স্ত্রীর গোপনাঙ্গে ভাতের মাড় ঢেলে দেয় স্বামী, শিশুকে বালিশ চাপা

যৌতুকের জন্য নিজের সন্তানকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যাচেষ্টা করেছেন আরফাতুল ইসলাম মোরশেদ নামের এক ব্যক্তি।

এ ঘটনা ঘটেছে নগরের খুলশী থানার মতিঝর্ণা মাছবাজার এলাকার ইদু কন্ট্রাক্টরের বাড়ি এলাকায়।

এছাড়া যৌতুকের জন্য স্ত্রীর গোপনাঙ্গে ভাতের মাড় ঢেলে দেন মোরশেদ। এ ঘটনায় তাঁর স্ত্রী নুরজাহান আক্তার কলি বাদি হয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন আদালতে মামলা করেছেন।

মামলার আসামিরা হলেন− স্বামী আরফাতুল ইসলাম মোরশেদ (২২), শাশুড়ি মিনারা বেগম (৪০), শ্বশুর মো. কাউসার (৫০), দেবর মো. তারেক (১৮) ও খালা শাশুড়ি রীনা বেগম (৩৫)। আসামিরা খুলশী থানার মতিঝর্ণা এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন। তবে তাদের গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাছিরনগরে।

আরও পড়ুন : যৌতুক চেয়ে স্ত্রীকে মেরে রক্তাক্ত, থানায় গেল স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ২ অক্টোবর আরফাতুল ইসলাম মোরশেদের সঙ্গে বিয়ে হয় নুরজাহান আক্তার কলির। বিয়ের পর শ্বশুর, শাশুড়ি, দেবর ও খালা শাশুড়ি মিলে মোটরসাইকেল ও ১ লাখ টাকার জন্য কলিকে নির্যাতন করতে থাকে। ২০২১ সালের ১ জুন পরিবারের সকলকে সন্তানসম্ভবা হওয়ার খবর দেন কলি। এ সময় উল্টো নির্যাতন জুটে কলির কপালে। জরুরি পরিষেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করলে খুলশী থানা পুলিশ এসে উদ্ধার করে কলিকে।

পরে কলির অভিযোগের ভিত্তিতে খুলশী থানার এসআই রেজাউল করিমসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বৈঠকে এ ঘটনার সমাধান হয়। মোরশেদও নির্যাতন করবেন না মর্মে মুচলেকা দেন। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই আবারো পুরোনো চেহারায় ফিরে যান মোরশেদ ও তার পরিবার। এরপর সন্তান জন্ম দিলে নির্যাতনের মাত্রা আরো বেড়ে যায়। এমনকি ৪ অক্টোবর সকালে কলির গোপনাঙ্গে গরম ভাতের মাড় ঢেলে দেন মোরশেদ। ওইদিন নির্যাতনের একপর্যায়ে কলির কাছ থেকে ২ মাস বয়সী সন্তানকে কেড়ে নিয়ে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যার চেষ্টা করেন মোরশেদ। এ সময় কলি চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন ৯৯৯-এ ফোন করলে পুলিশ এসে কলি ও তাঁর সন্তানকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করান।

মামলার বাদি নুরজাহান আক্তার কলি আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, বিয়ের পর থেকে মোটরসাইকেল ও ১ লাখ টাকার জন্য স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন নির্যাতন করতে থাকে। সন্তান জন্মের পর নির্যাতন আরো বেড়ে যায়। ঘটনার দিন আমাকে মারধর করে আমার ২ মাস বয়সী শিশুকে হত্যার উদ্দেশ্যে বালিশ চাপা দেয় মোরশেদ। এ ঘটনার বিচার চেয়ে আমি মামলা করেছি।

বাদির আইনজীবী গোলাম মওলা মুরাদ বলেন, কলি এতিম। সমাজের গণ্যমান্য লোকেরা মিলে তাঁর সঙ্গে মোরশেদের বিয়ে দেন। কিন্তু মোরশেদ ছিলেন বেকার। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য মোরশেদ ও তাঁর পরিবারের লোকজন কলিকে নির্যাতন করতে থাকেন। ৪ অক্টোবর কলিকে নির্যাতনের একপর্যায়ে তাঁর শিশুসন্তানকেও হত্যার উদ্দেশ্যে বালিশ চাপা দেন তিনি। এ সময় কলির চিৎকারে লোকজন এগিয়ে এসে পুলিশের খবর দিলে তারা কলি ও তাঁর সন্তানকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। আমরা চাই আর কোনো সন্তান ও নারীর জীবনে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা না ঘটুক।

সিএম/ডিসি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!