চট্টগ্রামে হঠাৎ ঘরে ঘরে জ্বর সর্দি কাশি, এন্টিজেন টেস্টের পরামর্শ ডাক্তারের

চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কমলেও হঠাৎ ঘরে ঘরে জ্বর-সর্দি-কাশির প্রকোপ বেড়েছে। এসব রোগে আক্রান্ত হচ্ছে একই পরিবারের প্রায় সবাই। এছাড়া কারো ক্ষেত্রে ডেঙ্গুর প্রকোপও ধরা পড়ছে পরীক্ষা-নিরীক্ষায়। আবার অনেকেই ভাইরাল ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হচ্ছেন। তবে জ্বর-সর্দিতে আক্রান্ত হলে এন্টিজেন টেস্ট করার পরামর্শ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, দেশের আবহাওয়ায় গত কয়েক সপ্তাহ ধরে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দিনে গরম, আবার হঠাৎ বৃষ্টি এবং রাতে হাল্কা ঠাণ্ডা পড়ছে। ফলে জ্বর-সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছেন সব বয়সী মানুষ। শহর থেকে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কমে আসলেও এখন ঘরে ঘরে মৌসুমি জ্বর-সর্দি-কাশির প্রকোপ চলছে। এসব রোগ থাকছে তিন থেকে অন্তত সাতদিন এবং ক্ষেত্রবিশেষে ৮ থেকে ১০ দিন পর্যন্ত। জ্বর কমলেও শুকনো কাশি, দুর্বলতায় ভুগছেন অনেকে। অনেকের গলাব্যাথা হচ্ছে। জ্বর হলে আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

আরও পড়ুন: জ্বর—সর্দিতে অবহেলা নয়, ৩ সপ্তাহের বেশি কাশি থাকলেই ভয়

চিকিৎসকরা জানান, আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে জ্বরের মাত্রা ১০২ থেকে ১০৫ ফারেনহাইট পর্যন্ত। সেই সঙ্গে গায়ে, হাত ও পায়ে ব্যাথা। সর্দি, কাশির মতো উপসর্গ। জ্বর তিন থেকে চারদিন থাকছে। জ্বর কমে গেলেও সর্দি-কাশির সঙ্গে থাকছে শারীরিক দুর্বলতা। প্রায় দশদিন পর্যন্ত ক্লান্তিভাব। বাচ্চা থেকে বয়স্ক, সবাই এই মৌসুমে জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে।

বেশ কিছুদিন ধরে জ্বর, সর্দি-কাশিতে ভুগছেন নগরের বাহির সিগন্যাল এলাকার বাসিন্দা মো. রাসেল। তার সঙ্গে আক্রান্ত বাসার সবাই। সবাই ঘরে থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন।

জানতে চাইলে তিনি আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, গত শনিবার অফিস থেকে ঘরে ফিরে হঠাৎ শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়ে। রাত বাড়তেই জ্বর-সর্দি ও কাশির সঙ্গে শরীর ব্যথা দেখা দেয়। দ্রুত টেলিফোনে পরিচিত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করি। একদিন পর বৃহস্পতিবার আমার ছেলের জ্বর-সর্দি-কাশি, বমি ও ডায়রিয়া শুরু হয়। একইসঙ্গে স্ত্রীও জ্বরে আক্রান্ত হয়। আমার শারীরিক অবস্থার কিছুটা পরিবর্তন হলেও বাকি দুজন এখনও সুস্থ হয়ে উঠেনি।

নগরের জামালখান এলাকার বাসিন্দা উজ্জ্বল দাশ আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, গত সপ্তাহের প্রথমদিকে বাবার জ্বর হয়। তিনি সুস্থ হওয়ার পর ক্রমান্বয়ে পরিবারের সব সদস্য জ্বরে আক্রান্ত হয়। ছোট ভাইয়ের জ্বরের সঙ্গে ডায়রিয়া। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সবাই চিকিৎসা নিয়েছি।

আরও পড়ুন: ঘরে ঘরে জ্বর সর্দি কাশি—করণীয় জানালেন বিশেষজ্ঞরা

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক সেখ ফজলে রাব্বি আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, ঋতু পরিবর্তনের কারণে এখন ঘরে ঘরে ভাইরাস জ্বর হচ্ছে। কারো জ্বর-সর্দি হলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। সাধারণ ফ্লুর যে চিকিৎসা সেটা নিতে হবে। পরিবারের সুস্থ সদস্যদের কাছ থেকে যথাসম্ভব আইসোলেশন বজায় রাখতে হবে। আমরা যেভাবে কোভিডে স্বাস্থ্য সচেতন ছিলাম একইভাবে আমাদের সচেতন থাকতে হবে। অন্যথায় পরিবারে অন্যরাও আক্রন্ত হতে পারে।

অ্যান্টিজেন টেস্ট করার অনুরোধ জানিয়ে চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ই্লিয়াছ হোসেন আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে সাধারণ ফ্লুর পাশাপাশি কোভিড রোগীর সংখ্যাও এখন বাড়ছে। এটাকে শুধু ভাইরাল জ্বর বলা ঠিক হবে না।

তিনি আরও বলেন, যাদের সর্দি-কাশি-জ্বর ও গলা ব্যাথা আছে তাদের কোভিড টেস্ট করানো জরুরি। যেহেতু টেস্ট ছাড়া কোনটি ভাইরাল জ্বর, কোনটি ডেঙ্গু জ্বর বা কোনটি করোনা বলা যায় না, সেহেতু জ্বর হলে সবাইকে আইশোলেসনে যেতে হবে এবং চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে নিয়মিত ওষুধ খেতে হবে।

আরবি/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!