রাউজানে খুনের আসামিকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে গণপিটুনিতে মেরে ফেলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। হত্যা, কাজে বাধা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় অজ্ঞাতদের আসামি করে পৃথক দুটি মামলা করে পুলিশ।
সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাতে উপপরিদর্শক (এসআই) আজিজুল হাকিম বাদী হয়ে মামলা দুটি করেন।
এদিকে গ্রেপ্তার সুইচিংমং মারমা (২৪) ও অংথুইমং মারমাকে (২৫) আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে আছুমং মারমা (২৬) ও ঊক্যথোয়াই মারমাকে (১৯) গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়।
আজ (১২ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাউজান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুল্লাহ আল হারুন।
জানা গেছে, আজ সকালে উদ্ধার করা কলেজছাত্রের দেহাবশেষ ও নিহত উমংচিং মারমার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গে পাঠায় পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে।
আরও পড়ুন : চট্টগ্রামে কলেজছাত্র খুন, পুলিশের গাড়ি আটকে অপহরণকারীকে পিটিয়ে মারল জনতা
এর আগে সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) গহীন অরণ্য থেকে শিবলী সাদিক হৃদয়ে লাশের কঙ্কাল ও পড়নের কাপড় উদ্ধার করে পুলিশ। ১৩ দিন আগে (২৮ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে তাকে অপহরণ করে মারমা যুবকরা। অপহরণকারীদের মুক্তিপণের ২ লাখ দিয়েও জীবিত ফিরতে পারেনি হৃদয়।
এদিন সকাল ১১টার দিকে গ্রেপ্তার প্রধান আসামি উমংচিং মারমাকে নিয়ে ফিরে আসার সময় কদলপুর আশরফ শাহ মাজারের সামনে উত্তেজিত জনতা পুলিশের গাড়ি আটকে আসামিকে ছিনিয়ে নেয়। এরপর গণপিটুনি দিলে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান উমংচিং মারমা।
এ বিষয়ে রাউজান থানার অফিসার ইনচার্জ আবদুল্লাহ আল হারুন আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, অপহৃত কলেজছাত্রের দেহাবশেষ উদ্ধার করে ফেরার পথে বিক্ষুব্ধ স্বজন ও এলাকাবাসীর গণপিটুনিতে প্রধান আসামি উমংচিং মারমার মৃত্যু, কাজে বাধা, হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় অজ্ঞাতদের আসামি করে পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে। এছাড়া কলেজছাত্র শিবলী সাদিক হৃদয় অপহরণ ও হত্যায় জড়িত গ্রেপ্তার চারজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে নিহত শিবলী সাদিক হৃদয়ের বাড়িতে আজ দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, খাটের ওপর পড়ে আছে বই-খাতা। আহাজারি করছেন তার মা-বাবা। ছেলের স্বপ্নের কথা তুলে ধরতে গিয়ে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন বাবা মো. শফি।
অন্যদিকে হৃদয়কে অপহরণ করে নির্মমভাবে খুনের ঘটনায় শোকস্তব্ধ কলেজের শিক্ষক ও সহপাঠীরা। দুষ্কৃতিকারীদের কারণে হৃদয় একাদশ শ্রেণির চূড়ান্ত পরীক্ষায় বসতে পারেনি উল্লেখ করে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন কদলপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. ওমর ফারুক।
এসএ/আরবি