নগরের ব্যস্ত এলাকার একটি চকবাজার। সেই চকবাজারেই চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) উচ্ছেদ অভিযান নিয়ে চলছে চোর-পুলিশ খেলা। রাস্তা ও ফুটপাত দখলকারীদের উচ্ছেদ করা হলেও কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ফের তা দখল হয়ে যাচ্ছে। ফলে চসিকের উচ্ছেদ অভিযানের কোনো সুফল পাচ্ছে না স্থানীয় মানুষ কিংবা পথচারী।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, এর আগেও একাধিকবার উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হলেও অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। ঘুরেফিরে যে লাউ সে কদুর মতোই অবস্থা। উচ্ছেদের কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানেই দখল হয়ে যায় রাস্তা-ফুটপাত।
বুধবার (২৬ মে) সকালে চকবাজার চকসুপার মার্কেটের সামনে থেকে ফুলতলা পর্যন্ত উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে চসিকের পরিচ্ছন্নতা বিভাগ। কিন্তু উচ্ছেদের ৩-৪ ঘণ্টা না যেতেই ফের দখল হয়ে যায়। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পুরনো চিত্র ফিরে আসায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠে।
নিশান নিশু নামে একজন ফেসবুকে লেখেন— ‘জাস্ট কয়েক ঘণ্টার জন্য এসব ফটোশুট কাহিনী না করলেও পারেন।’
এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে ফের চকবাজার এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে চসিকের পরিচ্ছন্ন বিভাগ। এ সময় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে রাস্তা ও ফুটপাত দখলমুক্ত করা হয়। একইসঙ্গে জব্দ করা হয় মালামাল।
তবে সন্ধ্যায় যখন এ রিপোর্ট লেখা হচ্ছিল তখন দেখা গেছে— ফের ফুটপাত দখল করে পসরা সাজিয়ে বাণিজ্যের ব্যস্ততা।
স্থানীয়রা জানান, উচ্ছেদ অভিযানে পর থেকে নজরদারি না থাকায় প্রতিবার একই অবস্থা তৈরি হচ্ছে। এছাড়া এসব অবৈধ দখলদারদের ঘিরে রয়েছে একাধিক গ্রুপ ও থানা-পুলিশের দালালের প্রকাশ্য চাঁদাবাজি।
অন্যদিকে অবৈধ দখলকারীদের কারণে উদ্বোধনের পর থেকে খালি পড়ে আছে চসিক পরিচালিত চকবাজার কাঁচাবাজারের দ্বিতীয়তলা। এ সুযোগে বাজারের অপর পাশে একটি জায়গায় গড়ে তোলা হয়েছে আরেকটি বাজার। এখন সেটি চালুর অপেক্ষায়।
রবিন সরকার নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা ক্ষোভপ্রকাশ করে বলেন, এসব অভিযান দেখছি বহু আগে থেকে। জাস্ট কয়েক ঘণ্টার জন্য। শুধু উচ্ছেদ নয়, পাশাপাশি জরিমানাও করতে হবে অবৈধ দখলকারীদের।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চসিকের অতিরিক্ত প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোরশেদুল আলম আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, মাননীয় মেয়র মহোদয়ের নির্দেশে রাস্তা ও ফুটপাত দখলমুক্ত করতে বুধবার সকালে অভিযান পরিচালনা করা হয়। কিন্তু অভিযান শেষ করে যেতে না যেতেই আবারো দখল হয়ে যায়। দখলকারীদের উচ্ছেদে আজ (বৃহস্পতিবার) সকাল থেকে আবারো অভিযান শুরু করি। এখন থেকে এলাকায় নিয়মিত অভিযান চলবে । এবার আর কোনো ছাড় নেই অবৈধ দখলকারীদের।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে চকবাজার কাঁচাবাজার ব্যবসায়ী সমিতির এক নেতা আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, খোরশেদ আলম সুজন চসিকের প্রশাসকের দায়িত্বে থাকাকালীন ক্যারাভ্যান কর্মসূচিতে এই এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন। ভেবেছিলাম অবস্থার পরিবর্তন হবে। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা না যেতেই ফের দখলে চলে যায় রাস্তা ও ফুটপাত। এর আগেও একাধিকবার চসিকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা হয়েছিল। কিন্তু যে লাউ সে কদু। এসব লোক দেখানো অভিযান চালিয়ে সাধারণ মানুষকে কষ্ট দেওয়ার কোনো মানে হয় না।
আলোকিত চট্টগ্রাম