যুক্তরাষ্ট্রে বাঙালিদের জমকালো আয়োজনে সমাজসেবায় স্বীকৃতি পেলেন আবদুল কাদের মিয়া

‘কংগ্রেসনাল প্রোক্লেমেশন’ এবং নিউ জার্সি স্টেট পার্লামেন্টের উভয়কক্ষের ‘যৌথ প্রক্লেমেশন’ পেলেন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের যুক্তরাষ্ট্র শাখার সাধারণ সম্পাদক ও নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল কাদের মিয়া।

আরও পড়ুন : বঙ্গবন্ধুর বাংলায় কোনো সংখ্যালঘু নেই, সবাই বাঙালি : ওয়াসিকা আয়শা খান

বাংলাদেশ এবং প্রবাসে সামজিক উন্নয়ন ও আর্ত-মানবতার কল্যাণে অবদান রাখায় তিনি এ স্বীকৃতি পেয়েছেন। স্বীকৃতি প্রদানের সময় অর্ধডজন সিটির মেয়র, স্টেট সিনেটর-অ্যাসেম্বলিম্যানসহ ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকান পার্টির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

সম্প্রতি নিউ জার্সির আটলান্টিক সিটির সেন্ট ক্যাসেল স্টেডিয়ামে ‘বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব আটলান্টিক কাউন্টি’র উদ্যোগে বাংলাদেশ মেলায় বিপুল করতালির মধ্যে কংগ্রেসম্যান জেফ ভ্যান ড্র এবং স্টেট সিনেটর ভিনসেন্ট পলিস্টিনা, এ্যাসেম্বলিম্যান ডনাল্ড এ গার্ডিয়ান ও চার্লস এস সুইফট স্বাক্ষরিত পৃথক দুটি প্রক্লেমশন হস্তান্তর করা হয়।

উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের পাশাপাশি নিজের নামে প্রতিষ্ঠিত ‘আব্দুল কাদের মিয়া ফাউন্ডেশন’র ব্যানারে দীর্ঘদিন ধরে তিনি বাংলাদেশ ও প্রবাসের আর্তপীড়িত মানুষের সেবা করে আসছেন।

এছাড়া প্রবাস প্রজন্মে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং বাঙালি কালচার জাগ্রত রাখার বিভিন্ন কার্যক্রমে তাঁর সরব উপস্থিতি থাকে। মার্কিন কংগ্রেসের এই স্বীকৃতি সামনের দিনগুলোতে মানবতার সেবামূলক কার্যক্রমে আরও উৎসাহিত করবে বলে মন্তব্য করেন কাদের মিয়া।

মেলার উদ্বোধনী বক্তব্যে কাদের মিয়া বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে বাঙালি সংস্কৃতির লালন ও বিকাশের জন্য বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে বাংলাদেশ মেলার মাধ্যমে যে প্রচেষ্টা চলছে তাকে আরও বেগবান করাই হচ্ছে আমার মূল লক্ষ্য।

অতিথির মধ্যে আরও ছিলেন নিউ জার্সি অঙ্গরাজ্যের সিনেটর ভিনস প্যালিস্টিনা, কংগ্রেসম্যান জেফ ভেন ড্রর প্রতিনিধি মো. ওমর, অ্যাসেম্বলিম্যান ডন গার্ডিয়ান, আটলান্টিক সিটির মেয়র মার্টি স্মল, প্লেজেন্টভিল সিটি মেয়র জুডি এম ওয়ার, নর্থফিল্ড সিটির মেয়র আরল্যান্ড চোও, এগ হারবার সিটির মেয়র লিসা, এবসিকন সিটির মেয়র কিম্বারলী হরটন, আটলান্টিক সিটির কাউন্সিলম্যান আনজুম জিয়া এবং জর্জ টিবিট।

