আগস্ট মাস আসলে বিএনপি নানামুখী ষড়যন্ত্র শুরু করে : তথ্যমন্ত্রী

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, শোকের মাস আগস্টে পুরো জাতি যখন শোকাচ্ছন্ন তখন বিএনপি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও দেশকে উত্তপ্ত করার অপচেষ্টা করছে। তারা আগস্টকে কিছুতেই সহ্য করতে পারে না। আগস্ট মাস আসলে বিএনপি নানামুখী ষড়যন্ত্র শুরু করে। ভোলার ঘটনাসহ সাম্প্রতিক ঘটনা ও তাদের বক্তৃতা, বিবৃতি তারই সাক্ষ্য বহন করে।

সোমবার (১ আগস্ট) বিকাল ৫টায় চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে বাংলাদেশ রেলওয়ের ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর’ উদ্বোধন শেষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

রেলওয়েকে ধন্যবাদ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, জাদুঘরের মাধ্যমে স্টেশনে আগত সাধারণ যাত্রীরা বঙ্গবন্ধুর বেড়ে ওঠা, তাঁর সংগ্রামী জীবন ও জাতির জনক হয়ে উঠার নানা বিষয় জানতে পারবেন। পাশাপাশি ভ্রমণরত নতুন প্রজন্মও বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জেনে তাদের জীবন ও কর্মে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন ও ধারণ করতে পারবে। ফলে নতুন প্রজন্মের মধ্যে দেশপ্রেম ও ত্যাগের মনোভাব জাগ্রত হবে। মন্ত্রী রেল কর্মকর্তাদের বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রসেডিং ও কুশীলবদের অডিও জাদুঘরে রাখার পরামর্শ দেন।

আরও পড়ুন: দণ্ডপ্রাপ্ত তারেকের নির্দেশে অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা চলছে : তথ্যমন্ত্রী

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার অন্যতম কুশীলব হচ্ছে জিয়া। এজন্য পরবর্তীতে খন্দকার মোশতাক জিয়াকে সেনাবাহিনীর প্রধান পদে বসিয়েছিলেন।

বঙ্গবন্ধু হত্যায় দোসরদের চিহ্নিত করার জন্য কমিশন গঠন করা দরকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই কমিশন অবশ্যই গঠন করা হবে।

সাম্প্রতিক ঘটনা ও তাদের বক্তৃতা বিবৃতি সাক্ষ্য বহন করে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, তারেক রহমানের সহযোগিতায় বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার জ্ঞাতসারে তারা ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে বঙ্গবন্ধু কন্যাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। এর আগে ১৭ আগস্ট তারা দেশব্যাপী একযোগে বোমা হামলা করেছিল। আগস্ট মাস এলেই যে তাদের গাত্রদাহ শুরু হয়ে যায় এসব ঘটনা তারই প্রমাণ। বিএনপি নেতারা সরকারকে আন্দোলনের ভয় দেখায়। অথচ জনগণের দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাজপথে নামলে বিএনপিকে খুঁজেও পাওয়া যাবে না। বিএনপিকে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সুযোগ দেওয়া হবে না। আমরা তাদের মোকাবেলায় রাজপথে নামলে তারা পালায় কি না তা-ই দেখার বিষয়।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (আইন ও ভূমি) মো. ফারুকুজ্জামান, পূর্বাঞ্চল রেলয়ের মহাব্যবস্থাপক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ও  পূর্বাঞ্চলের প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী মো. বোরহান উদ্দিন।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ রেলওয়ের উদ্যোগে দেশব্যাপী দুটি ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর’ চালু করা হয়েছে। একটি মিটারগেজ ও অন্যটি ব্রডগেজ অঞ্চলে। রেলওয়ে পুর্বাঞ্চলের এ জাদুঘরটি একটি ইঞ্জিন নিয়ে পূর্বাঞ্চলের একেকটি স্টেশনে সাতদিন করে অবস্থান করবে। পরবর্তীতে অন্য স্টেশনে চলে যাবে। ভ্রাম্যমাণ এ জাদুঘরে বঙ্গবন্ধুর বেড়ে উঠা ও কর্মময় জীবনের ঘটনাপঞ্জি নিয়ে ধারাবাহিক ১২টি পর্ব রয়েছে। জাদুঘরে প্রবেশ করে দর্শণার্থীগণ পরিচিত হবেন জাতির পিতার শৈশবের দিনগুলোর সঙ্গে। পর্যায়ক্রমে তাঁর ছাত্রজীবন, মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের মাধ্যমে গণমানুষের প্রাণের নেতা হয়ে উঠা, ভাষা আন্দোলনে তাঁর অবদান, অবর্ণনীয় নির্যাতন ভোগ, মিথ্যা মামলা ও কারাভোগের করুন চিত্র, পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে আপোষহীন সংগ্রাম, ঐতিহাসিক ৬ দফা, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধ, কাঙ্খিত স্বাধীনতা, সদ্য স্বাধীন দেশ পুনর্গঠনে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ সম্পর্কে জানতে পারবে।

আরও পড়ুন: ভুল তথ্যের রিপোর্ট—মানবাধিকারে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ, বললেন তথ্যমন্ত্রী

এছাড়া প্রতিটি ভিডিও নির্মাণ করা হয়েছে অডিও এবং স্থির চিত্রের মাধ্যমে। এখানে রয়েছে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বই। শিশুদের জন্য রয়েছে শিশুতোষ সাহিত্য কর্ম। এতে সুদৃশ্য ১২টি টেবিলে স্থাপন করা হয়েছে জাতির পিতার পৈত্রিক নিবাসের প্রতিরুপ, তাঁর ব্যবহৃত চশমা, পাইপ মুজিব কোট, বঙ্গবন্ধুর নিজ হাতের লেখা চিঠি। এছাড়া রয়েছে মুক্তি সংগ্রামের দুর্লভ চিত্রসমূহ। এখান থেকে ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণসহ গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ ও থিম সং প্রচার করা হবে। কোচের বাইরের অংশ সজ্জিত করা হয়েছে ’৫২ এর ভাষা আন্দোলন থেকে ’৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত ধারাবাহিক সংগ্রামের উপর চিত্রিত ম্যুরালের মাধ্যমে। এটি সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত।

আরএস/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!