টার্গেট প্রবাসীরাই—খুন করে লুট, ওঁৎ পেতে থাকে অপরাধী চক্র

অপরাধী চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা সবাই আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্য।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যাত্রীবাহী মাইক্রোবাসে চালক ও যাত্রী সেজে ডাকাতি করতো তারা। তবে তাদের প্রধান টার্গেট ছিল প্রবাসীরা।

ডাকাত দলের সদস্যরা হলেন౼ মো. শাহ আলম আকন (৩২), মো. আবুল কালাম (৪৭), মো. জাকির হোসেন ওরফে সাঈদ ওরফে তৌহিদ (৩৬), মো. আল আমিন (২৯), মো. মিজানুর রহমান ওরফে টান মিয়া (৫৩) এবং মো. নাহিদুল ইসলাম ওরফে হারুন (৩১)।

বুধবার গভীর রাতে গোয়েন্দা পুলিশ পাহাড়তলী ও আকবরশাহ থানা পুলিশ যৌথ অভিযানে অলংকার মোড় এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে।

আরও পড়ুন: টার্গেট করেছে সাইবার অপরাধীরা, ক্রোম ব্রাউজার ব্যবহারকারীর জন্য গুগলের সতর্কবার্তা

এ সময় মাইক্রোবাসসহ তাদের কাছ থেকে হাতুড়ি, স্ক্রু ড্রাইভার, দুটি টিপ ছুরি, গামছা, ১০টি মোবাইল ফোন, একটি পাসপোর্ট এবং ভিসার কপি জব্দ করা হয়।

গ্রেপ্তার আসামিদের বিষয়ে বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) বেলা ১২টায় নগরের দামপাড়া পুলিশ লাইনে সংবাদ সম্মেলন করে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানায়, দুবাই প্রবাসী হোসেন মাস্টার গত ১৯ ডিসেম্বর দুপুর ৩টায় জোরারগঞ্জ যাওয়ার জন্য অলংকার বাসস্ট্যান্ডে অপক্ষো করছিলেন। এ সময় একটি মাইক্রোবাস তাকে ১০০ টাকায় গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার কথা বললে তিনি উঠে পড়েন। মাইক্রোটিতে আরো চার যাত্রী ছিলেন। কিছুদূর যাওয়ার পর চার যাত্রী হাতুড়ি এবং স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে তার ওপর হামলা করে। তার কাছ থেকে নগদ ১০ হাজার টাকা, দুটি স্বর্ণের আংটি, মোবাইল ফোন ও পাসপোর্ট ছিনিয়ে নেয় তারা।

নির্যাতনে অসুস্থ হয়ে পড়তে হোসেন মাস্টারকে চট্টগ্রাম-ঢাকা মহাসড়কের কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রামের উত্তর বেতিয়ারায় ফেলে দেয়। এরপর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থার তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় মামলা হলে পাহাড়তলী ও আকবর শাহ থানা এবং গোয়েন্দা পুলিশ অভিযানে নামে।

অভিযানে প্রথমে ডাকাত দলের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের তথ্যমতে বাকি দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

আরও পড়ুন: ৭ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রে কপাল পুড়ল ৭ অপরাধীর

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডাকাত দলের সদস্যরা জানায়, বরিশাল এলাকা থেকে তারা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যাত্রী ও চালক সেজে প্রবাসীদের টার্গেট করে মাইক্রোবাসে তুলে দেয়। এরপর একপর্যায়ে হাতুড়ি, স্ক্রু ড্রাইভার, টিপ ছুরি দিয়ে নির্মমভাবে আঘাত করে নগদ টাকা, মূল্যবান জিনিসপত্রসহ পাসপোর্ট ছিনিয়ে নেয়। ছিনতাই শেষে নির্জন স্থানে ভুক্তভোগীদের ফেলে দেয়।

ডাকাত দলের সদস্যদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন জেলায় একাধিক দস্যুতা ও ডাকাতি মামলা রয়েছে। এদের মধ্যে মো.আবুল কালামের বিরুদ্ধে নগরের কোতয়ালী থানা এবং খুলনার খালিশপুর থানা এলাকায় বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে স্বর্ণের দোকান লুট, হালিশহরে ব্যাংক লুটসহ অসংখ্য ডাকাতির মামলা রয়েছে।

অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (বন্দর) নোবেল চাকমা বলেন, মিরসরাইয়ে যাওয়ার পথে ডাকাত দলের এই চক্রের কবলে পড়ে প্রাণ হারান এক ব্যক্তি। ওই মামলার তদন্তে নেমে চক্রের সদস্যদের শনাক্ত করে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চক্রে ১০ থেকে ১২ সদস্য আছে। তারা ছিনতাই-ডাকাতির উদ্দেশে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মাইক্রোবাস নিয়ে ঘোরাঘুরি করে। সুযোগ বুঝে যাত্রী তুলে জিম্মি করে ছিনতাই করে।

আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!