চকরিয়ায় চেয়ারম্যানের চাঁদা দাবি—মামলা নিতে থানাকে নির্দেশ

অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে টাকা ছিনতাই, মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে খালি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর ও ৮০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদীসহ তিনজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

সোমবার (১৩ জুন) দুপুরে চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাহিদ হোসাইন এ আদেশ দেন।

মামলার বাদী ফরিদুল আলম চকরিয়া উপজেলার লক্ষ্যারচর ইউনিয়নের সিকদারপাড়ার আবদুচ ছালামের ছেলে।

এ বিষয়ে বাদীর আইনজীবী মো. শাহ আলম বলেন, চকরিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী (৫২), উপজেলার উত্তর লক্ষ্যারচরের হাবিবুর রহমান (৪৫) ও লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি ইউনিয়নের হাটখোলা মোড়া এলাকার নাজেম উদ্দিনের (৪৮) বিরুদ্ধে আদালতে ফৌজদারি মামলার আবেদন করা হয়েছিল। দীর্ঘ শুনানি এবং বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড শেষে আদালত চকরিয়া থানার ওসিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে থানায় মামলা নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

আরও পড়ুন: চকরিয়ায় ৬ লাশ—আমৃত্যু জেলেই থাকতে হবে সেই ঘাতক চালককে

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, লামা উপজেলার ফাইতংয়ে ফরিদুলের সঙ্গে যৌথভাবে ইটভাটার ব্যবসা করেন হাবিবুর রহমান ও নাজেম উদ্দিন। ইটভাটায় ফরিদুলের অংশ জোরপূর্বক দখলে নিতে চেষ্টা করছিলেন হাবিবুর ও নাজেম। গত ২৬ মে বিকেলে ব্যবসার কথা বলে ফরিদুলকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে যান উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল করিম। সেখানে ফজলুল করিম, হাবিবুর রহমান ও নাজেম উদ্দিন মিলে তাকে মারধর করেন। পরে অস্ত্রের মুখে ফরিদুলকে জিম্মি করে ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়। একপর্যায়ে ১০০ টাকার তিনটি খালি স্ট্যাম্পে ফরিদুলের স্বাক্ষর আদায় করে ৮০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন চেয়ারম্যান। এসময় চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ওইদিন রাত পর্যন্ত ফরিদুলকে আটকে রাখা হয়। পরে ইটভাটা থেকে ২৪ লাখ টাকা মূল্যের ৩ লাখ ইট লুট করে নিয়ে যান চেয়ারম্যান।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চকরিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, ‘ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের বিষয়টি লক্ষ্যারচর ইউপি চেয়ারম্যানের মধ্যস্থতায় মীমাংসা হয়েছে। এরপর আমি কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচনে নৌকা প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় যাই। এই সুযোগে আমার দলের এক জনপ্রতিনিধির ইন্ধনে মীমাংসিত বিষয়ে ফরিদুল মামলাটি করেছেন। বাদীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি কয়েক দিনের মধ্যে আপসনামা দেবেন।’

যোগাযোগ করা হলে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চন্দন কুমার চক্রবর্তী বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদীসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা নিতে নির্দেশ দেওয়া একটি ফৌজদারি দরখাস্ত আজ মঙ্গলবার থানায় পৌঁছেছে। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এমকেডি/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!