোনোরকম সন্দেহের উদ্রেক হইলে আপনারা সাথে সাথে চসিক কর্তৃক স্থাপিত ডিজিটাল পাল্লায় বিনামূল্যে পরিমাপ করে নিন। যে কোন অভিযোগের বিষয়ে ০১৮৮৯-৪০৭৭৭৭ নম্বরে যোগাযোগ করুন।
আরও পড়ুন: দখলের পেটে ফুটপাত—চকবাজারে যানজট, কষ্টের শেষ নেই মানুষের
জানা গেছে, এর আগে চসিক মেয়রের কাছে ওজনের কারচুপির বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ক্রেতারা। এরপর বাজারে বিনামূল্যে ডিজিটাল পাল্লা বসানোর উদ্যোগে নেওয়া হয়।
এদিকে চকবাজার কাঁচাবাজারে দীর্ঘদিন পর ওজনে কারচুপি ঠেকানোর উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও ক্রেতারা।
বাজার করতে আসা দেবরাজ চৌধুরী নামে এক ক্রেতা বলেন, এ উদ্যোগ বাজার চালুর পর থেকে নেওয়া উচিত ছিল। কারণ এখানে ওজনের কারচুপি নিত্যনৈমত্তিক ঘটনা। এ নিয়ে অনেক ক্রেতার সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। উল্টো দোকানিরা ক্রেতাদের নাজেহাল করার চেষ্টা করে। যাক দীর্ঘদিন পর হলেও চসিকের টনক নড়েছে এবং কারচুপি ঠেকাতে যে উদ্যোগ নিয়েছে সেটিকে সাধুবাদ জানাই। তবে অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে এ উদ্যোগ বানচাল করতে না পারে সেদিকে সংশ্লিষ্টদের নজরদারি করতে হবে।
অপরদিকে চকবাজারের দোকানি মো. ইয়াছিন বলেন, বাজারে সবচেয়ে বেশি ওজনে কারচুপি হয় মুরগির দোকানে। প্রায় প্রতিটি মুরগিতে দেড়শ থেকে দুশ গ্রাম ওজনে কম দেওয়া হয়। আমিও একাধিকবার নিয়ে ঠকেছি। এখন অন্য জায়গা থেকে কিনি। এবার বাজারে ডিজিটাল পাল্লা বসানোর কারণে কারচুপি কমবে বলে মনে করি।
চকবাজার কাঁচাবাজারের নিয়মিত ক্রেতা গৃহিনী হুরে জান্নাত শামীমা বলেন, সবচেয়ে বেশি ওজনে ঠকানো হয় নারীদের। অনেক নারী এখানে বাজার করতে আসে। প্রায়সময় দেখতে পাই দোকানির সঙ্গে ক্রেতার বাকবিতণ্ডা ওজন নিয়ে। চসিকের পক্ষ থেকে ডিজিটাল পাল্লা বসানোর কারণে কিছুটা হলেও কারচুপি কমে আসবে। তবে এই উদ্যোগ আরও আগে নিলে ভালো হতো।
আরবি/আলোকিত চট্টগ্রাম