প্রবাসীর মাথায় হাত—জিনের বাদশার খপ্পরে হারালেন ২৮ লাখ টাকা

তারা তিনজন। প্রত্যেকেই জিনের বাদশা গ্রুপের পেশাদার সদস্য। তাদের কাজও ভিন্ন ভিন্ন। তবে কাজ ভিন্ন হলেও টোপ ফেলতে একসঙ্গে তৈরি করেন ছক। সাজানো ছকে সাধারণ মানুষকে ফাঁদে ফেলে তারা হাতিয়ে নেয় লাখ থেকে কোটি টাকা! অবশেষে কোতোয়ালী থানা পুলিশের জালে ধরা পড়েছে এই জিনের বাদশারা।

বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাতে নগরের হাজারী গলি থেকে জিনের বাদশার সদস্য আবু তৈয়বকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কক্সবাজারের টেকনাফের হোয়াক্যাং এলাকায় অভিযান চালিয়ে মো. আব্দুল মান্নান ও মো. জোবাইর হোসেনকে গ্রেপ্তার করে কোতোয়ালী থানা পুলিশ।

আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব সেজে ‘লাখপতি’, মামলার জালে প্রতারক

পুলিশ জানায়, ভুক্তভোগী আবুল হাছান সহিদ একজন সৌদি প্রবাসী। সেখানে তিনি ছিলেন আবাসিক হোটেল ব্যবসায়ী। দীর্ঘদিন সেখানে তিনি আদনান সাঈদ আল সাদীর পাঁচটি হোটেল পরিচালনা করতেন।

সৌদি সরকারের নিয়ম অনুযায়ী, হোটেল থেকে অর্জিত সকল টাকা কপিল আদনানের ব্যাংক একাউন্টে জমা করতেন। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে সহিদ দেশে ছুটিতে পাঠান কপিলকে। ছুটি কাটিয়ে তিনি সৌদিতে চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে জানতে পারেন তার ভিসায় নিষিধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এ কারণে তিনি আর সৌদিতে যেতে পারেননি। এরপর সহিদ ব্যবসার সব টাকা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যান।

পুলিশ আরও জানায়, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে হাজারি গলিতে তার স্ত্রীর স্বর্ণ বিক্রি করতে যান। দোকানের এক কর্মচারী স্বর্ণ বিক্রির কারণ জানতে চাইলে সহিদ তাকে সব খুলে বলেন। ওই কর্মচারী ঘটনার বর্ণনা শুনে টাকা উদ্ধার করে দিবে বলে মোবাইল নম্বর নেন।

চলতি বছরের ২০ মার্চ আবুল হাছানকে ফোন করে লালদীঘির হোটেল আল ফাতাহর তৃতীয় তলায় নিয়ে জিনের বাদশা আব্দুল মান্নানের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয় সেই কর্মচারী। জীনের বাদশার কথা অনুযায়ী কাজ করলে সৌদি থেকে আদনান সাঈদ দেশে এসে তার সব টাকা ফেরত দিয়ে যাবে বলে আশ্বাস দেন। সেই আশ্বাসে সহিদ ধাপে ধাপে ২৮ লাখ ৩৬ হাজার টাকা জিনের বাদশাকে দেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

আরও পড়ুন: ‘মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে প্রতারণা’—অনুদানের নামে হাতিয়ে নিল ৪৩ হাজার টাকা

জানতে চাইলে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নেজাম উদ্দীন আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে জিনের বাদশা চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা জিনের বাদশা গ্রুপের পেশাদার সদস্য। তাদের কাজ সাধারণ মানুষকে ফাঁদে ফেলে টাকা হাতিয়ে নেওয়া।

তিনি আরও বলেন, স্বর্ণ দোকানের কর্মচারী আবু তৈয়ব স্বর্ণ বিক্রি করতে আসা ক্রেতাদের সমস্যার কথা শুনেন। পরে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে কৌশলে জিনের বাদশা আব্দুল মান্নানের কাছে নিয়ে যান। এভাবেই তারা দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছিল। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

এএইচ/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!