কর্ণফুলীতে প্রভাবশালী পরিবারকে রাস্তা করে দিতে ‘উচ্ছেদ অভিযান’ নাটক

কর্ণফুলীর বড় উঠানে অনেক অবৈধ স্থাপনা থাকলেও টার্গেট ছিল শুধু একটি মুরগির ফার্ম। কারণ সেই ফার্ম গুড়িয়ে দিলেই যে সুবিধা দেওয়া যাবে প্রভাবশালী এক পরিবারকে! তাই কোনো নোটিশ না দিয়েই পুলিশের বহর নিয়ে হঠাৎ হাজির উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। ‘উচ্ছেদ অভিযানের’ নামে মঞ্চস্থ হলো নাটক। যেখানে অন্য সব অবৈধ স্থাপনা অক্ষত রেখেই মুহূর্তেই গুড়িয়ে দেওয়া হলো সেই ফার্ম।

এমনই অভিযোগ পাওয়া গেল কর্ণফুলীর ইউএনও মামুনুর রশিদের বিরুদ্ধে। ইউএনওর এমন কাণ্ডে হতবাক ক্ষতিগ্রস্ত মুরগির খামারের মালিক আব্দুল হালিম। অপরদিকে কোনো নোটিশ ছাড়াই ইউএনওর এমন ভাংচুরে ক্ষুব্ধ স্থানীয় লোকজনও।

বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টার দিকে কর্ণফুলী থানাধীন ৮ নম্বর বড় উঠান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আরও পড়ুন: বাতাসে উড়ছে বিষ, মানুষের শরীরে রোগের আঘাত কর্ণফুলীতে

ভুক্তভোগী আব্দুল হালিম বলেন, আমাদের এলাকায় সরকারি খাস জায়গায় বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে উঠেছে। ঘরবাড়ি থেকে শুরু করে রয়েছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও। আমার সবকিছুই নিজস্ব সম্পদের ওপর গড়ে উঠলেও শুধু মুরগির ফার্মের ৮ শতক জায়গা ছিল খাস।

তিনি বলেন, এখানে কবরস্থানের নামে জরিপ হওয়া ৬ একর ৭৯ শতক জায়গা থাকলেও নজরে এলো শুধু ৮ শতক জায়গা। শত শত শতক খাস জায়গাজুড়ে অবৈধ স্থাপনা অক্ষত রেখে গুড়িয়ে দেওয়া হলো শুধু আমার মুরগির ফার্মটি।

হালিম অভিযোগ করে বলেন, আমার পাশে এক প্রভাবশালীর বাড়ির রাস্তা করে দিতেই এটি করা হয়েছে। তাই অন্য সব স্থাপনা অক্ষত রেখেই গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে শুধু আমার মুরগির ফার্ম। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এটি করা হয়েছে।

এদিকে এভাবে হঠাৎ পুলিশ নিয়ে উচ্ছেদের ঘটনায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় লোকজন। একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ পুলিশ নিয়ে হাজির হন ইউএনও মামুনুর রশিদ। খাস জায়গা দখলমুক্ত অভিযানের নামে এখানে নাটক মঞ্চস্থ করা হয়েছে। এটি এমন এক অভিযান যেখানে শুধু একটি মুরগির ফার্ম উচ্ছেদ করা হয়েছে। অথচ এর পাশেই বিশাল এলাকাজুড়ে সরকারি খাস জমিজুড়ে গড়ে উঠেছে অবৈধ স্থাপনা। এমন অভিযানের পেছনে মূল উদ্দেশ্য কী তা খতিয়ে দেখা জরুরি।

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে ইউএনও মামুনুর রশিদ আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, আমি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মুরগির খামার উচ্ছেদ করিনি। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া।

উচ্ছেদ করার আগে খামার মালিককে কোনো নোটিশ দিয়েছেন কি-না জিজ্ঞেস করা হলে তিনি প্রতিবেদককে অফিসে যাওয়ার অনুরোধ করেন। মুঠোফোনে তিনি কোনো কথা বলবেন না বলেও সাফ জানিয়ে দেন।

আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!