মামলার জালে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের এলএও—রয়েছে ৫ কর্মচারীও

জালিয়াতির মাধ্যমে টাকা লোপাটের চেষ্টা, মারধর ও চাঁদাবাজির অভিযোগে ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তাসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন এক ভুক্তভোগী।

মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) প্রথম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল দেবের আদালতে মামলাটি করা হয়। শুনানী শেষে আদালত আগামী ৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার কর্মকর্তা (এলএও) এহসান মুরাদ (৪২), ভূমি সার্ভেয়ার আব্দুল মোমেন (৪০), সার্ভেয়ার ইমাম হোসেন গাজী (৩৮), মোক্তার হোসেন (৪১) ও আবু কায়সার সোহেল (৩৮) এবং অফিস সহকারী বেলায়েত হোসেন বুলু (৪০)।

এ বিষয়ে বাদীপক্ষের আইনজীবী ইরফানুল হক আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে ৩০ দিনের মধ্যে মামলার প্রতিবেদন জমা দিতে পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আরও পড়ুন: ‘ক্ষমতার দাপটে’ বেপরোয়া—দুদকের মামলার জালে ‘কাউন্সিলর মানিক’

আদালত সূত্র জানা যায়, পতেঙ্গা মৌজার সম্পত্তি সংক্রান্ত দুটি মামলা দ্বিতীয় যুগ্ম জেলা জজ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এ জমির অংশ কর্ণফুলী টানেল তৈরিতে অধিগ্রহণ করা হয়। মামলার বাদী হেমায়েত হোসেনের বিরোধীপক্ষকে জমি অধিগ্রহণের টাকা জালিয়াতির মাধ্যমে দেওয়ার চেষ্টা করেন আসামিরা।

গত ১০ নভেম্বর দুপুর তিনটায় ক্ষতিপূরণের টাকা হালনাগাদের অবস্থা জানতে চাইলে হেমায়েত হোসেনকে গালাগাল শুরু করেন আব্দুল মোমেনসহ অন্যান্য আসামিরা। তিনি এসবের কারণে জানতে চাইলে সার্ভেয়ার মোক্তার হোসেন নিজের রুমে হেমায়েতকে বন্দি করে এলএও এহসান মুরাদকে বিষয়টি জানান। এ সময় আবু কায়সার সোহেল রুমে হেমায়েতকে অবরুদ্ধ করে রাখেন।

এরপর অন্যান্য আসামিরা হেমায়েতকে বেঁধে এহসান মুরাদের কক্ষে নিয়ে যান। এসময় হেমায়েতকে ভূমিদস্যু, দুর্নীতিবাজ, লুটেরা সম্বোধন করে চিৎকার চেঁচামেচি করেন এহসান। হেমায়েত নিজের পাওনা সম্পর্কে জানতে চাইলে এহসান বলেন, ক্ষতিপূরণের কোনো টাকা তোমরা পাবে না। এছাড়া বিরোধীপক্ষকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সময় যদি সমস্যা সৃষ্টি করা হয় তবে চরমভাবে হয়রানির শিকার হতে হবে বলে হুমকি দেওয়া হয় হেমায়েতকে।

একপর্যায়ে এহসান মুরাদের নির্দেশে হেমায়েতের ছবি তুলে নেন সার্ভেয়ার আব্দুল মোমেন। এছাড়া হেমায়েত যে তথ্য চেয়েছেন তার জন্য ১০ হাজার টাকা দাবি করেন সার্ভেয়ার ইমাম হোসেন গাজী। দাবি করা ১০ হাজার টাকা না দেওয়ায় হেমায়েতকে গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দেন।

এদিকে ক্ষতিপূরণ পেতে হলে এহসান মুরাদ স্যারের সঙ্গে পার্সেন্টেজে চুক্তি করতে হবে বলে জানান আসামিরা। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজে এ ঘটনার সত্যতা পাওয়া যাবে বলে মামলায় উল্লেখ করেন বাদী।

আরএস/আরবি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!