মিরসরাইয়ে কালবৈশাখীর তাণ্ডব, আতঙ্কে আহত ২০ শিক্ষার্থী—বিদ্যুৎ নেই

মিরসরাইয়ে কালবৈশাখী ঝড়ের তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রচণ্ড ঝড়ো হাওয়ায় উপজেলার অনেক জায়গার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। উড়ে গেছে বসতঘরের টিনের চাল। উপড়ে পড়েছে বড় বড় গাছ। গাছ পড়ে আঞ্চলিক সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া বোরো ধান, আম ও কাঁঠালের ক্ষতি হয়েছে। গাছ পড়ে ভেঙে গেছে উপজেলা ভূমি অফিসের একটি ভবন।

সোমবার (৬ মে) দুপুর থেকে শুরু হওয়া ঝড় প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চালায়। এসময় উপজেলার অনেক জায়গার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়।

এদিকে বারইয়ারহাট পৌর এলাকায় টিন উড়ে এসে পড়ে অটোরিকশা চালক আমলমগীর গুরুতর আহত হন। এছাড়া উপজেলার বেশ কয়েকটি স্কুলে ক্লাস চলাকালীন অবস্থায় বজ্রপাতে আতঙ্কিত ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। উপজেলার মিঠাছরা এলাকায় বজ্রপাতে পাইপ ফেটে যাওয়ায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এ প্রতিবেদন তৈরি করা পর্যন্ত আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় উপজেলায় বন্ধ ছিল বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ।

জানা গেছে, কালবৈশাখী ঝড়ে বারইয়ারহাট পৌরসভা, মিরসরাই পৌরসভা, মিরসরাই সদর ইউনিয়ন, মিঠানালা, ওয়াহেদপুর, দুর্গাপুর, খৈয়াছড়া, কাটাছরা ও ইছাখালী ইউনিয়নে বিভিন্ন জায়গায় ব্যাপক গাছপালা ভেঙে পড়েছে। অনেক জায়গায় গাছ পড়ে ভেঙে গেছে ঘরবাড়ি। এছাড়া উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন ও দুই পৌরসভার বিভিন্ন গ্রামে গাছপালা ভেঙে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

আরও পড়ুন : চট্টগ্রামে দিনদুপুরে রাতের আঁধার, ডুবল রাস্তা—গাছ ভেঙে বন্ধ গাড়ি চলাচল

কাটাছরা ইউনিয়নের কৃষক মুসলিম উদ্দিন বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ে চাষ করা প্রায় ১ হাজার ২৫০ পিস সাম্মাম গাছ মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। অনেক গাছে ফলনও এসেছিল। এতে প্রায় লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

আবুরহাট উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদ সভাপতি নুরুল আবছার বলেন, বজ্রপাত ও ঝড়ো হাওয়া দেখে আতঙ্কিত হয়ে বিদ্যালয়ের সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণির প্রায় ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাদের বাড়ি পাঠানো হয়।

উপজেলার মিঠানালা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান এমএ কাশেম বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ে আমার এলাকার অনেক জায়গায় গাছপালা ভেঙে গেছে। অনেক ঘরবাড়ির টিন উড়ে গেছে এবং সড়কে গাছ পড়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে। বন্ধ রয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগও।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক তন্ময় জামশেদ আলম বলেন, বজ্রপাতে আতঙ্কিত হয়ে উপজেলার কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। পরে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ এর মিরসরাই জোনাল অফিসের ডিজিএম আদনান আহমেদ বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ে গাছপালা ভেঙে বিদ্যুতের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমাদের অফিসের আওতাধীন প্রায় ৩০টি খুঁটি ভেঙে গেছে। অসংখ্য জায়গায় গাছপালা পড়ে তার ছিঁড়ে গেছে। আমাদের কর্মীরা মাঠে কাজ করে যাচ্ছে। কবে নাগাদ বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে এ বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না।

যোগাযোগ করা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহফুজা জেরিন বলেন, কালবৈশাখী ঝড়ে উপজেলাজুড়ে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা যায়নি। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানদের তালিকা পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরপর বেশি ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা করা হবে।

এএ/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!