রাত হলেই বঙ্গোপসাগরের জাহাজের তেলে চোরের হাত, সক্রিয় হারুন—আশিক সিন্ডিকেট

রাত হলেই বঙ্গোপসাগরে শুরু হয় জাহাজ থেকে তেল চুরির উৎসব। পাইপ দিয়ে সুকৌশলে চুরি করা হয় হাজার হাজার লিটার তেল। এরপর সেই চোরাই তেল বিক্রি করা হয় খোলা বাজারে। প্রতিদিনের এই তেল চুরিতে জড়িত শক্তিশালী সিন্ডিকেটের রাঘববোয়ালরা।

মূলত জাহাজের ক্রুদের ম্যানেজ করেই চলে তেল চুরি। আর চুরি যাওয়া এই তেল দেখানো হয় সিস্টেম লস হিসেবে। যার সরাসরি প্রভাব পড়ে ভোজ্যতেলের বাজারে। চুরি যাওয়া এই তেল সিস্টেম লস দেখিয়ে দাম বাড়িয়ে দেন আমদানিকারকরা। আবার এভাবে প্রতিদিন তেল চুরি হওয়ায় সরকারও হারাচ্ছে বিপুল রাজস্ব।

এদিকে বিদেশ থেকে আনা অপরিশোধিত ভোজ্যতেল বড় জাহাজ থেকে ছোট ট্যাংকারে পাচারের সময় ধরা পড়ে একটি চক্র। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোর রাতে পতেঙ্গা থানার ১২ নম্বর ঘাট এলাকায় চোরচক্রটিকে হাতেনাতে ধরে ফেলে নৌ পুলিশ। তানিশা এন্টারপ্রাইজ নামে একটি লাইটারেজ থেকে পাইপ দিয়ে ভাউজারে তেল চুরির সময় হাতেনাতে তাদের আটক করা হয়।

আরও পড়ুন: ৮৪ দিনের শিশুটির নিঃশ্বাস কেড়ে নিল হাসপাতালের অবহেলা, মা—বাবাকে উল্টো চোরের মতো মারধর

এ ঘটনায় পাঁচ শ্রমিকের সঙ্গে আটক করা হয় লাইটারেজ জাহাজের সাত কর্মীকেও। ওই তেল শবনম-৪ নামে একটি অয়েল ট্যাংকার থেকে লাইটারেজ জাহাজটিতে নেওয়া হচ্ছিল।

পুলিশ বলছে, ওই লাইটারেজ জাহাজের মালিক হারুন উর রশিদ, আশিক কামাল ও জাহিদ হাসান এই চোরচক্রের সঙ্গে সরাসরি জড়িত।

অভিযানে নৌ পুলিশ তানিশা এন্টারপ্রাইজের লাইটারেজ জাহাজটির পাশাপাশি আরও দুটি তেলের ভাউজার জব্দ করে।

এ ঘটনায় আটক পাঁচ লাইটারেজ শ্রমিক হলেন— দুলাল ব্যাপারী (৫৫), হুমায়ুন কবির (৪৫), ফিরোজ ব্যাপারী (২৭), আব্দুর রহমান (২২) ও মো. শাকিল (২১)। বাকি সাতজন তানিশা এন্টারপ্রাইজের ওই লাইটারেজ জাহাজের কর্মী। জাহাজের কর্মী ও শ্রমিকরা পরস্পর যোগসাজশে তেল চৃরি করছিল।

আরও পড়ুন: ‘চোরের ১০ দিন’—চট্টগ্রামে পথে পথে সিটি করপোরেশনের গাড়ির তেল চুরি

এদিকে এ ঘটনায় আটক ১২ জনসহ মোট ১৪ জনের বিরুদ্ধে পতেঙ্গা থানায় মামলা করেছে পুলিশ। লাইটারেজ জাহাজ তানিশা এন্টারপ্রাইজের মালিক হারুনর উর রশিদকেও মামলায় আসামি করা হয়েছে। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে পালানো লাইটারেজ জাহাজ শ্রমিক জসীম উদ্দিন নামে অপর একজনকেও আসামি করা হয়েছে।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে নৌ পুলিশের সদরঘাট থানার ওসি এবিএম মিজানুর রহমান আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই চোরচক্র ট্যাংকার থেকে তেল চুরি করে আসছিল। তেল চুরির ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে পতেঙ্গা থানায় মামলা করেছে। মামলায় তানিশা এন্টারপ্রাইজ লাইটারেজ জাহাজের মালিকসহ আটকদের আসামি করা হয়েছে।

আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!