৬ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশির এই মহামিলনে আটলান্টিক সিটির সেন্ট ক্যাসেল স্টেডিয়াম পরিণত হয়েছিল এক খণ্ড বাংলাদেশে। পুরো মাঠের চারদিকে বাংলাদেশি পণ্যের সমাহার এবং দেশি স্বাদের আহারে ব্যস্ত ছিলেন প্রবাসীরা।

মেলায় শিল্পী তপন চৌধুরীর সংগীত পরিবেশন ছিল অন্যতম আকর্ষণ। প্রবাসের জনপ্রিয় শিল্পীদের গান প্রাণভরে সবাই উপভোগ করেন। প্রবাসী শিল্পীদের মধ্যে ছিলেন নিলাদ্রী চৌধুরী, জয়ন্ত সিনহা, জলি দাস এবং ইশরাত শর্মী। তাদের গানের তালে পুরো স্টেডিয়াম ছিল মুখরিত। গানের ফাঁকে মূলধারার রাজনীতিবিদদেরকে বাংলাদেশিদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব আটলান্টিক কাউন্টির সভাপতি শহীদ খান এবং সাধারণ সম্পাদক সোহেল আহমেদ। মেলায় হাজির ছিলেন গীতিকার কবির বকুলও।

আশরাফুল হাসান বুলবুলের প্রাণবন্ত উপস্থাপনায় ও সাংস্কৃতিক উপকমিটির সদস্য নিবেদিতা ভট্রাচার্যের কোরিওগ্রাফিতে দেশি গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশনা ছিল দেখার মতো। শত ব্যস্ততার মাঝেও সামাজিক উন্নয়ন এবং লিডারশিপসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশি কমিউনিটিতে অবদান রাখার জন্য মেলায় বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সন্মাননা দেওয়া হয়।

মেলায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব অব আটলান্টিক সিটি ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি আকবর হোসাইন, বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব অব আটলান্টিক সিটির সাধারণ সম্পাদক ও যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং নিউ জার্সি স্টেট কমিটির সভাপতি মো. শাহীন, বিএনপি অব নিউজার্সি স্টেট সাউথ সভাপতি সৈয়দ মো. কাউছার এবং সাধারণ সম্পাদক রহমান বাবুল, সাউথ জার্সি মেট্রো আওয়ামী লীগ সভাপতি শামসুল ইসলাম শাহজাহান, রিয়েল স্টেট ব্যবসায়ী ও কমিউনিটি নেতা হারুন ভূঁইয়া, কমিউনিটি নেতা তোলন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও কমিউনিটি নেতা আবুল হোসেন, সাংবাদিক ও কমিউনিটি নেতা সাঈদ দোহা, আটলান্টিক সিটির সিটি হলের কমিউনিটি অ্যাফেয়ার্স কর্মকতা মিল্টন চৌধুরী, খসরু কামাল, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব আটলান্টিক কাউন্টির সাবেক সভাপতি সেলিম সুলতান, ট্রাস্টি বোর্ড প্রধান কাঞ্চন বল, সাউথ জার্সি মেট্রো আওয়ামী লীগের প্রাক্তন সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ভূঁইয়া এবং প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আহসান হাবিব।

নেতৃবৃন্দ সাউথ জার্সিতে বসবাসরত নতুন প্রজন্মকে মেলায় নিয়ে এসে দেশীয় সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত করার উদ্দেশে মেলার আয়োজন করেছেন বলে জানান আয়োজকরা।

মেলার আহ্বায়ক মো. আলী হোসেন এবং সদস্য সচিব ফরহাদ সিদ্দিকী বলেন, দীর্ঘ একটি বছর ধরে আটলান্টিক কাউন্টির বাংলাদেশিরা অপেক্ষায় থাকেন এই মেলার জন্য। মেলা আয়োজন সফল করতে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব আটলান্টিক কাউন্টির সভাপতি শহীদ খান এবং সোহেল আহমেদের নেতৃত্বে প্রায় ৫০ জনের একটি টিম দিন-রাত তাদের কার্যক্রম চালিয়েছেন।

এসআই/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!