চট্টগ্রামে নির্বাচনের পরও ঝুলছে ব্যানার—পোস্টার

শেষ হয়েছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচন শেষে হলেও এখনও পুরোপুরি ব্যানার-পোস্টারমুক্ত হয়নি বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম। নগরের রাস্তাঘাট, অলিগলি, দোকানপাট ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে এখনও ঝুলছে ব্যানার, পোস্টার ও প্রার্থীর প্রতীক। এতে শ্রীহীন হয়ে পড়েছে নগর। এসব প্রচারসামগ্রী অপসারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদ্যোগও ঢিলেঢালা।

মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) নগরের বিভিন্ন ওয়ার্ড এলাকা ঘুরে এসব দৃশ্য দেখা গেছে। কিছু কিছু এলাকার রাস্তার ব্যানার সরানো হলেও রয়ে গেছে অলিগলিতে।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন বলছে, সীমিতসংখ্যক লোকবল দিয়ে নিয়মিত দায়িত্বের পাশাপাশি নির্বাচনী ব্যানার-পোস্টার অপসারণের কাজ ৪১টি ওয়ার্ডে শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে অনেক এলাকা ব্যানার-পোস্টারমুক্ত করা হয়েছে। আগামী এক-দুদিনের মধ্যে নগর পুরোপুরি নির্বাচনী ব্যানার-পোস্টারমুক্ত হবে।

সরেজমিন দেখা গেছে, বিভিন্ন প্রার্থীর ব্যানার-পোস্টার এখনও ঝুলছে। নগরের চকবাজার,  কাপাসগোলা, গুলজার, চন্দনপুরা, আন্দরকিল্লা, রাজাপুকুর লেইন, টেরিবাজার, হাজারী লেইন, কে সি রোড, লালদীঘি, মোমিন রোড, চেরাগী পাহাড় ও জামালখান এলাকায় পোস্টারের ছড়াছড়ি। কোথাও পোস্টার ছিঁড়ে ঝুলছে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে, কোথাও শুধু রশি ঝুলছে। কোথাও বড় বড় ব্যানার ও প্রার্থীর প্রতীক রাস্তার ওপর ঝুলছে। এছাড়া কোথাও পোস্টার মাটিতে পড়ে আছে।

আরও পড়ুন : দক্ষিণে চমক, নগরেও—চট্টগ্রামের ১৬ আসনে বিজয়ী যাঁরা

চকবাজারের বাসিন্দা মো. আমিন বলেন, নির্বাচনের পর দুদিন পেরিয়ে গেলেও হলেও এখন এলাকা ব্যানার-পোস্টারের জঞ্জালমুক্ত হয়নি। চকবাজার বাজারের সামনে এখনও প্রার্থীর ডামি প্রতীক ঝুলছে। এসব একেবারে দৃষ্টিকটু লাগছে। দ্রুত এগুলো অপসারণ করে নগরের সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনা জরুরি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চকবাজার ওয়ার্ডের পরিচ্ছন্ন বিভাগের সুপারভাইজার হাসানুজ্জামান সায়েম আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, নির্দেশনা অনুযায়ী নির্বাচনের পরদিন দুপুর থেকে আমরা এলাকায় নির্বাচনী ব্যানার-পোস্টার অপসারণে কাজ শুরু করেছি। শুরুতে রাস্তারগুলো অপসারণ করা হচ্ছে। এরপর অলিগলি পরিষ্কার করা হবে। শিগগির চকবাজার এলাকা নির্বাচনী ব্যানার-পোস্টারমুক্ত হবে।

রাজাপুকুর লেইনের বাসিন্দা প্রবীর নাথ বলেন, প্রার্থীর পোস্টার বা প্রচারসামগ্রী নির্বাচনের আগে বা নির্বাচনের দিন পর্যন্ত ঠিক ছিল। কিন্তু এখন এসব নগরের সৌন্দর্যহানি করছে। তাই এগুলো দ্রুত অপসারণ করা দরকার।

চেরাগীর এক দোকানি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলেন, সিটি করপোরেশন থেকে কোনো লোকজন আসেনি। নিজেরা সরাতে গেলেও অনেকে মনে করবে আমরা বিপক্ষের লোক। তাই ভয়ে কোনো কিছু করার সাহস পাই না।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ হলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার লতিফুল হক কাজমী আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, নির্বাচনের শেষ হওয়ার পরদিন অর্থাৎ সোমবার দুপুর থেকে নগরের ৪১টি ওয়ার্ডের নির্বাচনী ব্যানার-পোস্টার অপসারণের কাজ শুরু করেছি। তবে আমাদের সীমিতসংখ্যক লোকবল দিয়ে নিয়মিত দায়িত্বের পাশাপাশি এ কাজ করতে হচ্ছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন এলাকার মূল রাস্তা পরিষ্কার করা হয়েছে। আশা করছি দু-একদিনের মধ্যে নগর পুরোপুরি নির্বাচনী ব্যানার-পোস্টারমুক্ত হবে।

তিনি বলেন, আসলে নির্বাচনী বিধিমালা অনুযায়ী নির্বাচনের পর নির্বাচনী ব্যানার-পোস্টার অপসারণের দায়িত্ব প্রার্থীর নিজের। কিন্তু আমরা সেদিকে তাকিয়ে বসে না থেকে নগরকে সুন্দর রাখতে নির্বাচনী ব্যানার-পোস্টার অপসারণ করছি। কোথাও কোনো ব্যানার-পোস্টার ও প্রার্থীর ডামি প্রতীকও থাকবে না।

আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!