বাঁশখালীতে ১০ দিন ধরে চলছে হাতির তাণ্ডব, তছনছ করে দিচ্ছে সবকিছু

বাঁশখালীর বৈলছড়ী ইউনিয়নের পূর্ব চেচুরিয়া গ্রামে গত ১০ দিন ধরে চলছে হাতির তাণ্ডব। হাতির দল লোকালয়ে এসে তছনছ করে দিচ্ছে ঘর-বাড়ি, কাঁঠাল বাগান, আম বাগান, লিচু বাগানসহ সবজি ক্ষেত।

গ্রামবাসী সনাতন পদ্ধতিতে হাতি তাড়ানোর ব্যবস্থা করছেন বলে জানা যায়। তবে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ নীতিমালায় বন বিভাগের কোনো সহযোগিতা পাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন তারা।

জানা যায়, চার মাস আগেও ওই গ্রামের ১৭ জন কৃষক ও বাসিন্দা হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ওই ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ বাবদ বন বিভাগ থেকে ক্ষতির টাকা এসেছে। ক্ষতিগ্রস্থদের দাবি, ক্ষতির তুলনায় ক্ষতিপূরণের টাকা খুবই কম।

গ্রামবাসীর দাবি, পাহাড়ের বনাঞ্চল সুরক্ষিত করে হাতির দলকে হাতির আবাসস্থলে ফিরিয়ে দিলে তারা বনাঞ্চলে ফিরে যাবে। পাহাড়ে বিস্তুীর্ণ এলাকাজুড়ে পাহাড় কাটা, বালু উত্তোলন ও বনের গাছ কাটা চলমান থাকায় হাতির দল বনাঞ্চল ছেড়ে লোকালয়ে অবস্থান করছে। বন বিভাগের পক্ষ থেকে বনাঞ্চল ধ্বংসকারী কারো বিরুদ্ধে স্থায়ী পদক্ষেপ না নেওয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে

হাতির আক্রমণের পর গত ২৯ মে চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা খোরশেদ আলমের নেতৃত্বে একটি দল পূর্ব চেচুরিয়ার খদুল্যাপাড়া, অভ্যারখীলসহ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। গ্রামের কৃষক ও ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে সচেতনতামূলক বৈঠক করেন তিনি।

চেচুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও কৃষক সঞ্জীব দেব, রবিউল হক, ফাতেমা বেগমসহ অনেকের অভিযোগ, হাতির আক্রমণের ভয়ে গত ১০ দিন ধরে রাতে ঘুমোতে পারি না। সকালে উঠে দেখি, সবজি ক্ষেত, কাঁঠাল বাগান, আম বাগান তছনছ করে দিচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো সহযোগিতা পাচ্ছি না। হাতির আক্রমণ থেমে নেই। বিশালকার হাতিগুলো দৈত্যর মতো এসে সব ঘুটিয়ে দিচ্ছে।

যোগাযোগ করা হলে চেচুরিয়া বনবিট অফিসে দায়িত্বরত কালীপুর রেঞ্জার মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, লোকালয়ে হাতির তাণ্ডব রুখতে আমরা নানা পদক্ষেপ নিয়েছি। তাছাড়া যেসব এলাকায় হাতির আক্রমণ হচ্ছে অধিকাংশ এলাকা সংরক্ষিত বনাঞ্চল। সংরক্ষিত বনাঞ্চলে কতিপয় দখলদার জোর করে দখল করে ঘরবাড়ি নির্মাণ ও চাষাবাদ করেছে।

তিনি বলেন, নিজস্ব মালিকাধীন ক্ষতিগ্রস্ত চাষি ও ঘরের মালিকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে। ১৭ জনের ক্ষতিপূরণের চেক এসেছে। তা শিগগিরই বিতরণ করা হবে। আরও ৭/৮ জন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক নতুন করে ক্ষতির আবেদন করেছেন। এগুলো তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এসআই/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!