মিরসরাইয়ের আহত সাবেক ইউপি সদস্য আবুল কাশেম পাঁচদিন লড়ে শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কাছে হার মানলেন।
সোমবার (৩১ জানুয়ারি) রাত ৩ টায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (চমেক) আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
আবুল হাশেম সাহেরখালী ইউনিয়ন পরিষদের ছয়বার সাধারণ সদস্য (মেম্বার) ছিলেন।
আরও পড়ুন : কাদামাটিতে রক্তাক্ত মেম্বার—চারদিনে ৩ অপারেশনেও ফিরেনি জ্ঞান
এ ঘটনায় সোমবার রাতে আবুল কাশেমের স্ত্রী বিবি ফাতেমা বাদি হয়ে সাহেরখালী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য বেলালকে ১ নম্বর আসামি করে ছয়জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৫-৬ জনের নামে মিরসরাই থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় অভিযুক্ত বেলালের ছেলে ফাহাদ, নজরুল ও সিরাজুল ইসলাম নামে তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
এর আগে বুধবার (২৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টা থেকে নিখোঁজ হন আবুল হাশেম। চার ঘণ্টা পর রাত ১০টার দিকে উপজেলার দক্ষিণ মঘাদিয়া ঘোনা এলাকার খালের কাদামাটি থেকে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তার শরীরে একাধিক ছুরিকাঘাত করা হয়। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে চমেক ভর্তি করানো হয়। হাসাপাতালে ৩ বার অপারেশনের পরও তার শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। রোববার থেকে তিনি লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। সোমবার রাত ৩টায় চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এলাকাবাসী ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ২৬ জানুয়ারি বিকালে মায়ানী ইউনিয়নের আনন্দবাজারে যান আবুল কাশেম। সন্ধ্যা থেকে হঠাৎ তিনি নিখোঁজ হন। ফোনেও তাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে রাত ১০টার দিকে মঘাদিয়া খালের পাশে কাদার মধ্যে ছুরিকাহত অবস্থায় তাকে পাওয়া যায়। সেখান থেকে উদ্ধার করে প্রথমে মিরসরাই উপজেলা সদরের একটি বেসরকারি হাসপাতাল এবং পরে অবস্থার অবনতি হলে চমেক হাসপাতালে তাকে ভর্তি করানো হয়।
আরও পড়ুন : খালপাড়ে কাদামাটিতে পড়ে ছিলেন ‘নিখোঁজ’ মেম্বার, পেটে-পিঠে ছুরিকাঘাত
আবুল কাশেমের ছেলে বদরুদৌজা তারেক বলেন, হাসপাতালে বাবাকে নিয়ে রীতিমতো যুদ্ধ করেছি। শুধু যেন বাবা বেঁচে থাকেন। হামলার পর মারা যাওয়ার আগ পর্যন্ত বাবার মুখ থেকে কোনো কথা শুনতে পাইনি। ৩ বার অপারেশন হয়েছে। তারপরও বাবাকে বাঁচাতে পারিনি। সোমবার গভীর রাতে আমাদের এতিম করে বাবা দুনিয়া ছেড়ে চলে গেছেন।
তারেক আরও বলেন, আমার বাবা সারাজীবন মানুষের জন্য নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন। শেষ বয়সে সন্ত্রাসীরা আমার বাবাকে চিরতরে শেষ করে দিয়েছে। আমি খুনি বেলালসহ জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
যোগাযোগ করা হলে মিরসরাই থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. অলি উল্ল্যাহ আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, হামলার ঘটনায় সোমবার মিরসরাই থানায় একটি মামলা হয়েছে। আবুল কাশেম মারা যাওয়ায় তা এখন হত্যা মামলা হবে। ইতোমধ্যে মামলায় অভিযুক্ত ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। অন্যদের আটকের চেষ্টা চলছে।
আবুল কাশেমের লাশ চমেক হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। লাশের ময়নাতদন্তের পর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে বলে জানান তিনি।