বাঁশখালীতে ‘মোখা’ মোকাবেলায় পুলিশের ‘অনন্য’ উদ্যোগ

বাঁশখালীতে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র ক্ষয়ক্ষতি ও জানমাল রক্ষায় দিন-রাত নিরলসভাবে কাজ করছে শতাধিক পুলিশ সদস্য। পুলিশের এমন উদ্যোগের প্রশংসা এখন এলাকাবাসীর মুখে মুখে। যা অতীতে কখনও কেউ দেখেননি বলে দাবি স্থানীয়দের।

জানা যায়, বঙ্গোপসাগরের সরাসরি মোহনায় থাকা বাঁশখালী উপজেলা ছিল মোখার চরম ঝুঁকিতে। বাঁশখালীর ১৪ ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় পুলিশের বিশেষ টিম দলবদ্ধ হয়ে পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে মাইকিং করে সর্তক করে।

এদিকে বাঁশখালী থানার ওসি কামাল উদ্দিন নিজেই শনিবার সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এবং রোববার সকাল থেকে গ্রামে গ্রামে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়ে এলাকাবাসীকে সতর্ক করেন।

জানা গেছে, স্থানীয় প্রশাসনের ১১০টি আশ্রয়কেন্দ্রে কমপক্ষে প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ আশ্রয় নেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। এছাড়া বাঁশখালীর উপকূলীয় ১০টি ইউনিয়নে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) ১ হাজার ৪২০ জন স্বেচ্ছাসেবক রয়েছেন।

শনিবার (১৩ মে) সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান এবং চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ খানখানাবাদের কয়েকটি গ্রামে ঘুরেন এবং দুর্গতদের সর্তক করেন।

এছাড়া উপকূলীয় ইউনিয়ন ছনুয়া, শেখেরখীল, গণ্ডামারা, সরল, কাথরিয়া, বাহারছড়া ও খানখানাবাদ এলাকার বাসিন্দাদের পুলিশ নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয় প্রচারণা চালিয়ে।

পশ্চিম চাম্বল জেলেপাড়ার বাসিন্দা নলিনী জলদাস, আরতি বালা জলদাস ও সন্ধ্যা রাণী জলদাস বলেন, ১৯৯১ সালে ঘূর্ণিঝড়ে স্বজনদের হারিয়েছি। এরপর আরও অনেক ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলা করেছি। কিন্তু কখনও পুলিশ এসে খবর নেয়নি। এবার দেখলাম ঘরে পুলিশ এসে আমাদের আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার অনুরোধ করেছে।

খানখানাবাদ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন হায়দার বলেন, আমি সমুদ্র উপকূলের মানুষ। অনেক ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব দেখেছি। কিন্তু এবারের পুলিশের উদ্যোগ ছিল প্রশংসনীয়।

জানতে চাইলে বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কামাল উদ্দিন আলোকিত চট্টগ্রামকে বলেন, জনগণের শান্তি নিশ্চিত করতে পারলে পুলিশের মনে আনন্দ আসে। শনিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পুলিশ নির্ঘুম রাত কাটিয়ে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ও দুর্গতদের সহায়তায় কাজ করছে।

ওসি আরও বলেন, রোববার সকাল থেকে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে টহলসহ ইউনিয়নভিত্তিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। শতাধিক পুলিশ সার্বক্ষণিক দায়িত্বে নিয়োজিত আছে। এছাড়া জনগণকে মোবাইল নম্বর দিয়ে যেকোনো সহযোগিতায় ফোন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

আরবি/আলোকিত চট্টগ্রাম

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!