খুন-ডাকাতি মামলার আসামি এবার রক্ত ঝরাল বউয়ের

চন্দনাইশ উপজেলার জাহেদা বেগম (৩৬) ভালোবেসে বিয়ে করেন সাতবাড়িয়া আরিফশাহপাড়ার মামুনুর রশিদকে (৪০)। বিয়ের কিছুদিন পর জাহেদার ওপর শুরু হয় অমানুষিক নির্যাতন। সংসারজীবনের দুদশক পার হলেও কমেনি অত্যাচারের মাত্রা। আবার স্ত্রীর অগোচরে নতুন সংসার শুরু করেন মামুন। এরপর থেকে জাহেদার ওপর আরও বাড়ে নির্যাতনের মাত্রা। স্কুলছাত্র ফারুক আহমেদ অন্তর হত্যা মামলার প্রধান আসামি এই মামুনুর রশিদ। এছাড়া তার বিরুদ্ধে রয়েছে ডাকাতি মামলাও।

শনিবার (১২ আগস্ট) সন্ধ্যায় চন্দনাইশ থানার সাতবাড়িয়া আরিফশাহপাড়া এলাকার নিজ ঘরে স্ত্রী জাহেদাকে ফের বেধড়ক পেটান মামুন। এসময় লাঠির আঘাতে মাথা ফেটে রক্তাক্ত হন জাহেদা। এ ঘটনার পর থানায় অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী।

অভিযুক্ত স্বামী মামুনুর রশিদ একই এলাকার মৃত নুরু ইসলামের ছেলে। তিনি নগরের কোতোয়ালী থানার ফিরিঙ্গিবাজার এলাকার আল মক্কা ফার্মের স্বত্বাধিকারী।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০০৩ সালে ভালোবেসে মামুন ও জাহেদার বিয়ের বছরখানেক পর পারিবারিক নানা বিষয় নিয়ে স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন স্বামী মামুন। তাদের সংসারে দুমেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। সন্তানদেরও নির্যাতন করেন মামুন।

আরও পড়ুন: সাবানঘাটায় লুকিয়ে ছিল খুন-ডাকাতির ১৬ মামলার আসামি

২০২৩ সালে জাহেদার অজান্তে মামুন দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এরপর থেকে যৌতুকের দাবিতে জাহেদাকে প্রায়সময় মারধর করেন। জাহেদার মা-বাবা মারা যাওয়ার পর বিভিন্ন সময় ভাইদের কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা এনে তুলে দেন স্বামীর হাতে।

অভিযোগে আরও জানা যায়, যৌতুকের দাবিতে গত শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে জাহেদাকে মারধর শুরু করেন মামুন। একপর্যায়ে মাথা ফেটে রক্তাক্ত হন জাহেদা। পরে প্রতিবেশীরা এসে তাকে উদ্ধার করে দোহাজারী ৩১ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। এ ঘটনা স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানালে তারা আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দেন।

এ বিষয়ে জাহেদা বেগমের বড় ভাই নজরুল আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, শনিবার এইচএসসি পরীক্ষার্থী মেয়েকে মারধর করেন মামুন। এসময় আমার বোন জাহেদাকে কপাল ফাটিয়ে দেওয়া হয়। পরে তাদের ঘর থেকে বের করে দেয়। বর্তমানে তারা আমাদের বাড়িতে আছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৫ সালের ৩১ জানুয়ারি একই এলাকার অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ফারুক আহমেদ অন্তর হত্যা মামলার প্রধান আসামি জাহেদার স্বামী মামুনুর রশিদ। স্কুলছাত্রকে জবাই করে হত্যার ঘটনায় একই বছরের ১ ফেব্রুয়ারি চন্দনাইশ থানায় হত্যা মামলা হয়। এছাড়া মামুনুরের বিরুদ্ধে ডাকাতি মামলাও রয়েছে।

যোগাযোগ করা হলে চন্দনাইশ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ার হোসেন আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, পারিবারিক কলহের বিষয়গুলো তদন্ত করে মামলা নেওয়া হয়। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।

আরএস/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!