১৩ স্বপ্ন হারিয়ে ওদের বিষন্ন দিনরাত

২০২২ সালের ২৯ জুলাই মিরসরাইয়ে মাইক্রো ও ট্রেনের সঙ্গে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এদিন একটি কোচিং সেন্টারের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা সকালে মাইক্রোবাসে খৈয়াছড়া ঝরনায় বেড়াতে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন।

সেই দুর্ঘটনায় চিকনদণ্ডী ও খন্দকিয়া এলাকার ১৩ জন প্রাণ হারান। নিহত সবাই হাটহাজারী উপজেলার আমানবাজারের পূর্ব খন্দকিয়া গ্রামের বাসিন্দা। চিকনদণ্ডী ইউনিয়নের যুগীরহাট ছমদিয়া স্কুলের পর রাস্তার পাশে রয়েছে নিহত সজীব ও মারুফের কবর। আজ সেই শোকাবহ ঘটনার এক বছর পূর্ণ হলো।

এদিকে নিহতদের স্মরণে মিরসরাই ট্র্যাজেডি মানবিক ফান্ড ও এসআরএস ক্লাবসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন মসজিদে মিলাদ, কোরআন খতম, ফাতেহা ও মুনাজাতের আয়োজন করেছে।

যুগীরহাট ও খন্দকিয়া এলাকায় নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, এক বছর আগের সেই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার কথা এখনও কেউ ভুলতে পারেনি। একটি দুর্ঘটনায় একই এলাকার ১৩ জনের প্রাণ অকালে ঝরে যায়। নিহতদের মধ্যে অনেকে লেখাপড়া শেষ করে পরিবারের হাল ধরার কথা ছিল। অনেকের স্বপ্ন ছিল চিকিৎসক ও প্রকৌশলী হওয়ার। কিন্তু মর্মান্তিক সেই দুর্ঘটনায় পরিবারগুলোর স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে। সন্তান হারানোর কষ্ট বুকে চেপে জীবন অতিবাহিত করতে হচ্ছে।

আরও পড়ুন: রান্নাঘরের আগুনে ছাই ২২ পরিবারের স্বপ্ন

নিহত ওয়াহিদুল আলম ফাহিমের বাবা মো. জানে আলম বলেন, আজকের দিন আমার জন্য পৃথিবীর সবচেয়ে কষ্টের দিন। দুসন্তানের একজনকে হারাতে হয়েছে। আজীবন তা বয়ে যেতে হবে। আমার ছেলেসহ নিহতদের স্মরণে দোয়া ও মিলাদের আয়োজন করেছি। সকলে আমার ছেলের জন্য দোয়া করবেন।

ফার্মেসি মালিক মো. মিজান বলেন, আমার দোকানে বসলে তাদের সঙ্গে প্রতিদিন দেখা হতো। নিহতরা এলাকার ছোট ভাই। সেদিনের দুর্ঘটনার কারণে আজ সকলে কবরে শায়িত। এমন বেদনাদায়ক ঘটনা কখনো ভোলার মতো নয়।

যোগাযোগ করা হলে মিরসরাই ট্র্যাজেডি মানবিক ফান্ডের অধ্যক্ষ ইয়াসিন সেলিম বলেন, একসঙ্গে ১৩টি প্রাণ অকালে ঝরে যাওয়ার শোক আামাদের আজীবন বইতে হবে। এ ঘটনা আমাকে এতটা শোকাহত করেছে যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।

মিরসরাই ট্রাজেটি মানবিক ফান্ডের সমন্বয়ক মো. তোফায়েল আহমেদ মেম্বার বলেন, আমাদের এলাকার এতগুলো সন্তান একসঙ্গে চলে যাওয়া মেনে নেওয়ার মতো নয়। আমরা সাধ্যমতো নিহতদের পরিবারের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। আজকেও নিহতদের স্মরণে দোয়া ও মিলাদের আয়োজন করা হয়েছে।

আরবি/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!