৮৪ দিনের শিশুটির নিঃশ্বাস কেড়ে নিল হাসপাতালের অবহেলা, মা—বাবাকে উল্টো চোরের মতো মারধর

নগরের বেসরকারি হাসপাতাল ইউএসটিসিতে চিকিৎসকের অবহেলায় তিন মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছেন স্বজনরা। বিষয়টি নিয়ে দুই পক্ষের উত্তেজনার মধ্যে শিশুর মা ও খালার ওপর ইন্টার্ন চিকিৎসকরা হামলা চালায়।

হাসপাতালের ভিডিও ফুটেজে হামলার বিষয়টি উঠে আসে। তবে উল্টো শিশুর পরিবারের বিরুদ্ধেই হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে খুলশী থানায় অভিযোগ দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে পুলিশ শিশুর স্বজনদের সরিয়ে নেওয়ার সময় পুলিশের সামনেও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা রোগীর স্বজনদের ওপর চড়াও হয়।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার (২৫ ফ্রেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১২টায় অনুরাজ চক্রবর্তী নামে এক শিশু চিকিৎসাধীন অবস্থায় নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। শিশুর বাবার নাম রাজীব চক্রবর্তী। আকবর শাহ থানার সিটি গেইটের আলীর হাট এলাকার তাদের বাসা।

আরও পড়ুন: শিশুর মৃত্যু—মা ও শিশু হাসপাতালে, অবহেলার আঙুলে ডাক্তার—নার্স

নিহত শিশুর খালা মাসি জানান, শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় শিশুকে বারবার এনআইসিউতে নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করা হয়। এ সময় চিকিৎসকরা মোবাইলে গেমস খেলায় ব্যস্ত। ফলে মৃত্যু হয় শিশু অনুরাজের। এ ঘটনায় বিচার চাইতে গেলে স্বজনদের মারধর করেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।

শিশুর বাবা রাজীব চক্রবর্তী জানান, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত এই শিশুকে গত ২২ ফেব্রুয়ারি আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে এনআইসিউতে সিট খালি না থাকায় স্বজনরা ইউএসটিসিতে এনে এনআইসিইউতে ভর্তি করেন। ২৪ ফ্রেব্রুয়ারি রাউন্ডে আসা প্রফেসর এম সাদেক এই শিশুকে জেনারেল ওয়ার্ডে রাখার জন্য লিখে দেন।

রাতে হঠাৎ শিশুর শ্বাসকষ্ট শুরু হলে শিশুর বাবা রাজীব দায়িত্বরত চিকিৎসক ও অনান্যদের শিশুর অবস্থা জানান। কিন্তু দায়িত্বরত চিকিৎসক তখন মোবাইলে গেমস খেলায় ব্যস্ত ছিলেন। অনেক অনুরোধের পর সময়ক্ষেপণ করে তারা৷ পরে শিশুটিকে এনআইসিইউতে নেওয়া হলেও মৃত্যু ঘটে।

রাজীব চক্রবর্তী আরও বলেন, মৃত্যুর বিষয়টি গোপন রেখে শিশুকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে চিকিৎসকরা চাপ সৃষ্টি করে তাদের ওপর। এতে তাদের সন্দেহ হয়। পরে জানানো হয় শিশুটি মারা গেছে।

আরও পড়ুন: উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শিশুর মৃত্যু—অবহেলার অভিযোগ ডাক্তার-নার্সের বিরুদ্ধে

হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. আসাদুজ্জামান বলেন, আমরা এমন গাফিলতি করিনি। রোগীর স্বজনরা জানানোর সাথে সাথে শিশুকে চিকিৎসা দিলেও মৃত্যু হয়।

ঘটনার পর হাসপাতালে যান সিএমপির উপপুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) আরাফাতুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা স্বজনদের আগ্রহ অনুযায়ী অ্যাম্বুলেন্সে লাশ বহনে সহায়তা করি। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ চাকমা বলেন, পুলিশ এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। যদি কেউ কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আমরা সে অনুযায়ী তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবো।

এসি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!