হঠাৎ বেড়েছে গরু চুরি, আনোয়ারায় চুরি ঠেকাতে রাত জেগে পাহারা

আনোয়ারায় হঠাৎ বেড়েছে গরু চুরি। গোয়ালঘর থেকে শুরু করে খামার— কিছুই বাদ পড়ছে না সংঘবদ্ধ চোরের থাবা থেকে। এতে একদিকে নিঃস্ব হয়ে পড়ছে ক্ষুদ্র চাষি, অন্যদিকে ক্ষতির মুখে পড়েছেন স্থানীয় খামারিরা।

জানা গেছে, ২৪ জানুয়ারি রাতে আনোয়ারা সদরের বিলপুর গ্রামের শহিদুল ইসলামের খামার থেকে তালা কেটে দুটি গাভি নিয়ে যায় চোরের দল। ওই দুটির গাভির দাম প্রায় আড়াই লাখ টাকা।

এর আগে ১৯ জানুয়ারি রাতে বৈরাগ ইউনিয়নের গুয়াপঞ্চক গ্রামের তিন বাড়িতে হানা দেয় গরু চোরের দল। তারা ফজু তালুকদার বাড়ির মো. সরোয়ারে দুটি গরু, দানা মিয়ার ১টি এবং আমান উল্লাহপাড়া এলাকা থেকে ১টি গরু চুরি করে নিয়ে যায়।

১৮ জানুয়ারি পরৈকোড়া ইউনিয়নের মামুরখাইন গ্রামের আবুল কালাম ও বদরুল হক নামে দুচাষির দুটি গরু চুরি হয়। গরু দুটির আনুমানিক বাজারমূল্য ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা।

১৩ জানুয়ারি রাত ২টার দিকে হাইলধর ইউনিয়নের মৌলভী দীঘির পাড় এলাকা থেকে বাচ্চু মিয়ার গোয়াল ঘরের তালা ভেঙে ৬০ হাজার টাকা দামের একটি গরু নিয়ে যায় সংঘবদ্ধ চোরের দল। এর আগে ১১ জানুয়ারি রাতে চাতরী ইউনিয়নের ডুমুরিয়া গ্রামের ইজ্জত আলীর গোয়াল ঘর থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যের একটি গাভি বাছুরসহ চুরি যায়।

গত এক বছরে শুধু আনোয়ারা সদর ইউনিয়নের বিলপুর গ্রাম থেকে অন্তত ১৫টি গরু চুরি হয়েছে‌ বলে জানান বিলপুর ডেইরি পিজি’র সাধারণ সম্পাদক আব্দুর শুক্কুর।

সূত্র জানায়, গভীর রাতে গোয়ালঘর থেকে গরু চুরি করে নম্বরবিহীন ট্রাক, পিকআপ ও অটোরিকশায় উঠিয়ে নিয়ে যায় চোরচক্র। এসব ঘটনায় খুব কমসংখ্যক মামলা রেকর্ড হয়। প্রতিকার না পাওয়ার শঙ্কা কিংবা পুলিশি হয়রানির ভয়ে অনেকেই থানায় অভিযোগ দেন না। ফলে চোরের দল পার পেয়ে যাচ্ছে নির্বিঘ্নে।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, পুলিশের নজরদারির অভাব এবং রাতে টহল না থাকার কারণে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে গরু চোরের দল। সংঘবদ্ধ এ চোরচক্র নানা কৌশলে প্রতিনিয়ত গরু চুরি করে চলেছে।

বিলপুর ডেইরি পিজি’র সভাপতি মো. রিয়াদ হোসেন বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে আনোয়ারায় বেড়ে গেছে গরু চুরি। এতে প্রতিদিন ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন গ্রামের ক্ষুদ্র খামারিরা। গরু চুরি ঠেকাতে পুলিশ প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

আনোয়ারা ডেইরী ফার্মাস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক তানভীর আহমেদ বলেন, প্রতিদিন উপজেলার কোনো না কোনো খামারে গরু চুরি হচ্ছে। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। এর আগেও আমরা ডেইরী ফার্মাস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বিষয়টি থানাকে অবহিত করেছিলাম। এরপর কিছুদিন চুরি বন্ধ ছিল। এখন আবারো চোরের উপদ্রব বেড়েছে।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে আনোয়ারা থানার অফিসার ইনচার্জ মীর্জা মোহাম্মদ হাছান আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, গরু চুরি রোধে প্রতিরাতে পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে। আগে যে চুরি হয়েছে তার অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চলমান রয়েছে।

এসআই/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!