চট্টগ্রামে মধ্যরাতে দুদক কর্মকর্তাকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে গেল পুলিশ, থানায় মৃত্যু

চান্দগাঁও থানা পুলিশ হেফাজতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক উপপরিচালক সৈয়দ মো. শহিদুল্লাহর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।

মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে ভুয়া একটি মামলায় এএসআই ইউসুফ আলী ও সোহেল জনসম্মুখে টানাহেঁচড়াসহ অপমান করে গ্রেপ্তার করেন সৈয়দ মো. শহিদুল্লাহকে। এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ রয়েছে।

পরিবারের দাবি, অপমান সইতে না পেরে তিনি হার্ট অ্যাটাক করেন। এছাড়া তাকে ইনহেলার নেওয়ার সুযোগ না দেওয়ায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি।

পুলিশ বলছে, সৈয়দ মো. শহিদুল্লাহ অসুস্থ বোধ করলে তার পরিবারকে থানায় ডেকে আনা হয় এবং দ্রুত পার্কভিউ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, থানায় অবস্থান করা তার ভাইকে পুলিশ ডেকে বলেন, শহিদুল্লাহকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে। এসময় তাকে বেসরকারি হাসপাতাল পার্কভিউ নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তিনি আরও আধঘণ্টা আগে মারা গেছেন বলে জানান। পরে মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

আরও পড়ুন : চান্দগাঁওয়ে ইটের গাঁথুনি দিলেই দিতে হয় চাঁদা, ইশারায় চলে থানা পুলিশও

এ বিষয়ে নিহতের শ্যালক কায়ছার বলেন, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে চকবাজার থেকে বাসায় ফেরার পথে চেয়ারম্যানঘাটা এলাকায় এএসআই ইউসুফ আলী ও সোহেল সিভিল ড্রেসে এসে শহিদ ভাইকে কলার ধরে টানাহেঁচড়া শুরু করেন। এসময় তিনি বলেন, আমাকে খবর পাঠালে থানায় যেতাম। পরে পুলিশ সদস্যরা তাকে থানায় নিয়ে যান। পুলিশ নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি সুস্থ ছিলেন।

তিনি বলেন, এর আগে এক ব্যক্তি শহিদ ভাইকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে বলে খবর দিলে আমি দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় শহিদ ভাই বলেন, আমি কায়ছারকে দেখিনি।

ওই মামলায় আমার নামেও ওয়ারেন্ট রয়েছে। তার কথা শুনে আমিও সতর্ক অবস্থানে চলে গেলাম। থানায় নিয়ে যাওয়ার আধঘণ্টার মধ্যে তিনি মুমূর্ষু হয়ে পড়েন।

তিনি আরও বলেন, রনি আক্তার তানিয়া নামে অজ্ঞাত এক নারীর মাধ্যমে কথিত এক যুবলীগ নেতা আমিসহ আমার দুলাভাইয়ের বিরুদ্ধে হুমকি-ধমকি ও মারধরের মিথ্যা মামলা করান। সেই মামলায় গতকাল (মঙ্গলবার) ওয়ারেন্টও জারি হয়। আজ (বুধবার) সকালে চট্টগ্রাম ষষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরিফুল ইসলামের আদালত থেকে জামিন নিয়ে আসি।

যোগাযোগ করা হলে চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খায়রুল ইসলাম আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, মঙ্গলবার রাতে একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে সৈয়দ মো. শহিদুল্লাহ নামে সাবেক এক সরকারি কর্মকর্তাকে থানায় আনা হয়। আমার রুমে বসে থাকা অবস্থায় তিনি ইনহেলার ও মেডিসিন গ্রহণ করেন। পরে তিনি বেশি অসুস্থ বোধ করলে তার পরিবারকে থানায় ডেকে আনা হয় এবং দ্রুত পার্কভিউ হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। সেখানে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

আরএস/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!