লাশ নিয়ে টানাটানি—ধাত্রীর ভুলে মা ও নবজাতকের মৃত্যু

হাতুড়ে ধাত্রীর ভুলে প্রাণ দিতে হলো নবজাতক ও গর্ভধারিনী মা’কে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের এ যুগে এমন ঘটনা ঘটেছে চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানার মীরেরহাটে।

স্থানীয় ধাত্রী নুর বেগমের অপচিকিৎসায় ডেলিভারির সময়ই মারা যায় নবজাতক। আর হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত্যু হয় মা ফাহিমা আক্তারের (২৬)।

এদিকে এমন করুণ মৃত্যুর পর মধ্যরাতে ফাহিমার লাশ দাফন নিয়ে বাবার বাড়ি ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের মধ্যে কাড়াকাড়ি হয়। বুধবার (২৫ আগস্ট) রাতে ফাহিমা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

আরও পড়ুন: হাত ভাঙল নবজাতকের—ডাক্তারের ‘অবহেলা’ ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে

জানা গেছে, ১৪ আগস্ট হাটহাজারীর ঈসাপুর এলাকার অন্তঃসত্ত্বা ফাহিমা আক্তারের প্রসব বেদনা শুরু হলে তাকে মীরেরহাট এলাকার হাতুড়ে ধাত্রী নুর বেগমের কাছে নিয়ে যান শ্বশুরবাড়ির লোকজন। সেখানে ১৫ আগস্ট সকালে প্রসবের সময় নবজাতকের মৃত্যু হয়।

ফাহিমার অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে তাকে প্রথমে হাটহাজারী সদর হাসপাতালে এবং পরে চমেক হাসপাতালে নেওয়া হয়। চমেক হাসপাতালে ১০ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে তিনি মারা যান। এ নিয়ে ফাহিমার বাবার বাড়ি ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়।

বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) রাত সাড়ে ১২টার দিকে ফাহিমার লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স হাটহাজারী বাস স্টেশন মোড়ে পৌঁছলে সেখান লাশ নিয়ে কাড়াকাড়ি শুরু হয়। ফাহিমার ভাই সাব্বির বলেন, আমার বোনের লাশ আগে আমাদের বাড়ি নেব, তারপর শ্বশুরবাড়ি নিতে দেব।

অন্যদিকে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের দাবি, তারা লাশ তাদের কবরস্থানে দাফন করবে। তবে শেষ পর্যন্ত ফাহিমার লাশ শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কথিত ধাত্রী নুর বেগম সরকারহাট ও বুড়ি পুকুর থেকে বিতাড়িত হয়ে মীরেরহাটে একটি ঘরে হাসপাতাল খুলে। সেখানে চুক্তিতে ডেলিভারি করেন তিনি। তার হাতে একাধিক নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।

আরও পড়ুন: ‘মায়ের আত্মাহুতি’—আইসিইউ থেকে ফিরে মাকেই খুঁজছেন সেই ছেলে

হাটহাজারী মডেল থানার অল্প দূরত্বে মধ্যরাতে ফাহিমার লাশ নিয়ে কাড়াকাড়ি বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয় ডিউটি অফিসার এসআই রাজিবের। তিনি এ ধরনের কোনো ঘটনা তারা জানেন না বলে জানান।

সিএম/এসকে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!