আতিকুর রহমান রনি (৩৬)। তিনি আন্তর্জাতিক কিডনি ও মানবদেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পাচারকারী দলের সদস্য। বাংলাদেশে তার অন্যতম সহযোগী মো. আলী ডালিম (৩৫)।
দেশে দুজনে মিলে আগে অসহায় মানুষদের চিহ্নিত করেন। তারপর শুরু হয় ভারতে পাচারের পালা। অর্থের লোক দেখিয়ে তারা মানুষদের কিডনি দেওয়ার জন্য রাজি করান। তাদের প্রলোভনের ফাঁদে কেউ পা দিলেই সোনায় সোহাগা।
তারপর শুরু হয় রোগীর সঙ্গে ডোনারের রক্ত, কিডনি ও লিভার ক্রস চেক। অল্প টাকার বিনিময়ে ডোনারকে ভারতে পাঠিয়ে দেন। আর রোগীর কাছ থেকে হাতিয়ে নেন ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা। ভারতে তাদের প্রতিনিধির নাম শাহীন।
বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) এ চক্রের তিন সদস্যকে আটক করেছে র্যাব।
আরও পড়ুন : পাচার—৪৭০ ভরি স্বর্ণ ছিল বুড়োর কাছে, ধরল বিজিবি
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিকাল ৫টায় নগরের খুলশীর ইন্ডিয়ান ভিসা অফিসের সামনে থেকে তাদের আটক করে র্যাব-৭ এর একটি দল।
রনি ও ডালিমের সঙ্গে আটক অপর ব্যক্তির নাম মো. আলম হোসেন (৩৮)।
জানা যায়, আটক চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে অসহায় মানুষদের চিহ্নিত করে লোভনীয় টাকার অফার দেখিয়ে ভারতে পাচার করে আসছিল। কিছুদিন আগে চক্রটির সঙ্গে সাইফুল ইসলাম নামের এক লোকের পরিচয় হয়। একপর্যায়ে তারা সাইফুল ইসলামকে ৪ লাখ ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে কিডনি বিক্রি করতে বলেন। কিডনি দিতে হলে ভারতে যেতে হবে বলে জানান। তাদের কথায় রাজি হয়ে সাইফুল ইসলাম পাসপোর্ট ও ভিসা লাগানোর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
গোপন তথ্যের ভিত্তিতে চক্রটির অবস্থান শনাক্ত করে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব।
বিষয়টি নিশ্চিত করে র্যাব-৭ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) নিয়াজ মো. চপল আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, কিডনি ও লিভার পাচারচক্রের একটি দল খুলশী ইন্ডিয়া ভিসা অফিসের সামনে অবস্থান করছে—এমন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে তিনজনকে আটক করি। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন তথ্য পাওয়া যায়।
তিনি আরও বলেন, আটকদের মধ্যে রনি আন্তর্জাতিক কিডনি ও লিভার বিক্রিচক্রের সদস্য। বাংলাদেশে তাদের মূল সহযোগী ডালিম। তারা অসহায় লোকদের শনাক্ত করে চার থেকে সাড়ে চার লাখ টাকায় চুক্তি করে ভারতে পাচার করে আসছিল। এখন পর্যন্ত ৩০ থেকে ৪০ জন লোক ভারতে পাচার করেছে চক্রটি। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ প্রক্রিয়া শেষে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।