‘পুলিশের ওপর হামলা’ মসজিদের মাইকে ডেকে—লোক জড়ো করে

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার উপকূলীয় ইউনিয়ন মগনামা মুহুরীপাড়া গ্রামে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে একদল সন্ত্রাসী। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।

মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) সকালে ইউপি চেয়ারম্যান ওয়াসিমের ভাই এনায়েত উল্লাহ ও তার মামাতো ভাই আরফাতের ওপর হামলার ঘটনায় পুলিশ আসামি ধরতে গেলে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় গ্রামের কিছু সন্ত্রাসী মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে পুলিশের ওপর হামলার উস্কানি দেয়। এরপর মুহুরীপাড়া গ্রামের একদল সন্ত্রাসী পুলিশের উপর হামলা চালায়। এতে পেকুয়া থানার কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

দুপুর ২টার দিকে কক্সবাজার পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

আরও পড়ুন: রেলে চাকরি—’ঘুষ নিয়ে’ ঘুরাচ্ছিলেন প্রতিবন্ধীকে, সাংবাদিকের ওপর হামলা আনসার সদস্যের

জানা যায়, সম্প্রতি সময়ে সন্ত্রাসীদের বেপরোয়া কর্মকাণ্ডে ফের অশান্ত হয়ে উঠেছে উপকূলীয় জনপদ মগনামা। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে এখানে। মঙ্গলবার সকালে মগনামা থেকে চকরিয়া হাসপাতালে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে ইউপি চেয়ারম্যান ওয়াসিমের ভাই এনায়েত উল্লাহ ও তার মামাত ভাই আরফাতের উপর হামলা করে মুহুরীপাড়া গ্রামের একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী। হামলায় এনায়েত উল্লাহ গুরুতর আহত হন। তাকে প্রথমে পেকুয়া সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

স্থানীয়রা জানান, সকালে মগনামা ইউপি চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ ওয়াসিমের ভাই এনায়েত উল্লাহর উপর হামলার পর মুহুরীপাড়া গ্রামের একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী সংঘবদ্ধ হয়ে চেয়ারম্যানের বাড়িতে হামলার পরিকল্পনা করে মুহুরীপাড়া স্টেশনে অবস্থান নেয়। এ খবর পেয়ে পেকুয়া থানা থেকে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে গ্রামের কিছু সন্ত্রাসী পুলিশের ওপর হামলার করে। হামলায় পেকুয়া থানার এএসআই তৌহিদুর রহমান, কনস্টেবল আল আমিন ও ইমরান হোসেন আহত হন। ঘটনাস্থল থেকে মগনামা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নাজেম উদ্দিন নাজু নামের ১ জনকে আটক করেছে পেকুয়া থানা পুলিশ।

মগনামা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিম আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, জয়নাল হত্যায় জড়িত সন্ত্রাসী সিন্ডিকেট আমার ভাইদের ওপর হামলা চালিয়েছে। গতকাল জয়নাল হত্যার অন্যতম আসামি নুর মোহাম্মদ গ্রেফতার হওয়ার প্রতিক্রিয়া এটি। সন্ত্রাসীরা মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে পুলিশের ওপর হামলা করেছে।

ইউপি চেয়ারম্যান আরও বলেন, চিহ্নিত দুর্বৃত্ত মমতাজুল ইসলামের নেতৃত্বে খোরশেদুল আলম, রোকন উদ্দিন, জসিম উদ্দিনসহ ৮ থেকে ১০ জন কিরিচ দিয়ে কুপিয়ে আমার ভাই এনায়েত উল্লাহকে বর্বরভাবে আক্রমণ করে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে। নির্বাচন ও রাজনৈতিক বিরোধের জেরে এ হত্যার চেষ্টা।

আরও পড়ুন: যৌতুক চেয়ে স্ত্রীকে মেরে রক্তাক্ত, থানায় গেল স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ

পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুর রহমান মজুমদার বলেন, মগনামার চেয়ারম্যানের ভাইসহ ২ জনকে হামলা করে জখম করার ঘটনায় সম্পৃক্তদের ধরতে মুহুরীপাড়ায় অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে মুহুরীপাড়া গ্রামের চিহ্নিত দুর্বৃত্তরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এতে পুলিশের এক এএসআই ও দুই কনস্টেবল আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১০ রাউন্ড পাল্টা গুলি চালায় পুলিশ। এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে।

পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান ওসি।

এদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে কক্সবাজার পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান গ্রামবাসীর উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন। এ সময় তিনি সবাইকে শান্ত থাকার অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। এছাড়া মগনামার অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে বিশেষ অভিযানে নামবে পুলিশ।

বলরাম/ডিসি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!