চট্টগ্রামে আইনজীবীকে খুন করে লুকিয়ে থাকা স্ত্রী র‌্যাবের জালে

আইনজীবী ওমর ফারুক বাপ্পী হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত স্ত্রী রাশেদা বেগমকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-৭।

রোববার (৩০ জুলাই) আলোকিত চট্টগ্রামকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুর কাদের মজুমদার।

এর আগে বুধবার (২৬ জুলাই) চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালত স্ত্রী রাশেদাসহ তাঁর বন্ধু হুমায়ুন রশিদকে মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখার রায় দেন। একইসঙ্গে আল আমিন, আকবর হোসেন প্রকাশ রুবেল প্রকাশ সাদ্দাম (২৩) এবং মো. পারভেজ প্রকাশ আলীকে (২৪) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ২ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।

মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২৫ নভেম্বর নগরের চকবাজার থানার কে বি আমান আলী রোডের বড় মিয়া মসজিদের সামনে একটি ভবনের নিচতলার বাসা থেকে হাত-পা ও মুখ টেপ দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় বাপ্পীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় তার গোপনাঙ্গ কাটা অবস্থায় পাওয়া যায়। এ ঘটনার পর বাপ্পীর বাবা আলী আহমেদ বাদী হয়ে চকবাজার থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

আরও পড়ুন : চট্টগ্রামে আইনজীবীর গলায় ফাঁস—স্ত্রী বলছে ‘আত্মহনন’, পুলিশের সন্দেহ ‘খুন’

খুনের দুদিন পর ২৭ নভেম্বর কুমিল্লা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গা থেকে রাশেদা বেগমসহ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পিবিআইয়ের তদন্তে বেরিয়ে আসে খুনের নেপথ্যের কাহিনী।

মরদেহ উদ্ধারের পর বাড়ির কেয়ারটেকার জানান, ঘটনার কয়েকদিন আগে ওই নারী (রাশেদা) তার স্বামীসহ থাকবেন বলে বাসা ভাড়া নেন। ঘটনার রাতে ওই বাসায় থাকতে যান বাপ্পী। পরে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মামলা তদন্তে জানা গেছে, ইয়াবা পাচারকারী দেলোয়ারের এক মামলার সূত্র ধরে রাশেদা বেগমের সঙ্গে আইনজীবী বাপ্পীর সম্পর্ক হয়। একপর্যায়ে তারা গোপনে বিয়েও করেন। কিন্তু হত্যাকাণ্ডের আগ পর্যন্ত বাপ্পী অবিবাহিত ছিলেন বলে জানতেন আত্মীয়-স্বজনরা।

বাপ্পীকে খুনের কোনো পরিকল্পনা ছিল না বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানিয়েছিলেন।

এর আগে ২ লাখ টাকা কাবিননামায় রাশেদাকে বিয়ে করেন বাপ্পী। কাবিননামা ২ লাখ থেকে বাড়িয়ে ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা করার পরিকল্পনা করেন রাশেদা। পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে বন্ধু হুমায়ুনের মাধ্যমে চার যুবককে ভাড়া করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী খালি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিতে গিয়ে রাশেদা ওই পাঁচ যুবকের সহযোগিতায় বাপ্পীকে শ্বাসরোধে খুন করেন।

২০১৮ সালে ৫ এপ্রিল রাশেদাসহ ছয় আসামির বিরুদ্ধে আদালতকে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। এরপর ২০২০ সালে ১৫ অক্টোবর অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষ ২৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য উপস্থাপন করেন। বুধবার রায় ঘোষণা করেন আদালত।

আরএস/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!